সুতার ঘোষণা দিয়ে মদ আমদানি, ১২ কোটি টাকার ‘শুল্ক ফাঁকি’
সুতা আমদানির ঘোষণা দিয়ে বিদেশ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা ১৫ হাজার ২০৪ লিটার মদের চালান আটক করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। কনটেইনারভর্তি এ মদের চালানের সিএন্ডএফ মেসার্স জাফর আহমদ।
রোববার (২৪ জুলাই) সকালে কাস্টমসের এআইআর (অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ) শাখার টিম বন্দরের ৫ নম্বর শেডে থাকা মদভর্তি কনটেইনারটি জব্দ করে।
কাস্টমসের এআইআর শাখার ডেপুটি কমিশনার মো. সাইফুল হক রাতে জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘শতভাগ কায়িক পরীক্ষা শেষে চালানটিতে ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে।’
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডের ডং জিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল (বিডি) কোং লিমিটেডের নামে আইপি জালিয়াতি করে এক কনটেইনার মদ আমদানি করে জালিয়াতচক্র। গত ১৬ জুলাই চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। চালানটি খালাসের জন্য ২০ জুলাই এসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব অ্যান্ট্রি দাখিল করে সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাফর আহমদ।
এতে শুল্কায়নের জন্য শতভাগ পলেসটার সুতা ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই দিনই চালানটির শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। একদিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে একই সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানের মিথ্যা ঘোষণায় আনা দুটি চালান আটক করা হয়। এজন্য প্রতিষ্ঠানটির অন্য চালানগুলোও পর্যালোচনা করতে কাস্টমসের এআইআর শাখা খালাস স্থগিত করে এসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে লক করা হয়। পরে কনটেনারটি খোলা হলে সুতার পরিবর্তে সেখানে মদ পাওয়া যায়। এরপর চালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হয়।
কমিশনার মো. সাইফুল হক জানান, বন্দরের অভ্যন্তরে আটক তৃতীয় চালানের কনটেইনারটিতে এক হাজার ৪৩০টি কার্টনে ১৫ হাজার ২০৪ লিটার মদ পাওয়া গেছে। এর আনুমানিক শুল্কায়নযোগ্য মূল্য দুই কোটি তিন লাখ টাকা। চালানটিতে রাজস্বের পরিমাণ ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
এরআগে আইপি জালিয়াতির মাধ্যমে আমদানি করে বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের চোখে ধুলো দিয়ে বন্দর থেকে খালাস হয়ে যাওয়া দুই কনটেইনার মদ আটক করা হয়। ওই দুই চালানে ২৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে কাস্টমস। শুক্রবার (২২ জুলাই) দিনগত রাতে নারায়ণগঞ্জের সোনারওগাঁওয়ে দুই লরিতে থাকা ৪০ ফুটের মদভর্তি কনটেইনার দুটি আটক করে র্যাব।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কুমিল্লা ও ঈশ্বরদী ইপিজেডের দুই প্রতিষ্ঠানের নামে টেক্সটাইলের মেশিন ও সুতা ঘোষণায় আমদানি করা হয় মদের চালান দুটি। এর আমদানিকারক পৃথক দেখানো হলেও খালাসের দায়িত্বে ছিল একই সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান।
চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানাধীন কেভি দোভাষ লেনের সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাফর আহমদ মদের চালান দুটির খালাস নেয়। গত ২০ জুলাই সন্ধ্যার পরে পৃথক দুই প্রতিষ্ঠানের নামে আসা কনটেইনার দুটির পণ্য খালাসের জন্য শুল্কায়ন করা হয়।
কুমিল্লা ইপিজেডের হেশি টাইগার কোং লিমিটেডের টেক্সটাইল সুতা ও ঈশ্বরদী ইপিজেডের বিএইচকে টেক্সটাইল লিমিটেডের নামে রোবিং মেশিং ঘোষণা দিয়ে মদের চালান দুটি আমদানি করে জালিয়াতচক্র। তবে যে দুই আইপি দেখিয়ে মদের চালান খালাস হয়, সেই আসল দুই আইপি দিয়ে আগেই পণ্য আমদানি ও খালাস করে নেয় আসল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান দুটি।
এদিকে, মদভর্তি কনটেইনার দুটিতে পাসপোর্ট স্কচ হুইস্কি, ভ্যালানটাইনস স্কচ হুইস্কি, ম্যাটেউস দ্য অরিজিনাল ওয়াইন, চিভাস রিগাল স্কচ হুইস্কি, জনি ওয়াকার রেড লেবেল/ব্ল্যাক লেবেল স্কচ হুইস্কি, টিচার্স হাইল্যান্ড স্কচ হুইস্কি, স্মারনফ ভদকা, রেড রোজ ব্রান্ডের মদ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে কাস্টমস।
ইকবাল হোসেন/এএএইচ
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ চিন্ময় কৃষ্ণ গ্রেফতারের প্রতিবাদে ডিবিতে সনাতনী জোটের নেতারা
- ২ সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহতের দাবি থেকে সরে এলো মোল্লা কলেজ
- ৩ বিমানবাহিনীর গোলাবর্ষণ মহড়া, ফায়ারিং এলাকা পরিহারের অনুরোধ
- ৪ চেষ্টা করেছে পুলিশ, তবে পর্যাপ্ত বুলেটপ্রুফ হেলমেট-জ্যাকেট নেই
- ৫ মোল্লা কলেজ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে, বাইরে উৎসুক জনতা