নানক পরিচয়ে সচিবের কাছে তদবির, যুবক গ্রেফতার
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের পরিচয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে মোবাইল ফোনে চাকরির সুপারিশ করতে গিয়ে এক যুবক গ্রেফতার হয়েছেন। গ্রেফতার ওই যুবকের নাম তারেক সরকার (৩৫)। তবে গ্রেফতারের পর তিনি নিজেকে বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনের এপিএস বলে পরিচয় দেন। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগ।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে এসব কথা বলেন ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন। রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিসি মো. ফারুক হোসেন বলেন, ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের (শেখ তন্ময়) পরিচয় ব্যবহার করে তৎকালীন আইজি প্রিজন ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুনের হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করেন। এসময় তিনি কারারক্ষী পদে চাকরির জন্য সুপারিশ করেন। ওই মামলায় তারেক ছয় মাস কারাভোগ করে গত বছরের ২৮ অক্টোবর জামিনে মুক্ত হন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের পরিচয়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আক্তার হোসেনকে ফোন করেন তারেক। নিজেকে নানক পরিচয় দিয়ে সরকারি চাকরির তদবির করেন। কিন্তু তার আচরণ সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি পুলিশকে জানান সিনিয়র সচিব। বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগকে। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তের মাধ্যমে তারা জানতে পারে, তারেক একজন প্রতারক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে তিনটি প্রতারণা মামলা রয়েছে। জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে সচিবকে ফোন করেন তারেক।
ডিসি ফারুক হোসেন আরও বলেন, রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর তারেক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি নরসিংদী জেলা বিএনপির প্রচারদলের সদস্য সচিব। নিজেকে বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনের এপিএস বলে পরিচয় দেযন। তিনি ২০০৬ সালে কারারক্ষী পদে নিয়োগ পান এবং ২০২০ সালে একজন সংসদ সদস্যকে আইজি প্রিজন্স পরিচয়ে ফোন করার অপরাধে চাকরি হারান। চাকরি হারিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার নাম ব্যবহার করে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ফোন করে তদবির বাণিজ্যে করে আসছিলেন। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র, অ্যাডমিট কার্ড, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নিয়োগ প্রতি আর্থিক লেনদেনের হিসাবসহ বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, তারেকের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় বিস্ফোরকদ্রব্য আইন ও টাঙ্গাইল সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলা রয়েছে। এছাড়া রাজধানীর গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা রয়েছে। এ মামলায় তিনি ছয় মাস কারাভোগ করে জামিনে মুক্ত হন।
তারেক কারারক্ষী চাকরি নেওয়ার সময়ে কোনো সুপারিশ ছিল কিনা জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। গ্রেফতার তারেকের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
টিটি/কেএসআর/জিকেএস
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ তরুণদের দক্ষ করে তুলতে ফলমুখী সমবায়ী শিক্ষা প্রবর্তনের প্রস্তাব
- ২ বদিউল আলমের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
- ৩ মতিঝিলে রাস্তা পার হতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় নারীর মৃত্যু
- ৪ দেশীয় ঐতিহ্য সংরক্ষণে ৫ লাখ ডলার অনুদান দেবে মার্কিন দূতাবাস
- ৫ আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করছে কিছু গণমাধ্যম