টিপু-প্রীতি হত্যা: মতিঝিল থেকে আরও দুজন গ্রেফতার
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যার ঘটনায় আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেফতাররা হলেন- সোহেল শাহরিয়ার ওরফে শর্টগান সোহেল ও মারুফ রেজা সাগর। এ নিয়ে টিপু হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেফতার করা হলো।
রোববার (৩১ জুলাই) দিনগত রাতে জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শাহিদুর রহমান রিপন। তিনি টিপু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এডিসি শাহিদুর রহমান রিপন বলেন, রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মতিঝিল এলাকা থেকে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ হত্যা মামলায় গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে এই দুজনের নাম পাওয়া যায়। এরপর অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে শনিবার এই ডাবল মার্ডারের সঙ্গে যুক্ত আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন, জাতীয় পার্টি নেতা জুবের আলম খান রবিন, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান টিটু, আরিফুর রহমান সোহেল ও খায়রুল।
রোববার দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, টিপু হত্যায় এর আগে বেশ কজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেওয়া জবানবন্দি ও তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশেষত খুনের সন্দেহভাজন সমন্বয়কারী সুমন শিকদার ওরফে মুসাকে ওমান থেকে গ্রেফতার করে দেশে আনা হয়। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। সেসব তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার মতিঝিল ও আশপাশের এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেফতার করে ডিবি।
হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেফতারদের মধ্যে টিপু হত্যায় কার কী ভূমিকা তা তদন্ত করে দেখা হবে। আদালতে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও অনেক তথ্যই বেরিয়ে আসতে পারে।
এদিকে টিপু-প্রীতি হত্যার ঘটনায় বগুড়া থেকে গ্রেফতার শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মূল পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়কারী হিসেবে মুসার নাম আসে। পরে জানা যায়, মুসা ঘটনার আগেই ১২ মার্চ দেশ ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত চলে যান। তার সন্ধান পেতে ৬ এপ্রিল পুলিশ সদরদপ্তরের এনসিবি শাখায় যোগাযোগ করা হয়।
পুলিশ সদরদপ্তর গত ৮ এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করে। এরই মধ্যে ৮ মে জানা যায়, মুসা দুবাই থেকে ওমানে প্রবেশ করেছেন। এনসিবির সহযোগিতায় গত ১২ মে মুসাকে গ্রেফতার করে ওমান পুলিশ। পরে বাংলাদেশ পুলিশের একটি টিম ওমানে গিয়ে ৯ জুন মুসাকে দেশে ফিরিয়ে আনে।
গত ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শো-রুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এসময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় টিপুর গাড়িচালক মুন্নাও গুলিবিদ্ধ হন।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়।
টিটি/কেএসআর