কমিউটার ট্রেনে ভিড়, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে ট্রেনের অর্ধেক টিকিট বিক্রি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এছাড়া আসন ছাড়া স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রিও বন্ধ রয়েছে।
তবে কমিউটার ট্রেনে এসব নিয়মের কোনোটাই মানা হচ্ছে না। আন্তঃনগর ট্রেনে আসন ছাড়া টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকলেও কমিউটার ট্রেনে সব ধরনের টিকিট দেওয়া হচ্ছে। ফলে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে কমিউটার ট্রেনে চলাচল করছেন যাত্রীরা।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নরসিংদী পর্যন্ত বিভিন্ন স্টেশনে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, তিতাস কমিউটারের কাউন্টারে দীর্ঘ সারি। অনেকে কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে টিসির কাছে থেকে টিকিট কিনছেন। সেখানে দেদারসে আসন ছাড়া স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি হচ্ছে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে একটি ট্রেনের দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিয়াজ মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বেশ ভূমিকা রয়েছে। কমিউটারগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী যাতায়াত করছে। মানুষ সচেতন না হলে স্বাস্থ্যবিধি মানানো কঠিন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, ট্রেনে যাতায়াত করে দেখা গেছে, কমলাপুর স্টেশন থেকেই প্রায় সব সিটে যাত্রীরা বসেছেন। অধিকাংশ যাত্রীর মুখে মাস্ক নেই। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধিও। বিমানবন্দর স্টেশন গিয়ে ভিড় আরও বেড়ে যায়। সিট খালি না থাকায় অনেক যাত্রী দাঁড়িয়েই যাতায়াত করছেন।
অধিকাংশ যাত্রীর মুখে মাস্ক নেই, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধিও/ছবি: জাগো নিউজ
তিতাস কমিউটারে চড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাচ্ছিলেন গাফফার হায়দার। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুনছি, করোনা নাকি বাড়ছেই। বাড়িতে কাজ আছে, তাই দাঁড়িয়ে যাচ্ছি। মাস্ক ব্যাগে আছে, পরা হয়নি।’
আশুগঞ্জগামী আরেক যাত্রী বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে টিকিট নিয়ে ট্রেনে উঠেছি। কিন্তু এত ভিড় হবে জানতাম না। ভিড়ে কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রেনের একজন টিকিট কালেক্টর (টিসি) বলেন, ‘টিকিট ছাড়াই যাত্রীরা ট্রেনে উঠে যাচ্ছে। ভিড় কমবে কীভাবে? কাউকে তো নামিয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এখানে আমাদের কী করার আছে?’
এদিকে, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের চোখ রাঙানি ও সংক্রমণের হারের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে সরকার বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি করেছে। টিকা নেওয়ার সনদ ছাড়া হোটেলে খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান সীমিত করার।
গণপরিবহনে আসন সংখ্যার চেয়ে কমিয়ে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া মাস্ক পরার বিষয়েও কঠোর ও মাস্ক না পরলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তির কথাও বলা হয়।
এছাড়া আজ থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয় সচল রাখার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।
আরএসএম/এএএইচ/এআরএ/এএসএম