স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সবার সহযোগিতা চান রাব্বী
সাম্প্রতিক সময়ে বহুল আলোচিত পুলিশি নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান। এজন্য তিনি সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রাব্বীকে আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে রিলিজ দেয়া হয়েছে।
হাসপাতাল ত্যাগের প্রাক্কালে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, চিকিৎসকরা তাকে দুই সপ্তাহের বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি আগামী অন্তত ছয়মাস সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করতে বলেছেন। গলা ও কানের ব্যথার জন্য চিকিৎসকরা ওষুধ লিখে দিয়েছেন। কিন্তু রাব্বী খুব দ্রুত নিজ কর্মস্থল বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদানের পাশাপাশি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান।
তার বিপদে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যেভাবে আপজনের মতো পাশে দাঁড়িয়েছেন সেজন্য সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রাব্বী বলেন, মানুষের ভালবাসার ঋণ কোনদিনও পরিশোধ করতে পারবো না।
আজ সকালে রাব্বী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা ও হাসপাতাল ত্যাগের কারণ তুলে ধরেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, এখনও শারীরিক এবং বিশেষ করে মানসিকভাবে সুস্থ না হওয়ার পরও, এমনকি গলায় চাপ দেয়াস্থলে এখনও প্রচণ্ড ব্যাথা এবং সন্ধ্যা হলেই মাথায় প্রচণ্ড ব্যাথা সত্ত্বেও হাসপাতাল ছাড়তে হলো।
কেননা- বাবা-মা ও পাঁচ বোনের সংসারের একমাত্র ছেলে সন্তানের উপর এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনায় যারপরনাই হতাশ আমার পরিবার এবং কাঁদতে কাঁদতে কয়েক দিন ধরে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন আমার পরিবারের প্রত্যেকেই। এমনকি বোনদের ছোট ছোট বাচ্চারা পর্যন্ত তাদের একমাত্র মামার এমন অবস্থায়, চোখের পানি ফেলতে-ফেলতে অজ্ঞানপ্রায়।
ডাক্তারের পরামর্শমতে, হাওয়া বদল এবং নিজের মানসিক অবস্থার উন্নতি ও আশপাশের অবস্থার পরিবর্তন নিজেকেই করতে হবে এবং সামাল দিতে হবে, তথা প্রাণপ্রিয় মা-বাবার মলিন মুখখানায়, একটু হলেও প্রশান্তি ও পাগলপ্রায় বাবা-মাকে মরার হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখতে, তাদের টানেই ছুটে চলছি।
আশা-হতাশা কাটিয়ে, ফিরবো অনেক ভালোবাসা ও সাহস-শক্তি নিয়ে, আবারও কাজ করতে সক্ষম হবো- সুন্দর ও স্বপ্নের পক্ষে, গড়তে পারবো দেশ-বিশ্ব-মা মাটি ও মানুষকে; যেখানে হাসতে পারবো ঠিক আগের মতো, কাটাতে পারবো মৃত্যুভয়, ডর, শঙ্কাহীন এক স্বাভাবিক-সাধারণ জীবন...সামনে আমার স্লোগান একটাই-আমরা সবাই ভাই ভাই; সুন্দর ‘সোনার বাংলা’ গড়তে চাই...সবাইকে আমার পাশে থাকা ও সাপোর্টর জন্য কৃতজ্ঞতা ও দোয়া প্রত্যাশা করছি।
প্রত্যেকের ভাল ভবিষ্যৎ কামনায় তিনি লিখেন, অবশেষে আবারও বলছি, দ্রুত আমি আমার অফিসের কাজে ফিরতে চাই, এ অবস্থা থেকে উত্তরণ চাই, কাজ করতে চাই, ভয়হীন ঘুম ও স্বাভাবিক জীবন চাই।
দয়া করে বিষয়টিকে নিয়ে অতিরিক্ত কিছু করবেন/ ভাববেন/ লিখবেন না। যেটা আমার স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে ব্যহত করে, আমি প্রথমত: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই।
বি:দ্র: সঠিক বিচার প্রত্যাশায়, বিষয়গুলো নিয়ে রাজনীতি বা ভুলভাবে ব্যাখ্যা না করে, মানবিক দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি। আর বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে আমি ঢাবি ক্যাম্পাসের কতটুকু প্রিয়মুখ, তা জানতে বর্তমান ছাত্রলীগ প্রেসিডেন্ট সোহাগ ভাই ও সদ্য সমাপ্ত পৌরসভা ইলেকশনে এমপি বাহাউদ্দিন নাছিমের মনোনীত নৌকা মার্কা নিয়ে আমার পরিবার, এমনকি অসুস্থ অবস্থায় আমার নৌকায় দিয়ে আসা ভোট ও বিশেষকরে, বৃদ্ধ শিক্ষক পিতার ২৪ ঘণ্টা নৌকা নিয়ে ভাবনা-চেতনাকে অসম্মানীত করবেন না, প্লিজ।
সবশেষে, সুবিচারের পাশাপাশি সুস্থ জীবনে ফেরত যেতে, সবার দোয়া ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি-ধন্যবাদান্তে, আপনাদের স্নেহধন্য ‘রাব্বী’।
এমইউ/এআরএস/আরআইপি