আরও এক বছর সময় বাড়লো আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণে
একে একে পেরিয়ে গেছে পাঁচ বছর। তবুও শেষ হয়নি ‘আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণ (বাংলাদেশ অংশ) প্রকল্প’র কাজ। এবার আরও এক বছর মেয়াদ বাড়লো এই প্রকল্পের। চতুর্থবারের মতো ব্যয় ছাড়া ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয়।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় নেওয়া হয় এ সিদ্ধান্ত। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, করোনার কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নানা সমস্যা হয়েছে। কাজ শতভাগ শেষ করার জন্য এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
এর আগে প্রথম ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২০২২ সালের জুন নাগাদ বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য: বাংলাদেশের আখাউড়া হয়ে ভারতের কলকাতা ও আগরতলা পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপন। বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ। ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসারের মাধ্যমে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম: বাংলাদেশ অংশে ১০ দশমিক ০১ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ মেইন লাইন এবং ২৫ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ লুপ লাইন নির্মাণ। ৫৬ দশমিক ০১ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ২০টি মাইনর ব্রিজ এবং ৩টি মেজর ব্রিজ নির্মাণ। তিনটি স্টেশনে কম্পিউটারাইজড ইলেকট্রনিক সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা।
এর আগে ২০১৬ সালে ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। পরবর্তীসময়ে ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ ৩ বছর ৬ মাস বাড়িয়ে জুন ২০২২ পর্যন্ত করা হয়। এসময় (জুন ২০২২) পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা অনুমোদিত ব্যয়ের মাত্র ২৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় একটি চার চাকার ডাবল কেবিন পিকআপ সংগ্রহের পাশাপাশি পুনর্বাসন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য এনজিও নিয়োগ দেওয়া হবে।
২০১০ সালে ভারত সরকারের অনুদানে আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। স্মারক অনুযায়ী ভারত সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড কন্সট্রাকশন (ইপিসি) ভিত্তিতে এ রেল সংযোগ নির্মাণ করা হচ্ছে।
নতুন রেলরুটটি ভারতের আগরতলা স্টেশন থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দিয়ে ৫ দশমিক ০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। বাংলাদেশ অংশে এটি আখাউড়া-চট্টগ্রাম রেলপথের গঙ্গাসাগর স্টেশনে এসে মিলিত হবে। তারপর বিদ্যমান রেললাইনের পূর্বপাশ দিয়ে সমান্তরালভাবে আখাউড়া জংশন স্টেশনে গিয়ে মিলিত হবে।
আখাউড়া-আগরতলা রেললিংকটির মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর সঙ্গে রেলযোগাযোগ স্থাপিত হবে বাংলাদেশের। ফলে দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেল যোগাযোগে নতুন মাত্রা যোগ এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে নতুন পথ উন্মোচিত হবে।
ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক এবং উপ-আঞ্চলিক কানেকটিভিটির ক্ষেত্রে একটি নতুন করিডোর স্থাপিত হচ্ছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
এমওএস/জেডএইচ/এএসএম
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করছে কিছু গণমাধ্যম
- ২ মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে বাঁচাতে ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা: এসপি
- ৩ বাড্ডায় বিদ্যুতের খুঁটির চাপায় শ্রমিকের মৃত্যু
- ৪ একাত্তরের অমীমাংসিত সমস্যা মীমাংসা করুন: শেহবাজ শরিফকে ড. ইউনূস
- ৫ গ্রাহক সেজে ব্যাংকে ঢোকেন ডাকাতরা, খেলনা পিস্তল ঠেকান ম্যানেজারকে