নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ৪ বছর
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের চার বছর আজ। ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীতে বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে সড়কে সড়কে আন্দোলনে নামে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা।
সেদিন জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বেপরোয়া বাসের চাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দিয়া খানম মিম ও আব্দুল করিম রাজীব নিহত হন। এর প্রতিবাদে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা, স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানীর যান চলাচল।
শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন দেশে নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি করে। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ওই আন্দোলনে অংশ নেওয়া থেকে বাদ যায়নি।
গোটা রাজধানীতে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকরণ কীভাবে করতে হয় ও যানবাহন চলাচলে কীভাবে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হয়, শিক্ষার্থীরা তা চোখে আঙুল দিয়ে সব মহলকে দেখিয়ে দিয়েছিল।
কোথাও আবার প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদেরও দেখা গেছে গাড়ির চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কি না তা পরীক্ষা করতে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও খাবার-পানি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
প্রাথমিকভাবে ‘রাজিব-দিয়া হত্যার বিচার চাই’ স্লোগানে আন্দোলনের সূচনা হলেও, পরে তা এক বৃহৎ আন্দোলনে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের এ যৌক্তিক আন্দোলনে সমর্থন জানায় দেশের আপামর জনতা।
শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে সড়কে বেপড়োয়া গাড়ি চালানোর কারণে কোনো মৃত্যু ঘটলে চালকের মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রেখে ১৯শে সেপ্টেম্বর নতুন সড়ক পরিবহন আইন পাস করে সরকার।
তখন থেকেই এ আইনের বিরোধীতা করতে থাকেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। একই বছর সেপ্টেম্বরে আইনটি পাশ হলেও সেটি কার্যকর করা হয় পরের বছরের পহেলা নভেম্বর। কিন্তু তখন পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বিক্ষোভ-কর্মবিরতির মুখে আইন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
তবে কোনো আইনই সড়কে বাস্তবায়িত হচ্ছে কী না তা নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন তুলে যাচ্ছে নিরাপদ সড়ক নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন।
এমআইএস/এসএএইচ/জিকেএস