ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

নদী রক্ষায় কমিশনকে কার্যকর করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:৩০ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২২

শুধু শিক্ষিত মানুষ হলেই চলে না, নদীগুলোকে রক্ষা করার জন্য সুশিক্ষিত মানুষও দরকার। দেশের নদ-নদী দূষণ ও দখলের হাত থেকে রক্ষা করতে নদী রক্ষা কমিশনকে আরও কার্যকর করতে হবে। স্বাধীন নদী কমিশন দেশের নদী রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বুধবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ আয়োজিত ‘আদালতের রায় মেনে নদীদূষণ রোধে শক্তিশালী নদী কমিশনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে আলোচকেরা এসব কথা বলেন।

সংলাপে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় আনুযায়ী প্রস্তুতকৃত অধিকতর শক্তিশালী নদী কমিশন আইনের খসড়া প্রশংসনীয়। তবে যেকোনো আইনী কাঠামোর বাস্তবায়ন নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের উপর।

‘আর যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা তার নেতৃত্বের উপর নির্ভরশীল। কাজেই বর্তমান সময়ে যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে কার্যকর একটি স্বাধীন নদী কমিশন দেশের নদী রক্ষায় অত্যন্ত জরুরি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মাদ গোলাম সারোয়ার বলেন, ২০০৯ সালের হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৩ সালে নদী রক্ষা কমিশন গঠিত হয়। গত কয়েক বছরে নদী রক্ষায় যে বিষয়গুলো এসেছে তা জনস্বার্থে করা রিট থেকে এসেছে। নদী রক্ষা কমিশনের পর্যাপ্ত জনবল নেই যা নদী রক্ষায় কাজ করবে।

তিনি আরও বলেন, নদী রক্ষায় প্রয়োজন সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণ। এর জন্য আদালত সমন্বয়হীনতাকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছেন। নদী রক্ষার সঙ্গে জড়িত সরকারি সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহকে আন্তরিক হতে হবে। ঢাকার নদী, পানি, বায়ুর স্ট্যান্ডার্ড মান অনুযায়ী এখানে আমরা ২য় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বসবাস করি।

সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। তিনি বলেন, নদীকে ভালোবাসা মানে মাকে ভালোবাসা। নদীর প্রবাহ ধরে রাখতে নদীর জমি ছেড়ে দিতে হবে ও সেটিকে জনগণের সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।

কেন বাংলাদেশের নদীসমূহের দুরবস্থা নিয়ে মহান সংসদ একদিন আলোচনা করতে পারে না এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, নদী কমিশন আইনের খসড়া বছরের পর বছর কোনো অগ্রগতি ছাড়াই পড়ে থাকে। এ সময় বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।

কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের (সিপিআই) প্রধান মাইনুদ্দীন আহমেদ বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য একটি নির্দিষ্ট এলাকা হিসেবে ঢাকা শহরের নদী, পানি, বায়ু ও শব্দ দূষণ নিয়ে কাজ করে ঢাকা স্টেট অব এনভায়রনমেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান চিত্র সবার সামনে প্রকাশ করে কিভাবে সুশাসন ও জবাবদিহিতার জায়গা নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। সকলের প্রচেষ্টায় এ লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, নদী রক্ষা কমিশনের কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে এর পরিচালনায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ওপর বেশি নির্ভর করে। নদী রক্ষা কমিশনকে যতই ক্ষমতা দেওয়া হোক না কেন বাস্তবায়নে তা কতটা কার্যকর সেটাই দেখার বিষয়।

৪৮ নদী সমীক্ষা প্রকল্পের টিমলিডার সৈয়দ মো. মতলুবুর রহমান বলেন, নদীকে রক্ষায় যারা কাজ করছে তাদের সহযোগিতা করতে হবে। নদী একটি দেশের সবকিছুর সঙ্গে জড়িত। নদী রক্ষায় আইন সংশোধন করার পাশাপাশি তা বাস্তবায়ন জরুরি।

নোঙর বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শামস সুমন বলেন, নদী রক্ষা কমিশনের সঙ্গে জনগণের বন্ধুত্ব থাকতে হবে। কমিশনের উচিত যারা নদী নিয়ে কাজ করে তাদের ও জনগণকে সম্পৃক্ত করে নদী রক্ষায় কাজ করা। নদীতে চলাচলকারী জনগণের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। এ সময় নদী রক্ষা নিয়ে একটা দিবস পালনের দাবিও জানান তিনি।

সংলাপে সভাপতিত্ব করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল। এতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ মনির হোসেন চৌধুরী, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের সভাপতি এম এস সিদ্দিকী, ঢাকা ওয়াসার ঢাকা ল্যাবরেটরির পরিচালক ড. আলমগীর হোসেন, দুই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. রাকিবুল ইসলাম, বেসরকারি ও অলাভজনক উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ফেরদৌস আহমেদ, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. কামরুজ্জামান এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের পরিবেশ সাংবাদিক ও স্থানীয় কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনের নেতারা।

এএএম/এমপি/জিকেএস