ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বন্ধুত্বের: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রাম | প্রকাশিত: ০৪:৫৫ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বন্ধুত্বের এবং ন্যায্যের ভিত্তিতে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ভারত সফর অত্যন্ত সফল এবং ফলপ্রসূ। এ সফরে সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে ভারতের স্থলভাগ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্যসহ বিনাশুল্কে পণ্য রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি। যে জন্য বহু বছর ধরে বাংলাদেশ চেষ্টা করে এসেছে।

শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) আয়েজিত বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এরপর চট্টগ্রামের ৩৬ জন সাংবাদিকের হাতে ৩৪ লাখ টাকার অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হয়।

ভারত সফর সফল হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অথচ এই ভারত সফর নিয়ে বিএনপি নানা ধরনের কথা বলেছে, এখন নিশ্চয়ই চুপসে গেছে। এরপরও বিএনপির ফখরুল সাহেবেরা আজকালের মধ্যে কিছু একটা বলবেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই সফর অত্যন্ত চমৎকার ও ফলপ্রসূ হয়েছে।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ন্যায্যতার ভিত্তিতে। আমাদের সরকারই ভারতের কাছ থেকে সবকিছু আদায় করেছে। ১৯৭৪ সালে ছিটমহল চুক্তি হয়েছে। সেই ছিটমহল আমাদের অধিকারে চার দশকে কেউ আনতে পারেনি। তারা কোন দেশের নাগরিক সেটা বলতে পারতো না। শেখ হাসিনার সরকার ছিটমহলগুলো আমাদের অধিকারে এনেছে। ন্যায্যতার ভিত্তিতে যে সম্পর্ক সেটির বড় প্রমাণ হচ্ছে, আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিরুদ্ধে মামলা করে সমুদ্রসীমা জয়লাভ করেছি।

ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সেটি আরও নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। সেটির প্রমাণ হচ্ছে ভারতের স্থলভাগ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশের পণ্য বিনাশুল্কে রপ্তানির সুযোগ তৈরি করে দেওয়া।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের হাজার পণ্যের মধ্যে মাদকসহ মাত্র বিশটি পণ্য ছাড়া ভারত আমাদেরকে ট্যারিফ সুবিধা দিয়েছে। যেটি বিএনপি আদায় করতে পারে নাই। খালেদা জিয়া তো ভারতে গিয়ে আমাদের গঙ্গার পানি হিস্যার কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলেন। সেটিও আদায় করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, একজন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে এককালীন তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়। একজন সাংবাদিক অসুস্থ হলে তাকে ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। করোনাকালে ভারত-পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা-নেপালসহ এই উপ-মহাদেশের কোনো দেশে সাংবাদিকদের করোনা সহায়তা করা হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে সরকার করোনাকালীন সহায়তা হিসেবে চার হাজার সাংবাদিককে সহায়তা দিয়েছে, এটি এখনও চলমান আছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সাংবাদিকদের দাবি ছিল, একটি কল্যাণ তহবিল গঠন করার। প্রথমে একটা কল্যাণ তহবিল গঠন হয়েছিল। পরে ধানমন্ত্রী বললেন, আমি কতদিন থাকি ক্ষমতায় জানি না, একটা স্থায়ী ব্যবস্থা করে দিতে চাই। তারই (প্রধানমন্ত্রীর) আগ্রহে সংসদে পাশ করা আইন দ্বারা সংবিধিবদ্ধ একটি প্রতিষ্ঠান সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট। যেখানে প্রতিবছর সরকার অনুদান দেয়। শুভানুধ্যায়ীদের কাছ থেকেও অনুদান গ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণের ক্ষেত্রে আমরা কখনো কে কোন দল বা মতের সেটি দেখি না। আমি দল করি, আমি দলীয় সরকারের মন্ত্রী, কিন্তু যখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করছি তখন সবাইকে দুই চোখে সমভাবে দেখার চেষ্টা করি, রাষ্ট্রের সাহায্য যেন সবাই পায়। যারা প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে কালকেই সরকার নামিয়ে দেয়, আমাদের বিরুদ্ধে গলা ফাটায়, তাদেরকেও আমরা কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সহায়তা করেছি।

ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সারাদেশের সব মিডিয়া হাউজে সাংবাদিকদের জন্য গ্রুপ বিমার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটি কিন্তু আমাদের ওয়েজবোর্ডের মধ্যেও বলা আছে। সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো প্রতিটা মিডিয়া হাউজে তাগাদা দেবেন ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী যেন সাংবাদিকদের জন্য গ্রুপ বিমার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এটি করলে একজন সাংবাদিক অসুস্থ হলে এবং মৃত্যবরণ করলে বিমা কোম্পানি থেকে টাকা পাবেন। এতে যে খুব ব্যয় হয় তা কিন্তু নয়, এটি ইচ্ছা এবং চর্চার ব্যাপার।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিইউজের সভাপতি মোহাম্মদ আলী। সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ প্রমুখ।

ইকবাল হোসেন/কেএসআর/এএসএম