ইউএনএফপিএর প্রতিবেদন
এক বছরে বাল্যবিয়ে বেড়েছে ১০ শতাংশ
দেশে বাল্যবিয়ের হার ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ১০ শতাংশ বেড়েছে। দেশে ১৮ বছরের নিচের বয়সী মেয়েদের বিয়ে হলে তা বাল্যবিবাহ হিসেবে ধরা হয়। জরিপকালে ১৯ বছর বয়সী কয়েকজন মেয়েকে পাওয়া যায়, যাদের বয়স ২০২০ ও ২০২১ সালের শুরুতে ১৮ বছরের নিচে ছিল।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে বাল্যবিবাহ এবং শহরের বস্তি এলাকায় মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা’ শিরোনামে দুটি জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)।
ইউএনএফপিএর সহায়তায় জরিপটি পরিচালনা করে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। ২০২১ সালের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ২০টি জেলায় দুই হাজার ৮২০জন মেয়ের ওপর জরিপ করা হয়। এছাড়াও মাসিক বিষয়ে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকায় এক হাজার কিশোরী ও নারীকে অন্তর্ভুক্ত করে জরিপ করা হয়।
এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারকারী মেয়ে বা নারীদের ৬৮ শতাংশ নিজে প্যাড কিনতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। এখনো ৪২ শতাংশ মেয়ে বা নারী মাসিকের সময় কাপড় ব্যবহার করেন। মাসিকের বিষয়ে তাদের মধ্যে নানা কুসংস্কার কাজ করে।
বাল্য বিয়ে বিষয়ক প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা মহামারির দুই বছরে ১৫–১৯ বছর বয়সী যে ২৭ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাদের মধ্যে প্রথম বছর (২০২০) বিয়ে হয়েছে প্রায় ২৪ শতাংশের ও দ্বিতীয় বছর (২০২১) বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশের।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও ইউনিসেফের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (মিকস্) ২০১৯ অনুসারে, একই বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার প্রায় ৩৩ শতাংশ। আর ১৮ বছর বয়সের নিচে এ হার ৫১ শতাংশ।
ইউএনএফপিএর জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, কোভিডের কারণে ২০২০ সালে বাল্যবিবাহের হার কম হয়ে থাকতে পারে। তবে জরিপে অংশগ্রহণকারী বেশির ভাগের মত ছিল, কোভিডকালে বাল্যবিবাহ বেড়েছে। এই সময়ে বুলিংসহ নানা ধরনের সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় মেয়েরা বাল্যবিবাহের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বোধ করেছে। বাল্যবিবাহে মহামারি ও লকডাউনের প্রভাব সম্পর্কে জানতে আরও জরিপ ও গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জেলায় জেলায় বাল্যবিবাহের হারের ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। যেমন রাঙ্গামাটিতে বাল্যবিবাহ ৪ শতাংশ ও লক্ষ্মীপুরে ৪০ শতাংশ। জরিপের সময় দেখা গেছে, বিবাহিত ওই মেয়েদের ১৫ শতাংশ ছিল অন্তঃসত্ত্বা। বিবাহিত মেয়েদের মাত্র ২৪ শতাংশ স্কুলে ফিরেছে।
আইএইচআর/আরএডি/জিকেএস