মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা বাড়ছে না। উচ্চ আদালতের আদেশে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় তোলা হলেও তা নাকচ করা হয়েছে। এর ফলে ৬০ বছরেই তাদের অবসরে যাওয়া বলবৎ থাকলো।
সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবটি তোলা হলেও তা নাকচ করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম পরে সাংবাদিকদের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিগত সময়ে মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৫৭ থেকে ৬০ বছরে উন্নীত করেন। তাই বয়স বাড়ানোর বিষয়টি মন্ত্রিসভায় বিবেচিত হয়নি।
জানা যায়, গত বছর নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটি রায়ের ধারাবাহিকতায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আজ (সোমবার) মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স বাড়ানোর এ প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় তোলা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২০০৬ সালের ১২ জুলাই এক স্মারকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৫৭ বছর বাড়িয়ে ৬৫ বছরে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপনের নির্দেশনা দেয়।
সচিব বলেন, পত্রটি তৎকালীন তত্ত্বধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন না পাওয়ায় তা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়নি।
ওই নির্দেশনা পরিপালন না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন শিকদার ২০১৩ সালে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন।
রিটের শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেন। সরকারি স্মারকের ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা কেন ৬৫ বছর করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে। আরো ৬৮০ মুক্তিযোদ্ধা রিটে পক্ষভুক্ত হন।
রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছর ১৪ জানুয়ারি রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ওই প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপস্থাপন করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেয় আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে গেলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৬৫ বছর করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় তুলতে বলে।
এদিকে এই মামলা চলার মধ্যেই গত সরকারের মেয়াদে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হয়। তখন সরকারের অন্য কর্মকর্তাদের অবসরের বয়সসীমা ছিল ৫৭ বছর, যা পরে ৫৯ বছর করা হয়।
এই প্রেক্ষাপটে আরো একটি রিট আবেদন হলে ২০১২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা আরো এক বছর বাড়ানো হয়। সে অনুযায়ী বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৬০ বছর।
এছাড়া জাতীয় ই-সেবা আইনের খসড়া সোমবার মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হলেও তা আরো পরীক্ষা করে আবার উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
এসএ/আরএস/এমএস