ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

যুগোপযোগী হচ্ছে জাতীয় যুবনীতি

প্রকাশিত: ০৩:৪২ এএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬

‘জাতীয় যুবনীতি-২০১৫’ এর খসড়ায় বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিশেজ্ঞরা। অসঙ্গতি দূর করে যুবদের অধিকার নিশ্চিত করতে ৭ দফা সংযোজনের সুপারিশ করেছে জাতীয় যুব অধিকার অ্যাসেম্বলি নামের একটি সংগঠন। তবে সবার মতামতের ভিত্তিতে যুগোপযোগী জাতীয় যুবনীতি করা হবে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী বীরেণ শিকদার।

খসড়া যুবনীতি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এতে ১৭টি ধারা ও বেশ কিছু উপধারা রয়েছে। খসড়া নীতির উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে- মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যুবদের গড়ে তোলা, জাতীয় যুব কাউন্সিল গঠন করা, উন্নত নৈতিক মূল্যবোধের আলোকে যুবদের উন্নত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে মানবসম্পদে পরিণত করা, তথ্যপ্রযুক্তিসহ দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা, যুবদের যুবকর্মে উৎসাহিত করা, যুবকর্মকে একটি পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা, যুবদের নাগরিক ও সামাজিক অংশগ্রহণ ও সম্পৃক্ততা বাড়ানো, সব ধরনের সামাজিক ব্যাধি থেকে যুবদের নিবৃত্ত করা। যুবনীতিতে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের বয়সীদের যুবক বিবেচিত করা হয়েছে। জাতীয় যুবনীতি-২০০৩ এর বেশ কিছু ধারা সংশোধন করে ‘খসড়া জাতীয় যুবনীতি-২০১৫’ তৈরি করা হয়েছে।  

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত সংগ্রহ করে জাতীয় যুবনীতি-২০১৫ এর খসড়া প্রনয়ণ করা হয়েছে। এই নীতি প্রণয়নে ৭টি বিভাগে ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অধিক প্রচার ও মতামতের জন্য যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রণালয় সম্পর্কীত স্থায়ী কমিটির ১৫তম বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১৮ নভেম্বর যুব অধিদফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

যুবনীতিকে আধুনিক ও বাস্তব সম্মত করার দাবিতে ‘যুব অধিকার প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে কার্যকর যুবনীতি চাই’ এই স্লোগানে সামনে রেখে গত রোব ও সোমবার রাজধানীতে দুই দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করে জাতীয় যুব অধিকার অ্যাসেম্বলি। এর পৃষ্ঠপোষকতায রয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশন ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল। এ কর্মশালায় অংশ নেয়া আলোচকরা খসড়া যুবনীতিতে সাত দফা সংযোজনের সুপারিশ করেন।  

এ দফাগুলো হলো- অধিকার ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে যুব উন্নয়নের বিষয়সমূহ পরিচালনা করা, সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে কর্মমুখী শিক্ষার সমন্বয় এবং কারিগরি শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা, স্বল্প শিক্ষিত ও শিক্ষা বঞ্চিত কর্মহীন যুবদের কর্মসংস্থান ত্বরান্বিত করার লক্ষে সব ক্ষেত্রে কার্যকর দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা, তথ্য প্রযুক্তিসহ সব ক্ষেত্রে যুব উদ্যোক্তা গড়ে তোলার লক্ষে জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা, পর্যায়ক্রমে যুবসমাজের  সবার কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরার লক্ষ্য পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা, রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে বিশেষভাবে যুব উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রসমূহে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যুব প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, যুব অধিকার প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে কার্যকর যুবনীতি প্রণয়ন এবং সময়কালসহ বাস্তবায়ন পরিকল্পনা নিশ্চিত করা।

যুবকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, যুব অধিকার হচ্ছে মানবাধিকার। কিন্তু খসড়া যুবনীতিতে যুবদের অধিকার ও নীতি বাস্তবায়নের সময়কালের উল্লেখ নেই। যুব উন্নয়নের অংশ হিসেবে যুবদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে অগ্রাধিকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কিভাবে এই অগ্রাধিকার দেয়া হবে তা সুনির্দিষ্ট নেই।

খসড়া যুবনীতির সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, খসড়া নীতির ৮,৩,২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- যুবরা অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বিভিন্ন সংস্থায় শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাবেন। কিন্তু কিভাবে এই সুযোগ নিশ্চিত করা হবে তা বলা হয়নি। এছাড় নীতি বাস্তবায়নে পরিপূরক ও বিস্তারিত বাস্তবায়ন বিধি-বিধান প্রয়োজন, যার বেশির ভাগ এখনও প্রণীত হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী বীরেণ শিকদার বলেন, ২০০৩ সালের যুবনীতি বর্তমান ডিজিটাল যুগে চলবে না। সে কারণে আধুনিক চিন্তাধারার আলোকে যুবনীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছি। খসড়া যুবনীতি যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সবার মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় যুবনীতি প্রণয়ন করা হবে।

এনএম/জেএইচ/পিআর