ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বন্ধুকে হত্যা, ১১ বছর পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:১১ পিএম, ১০ আগস্ট ২০২২

রাজধানীর কোতোয়ালি থানার নবাবপুরে রজব আলী হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১১ বছরের পলাতক আসামি মো. জিকুকে (৩২) গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) মুন্সিগঞ্জের শীনগর এলাকা থেকে জিকুকে গ্রেফতার করা হয়।

র‍্যাব-৩ জানায়, নিহত রজব আলী জিকুর বন্ধু ছিলেন। তারা দুজনই মাদকাসক্ত। মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে রজব আলীর সঙ্গে জিকুর শত্রুতা সৃষ্টি হয়। এর জেরে ২০১১ সালে জিকু তার সহযোগীদের নিয়ে রজবকে হত্যা করে। রজবকে হত্যার পর দীর্ঘ ১১ বছর বিভিন্ন জায়গায় নাম-পরিচয় বদলে আত্মগোপনে ছিলেন জিকু ।

বুধবার (১০ আগস্ট) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ভিকটিম রজব আলী জিকুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তারা পরস্পর বন্ধু হলেও এলাকাভিত্তিক উঠতি বয়সী যুবকদের মধ্যে গ্রুপ ছিল। জিকু ও রজব পাড়ায় একসঙ্গে দল বেঁধে মাদক সেবন করতেন। একদিন মাদক সেবনের জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। তখন রজব আলী সজিব নামে একজনের মোবাইল জামানত রেখে মাদকের টাকা সংগ্রহ করেন। পরে সবাই মিলে মাদক সেবন করেন। পরে মাদকের টাকা পরিশোধ না করে জামানতের মোবাইল ফেরত চাওয়ায় জিকু ও রজবের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি হয়।

jagonews24

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই শত্রুতাকে কেন্দ্র করে জিকুর নেতৃত্বে রহিম ওরফে আরিফ, আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগার, মন্টি, মো. মিলন ওরফে চোপা মিলন, আকাশ ওরফে রাসেল, ফরহাদ হোসেন ওরফে ফরহাদ, সজিব আহমেদ খান, শহীন চাঁন খাদেম ও মোহাম্মদ আলী হাওলাদার বাবু ভিকটিম রজব আলীকে শায়েস্তা করার জন্য পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১১ সালে ২৪ জুলাই রাতে নবাবপুরে মোবাইলের দোকানে রজব আলী টাকা রিচার্জ করতে গেলে জিকুসহ আরও চার-পাঁচজন তার ওপর এলোপাতাড়ি আক্রমণ করে বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ওই ঘটনায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় রজবের ভাই জুম্মন বাদী হয়ে মামলা করেন। ২০১২ সালে ৫ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। বিচারকাজ শেষে আদালত ২০১৯ সালে ১ আগস্ট জিকু, রহিম ওরফে আরিফ ও আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগারকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার সময় সব আসামিরা পলাতক ছিলেন। এছাড়াও একই রায়ে সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তিনজনকে খালাস দেওয়া হয়।

জিকুর পলাতক জীবন নিয়ে র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, রজবকে হত্যার পর পর মাতুয়াইল এলাকায় মনু মিয়ার বাড়িতে আত্মগোপনে চলে যান জিকু। দীর্ঘ আট মাস পলাতক থাকার পর তিনি গ্রেফতার হয়ে ছয় মাস জেল খেটে জামিনে বের হন। পরে তিনি বরিশালে তার শ্বশুরবাড়ি চলে যান এবং কোর্টে হাজিরা দেওয়া থেকে বিরত থেকে পলাতক জীবন যাপন শুরু করেন। সেখানে নিজেকে মোটর মেকানিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্কশপে কাজ করতেন।

‘এক সময় নাম পরিবর্তন করে নিজেকে নাসির উদ্দিন নামে পরিচয় দেন জিকু। মোটর মেকানিকের কাজ জানায় তিনি অতি সহজেই কর্মস্থল পরিবর্তন করতে পারতেন। এভাবে কিছুদিন আত্মগোপনে থাকার পর তিনি আবার ঢাকায় ফিরে আসেন। লম্বা চুল ও দাড়ি রেখে বেশ বদল করে নাসির উদ্দিন পরিচয়ে ধোলাইখাল এলাকায় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতে শুরু করেন জিকু। এরই মধ্যে তার মাদক সেবনের পরিমাণ আরও বাড়তে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ওয়ার্কশপের এক সহকর্মীর পরামর্শে জিকু মুন্সিগঞ্জের একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি হন। সেখানে ভর্তি হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ জিকুর চুল ও দাড়ি কেটে দেয়। এভাবেই তার আসল চেহারা প্রকাশ পায়। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল তাকে গ্রেফতার করে।

টিটি/আরএডি/জিকেএস