‘কষ্টডা তো গরিবেরই, বড়লোক কর্তাদের কী?’
ছোট্ট প্রাইভেটকারে আড়াই বছরের বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে কাঁদছিলেন তার মা। গাজীপুরে তার কোনো স্বজন মারা গেছেন। সেখানে যেতে হবে। গাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে চালককে বারবার তাগাদা দিচ্ছিলেন ওই নারীর স্বামী। ‘ভাই, গাড়ি ছাড়বে কখন? আর কতক্ষণ?’ ওদিকে চালক যাত্রী ডাকছিলেন, ‘এই ঢাকা এয়ারপোর্ট ঢাকা এয়ারপোর্ট, আর দুইজন আর দুইজন’।
প্রাইভেটকারে চালকের পেছনে সাধারণত দুইজন বসলেও পরিবহন ধর্মঘটের সুযোগে ‘খ্যাপ’ মারতে নেমেছেন রেন্ট-এ-কারের এই চালক। সেজন্য দুইজনের বদলে সেখানে তিনজন বসাবেন, আর নিজের আসনের পাশে বসাবেন আরও একজন। প্রতিজনের কাছ থেকে ভাড়া নেবেন এক হাজার টাকা করে।
এখন কেউ কেঁদে মূর্চ্ছা গেলেও ওই চালক আর দুইজন যাত্রী ছাড়া গাড়ি ছাড়বেন না। সে কথাই বলছিলেন ওই নারীর স্বামী রুহুল আমিনকে। ‘ভাই, যাত্রী না হলে কীভাবে যাবো? চারজন লাগবে তো’। রুহুল আমিনের মুখ দিয়ে যেন কথা বেরোয় না।
সাধারণত ফেনী থেকে স্টার লাইন পরিবহনের বাসে ঢাকায় পৌঁছাতে ৩০০ টাকার কাছাকাছি ভাড়া লাগে। এসি বা নন-এসি বাসভেদে কিছুটা কমবেশি হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী অনেক বাস যায় ফেনীর মহিপাল দিয়ে। সেজন্য স্টার লাইনের পাশাপাশি মহিপালে এনা পরিবহনসহ আরও কিছু বাসের কাউন্টার আছে। এসব বাসেও প্রায় কাছাকাছি ভাড়া দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করা যায়।
গণপরিবহন বন্ধ। চলছে কেবল বিআরটিসির বাস। সেই গাড়ির দেখা পেলে বিপজ্জনক কায়দায় ঝুলে গন্তব্যে যাচ্ছে মানুষ। শনিবার রাজধানীর সড়কে মেলে এ চিত্র। ছবি: মাসুদ রানা
কিন্তু স্বজন হারানোর দিনে রুহুল আমিন দম্পতি মহিপাল মোড়ে এসে দেখেন গণপরিবহন বন্ধ। স্টার লাইন বা এনার মতো পরিবহনগুলোর কাউন্টার খোলা থাকলেও কেউই টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। রুহুল আমিন কাউন্টারে কথা বলে জানতে পারেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকেছেন। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে তারা এই কর্মসূচি ডেকেছেন। যদিও কেবল জনচলাচলের বাসই বন্ধ রয়েছে, অন্য কাভার্ড ভ্যান বা ট্রাক ঠিকই চলছে সড়কে।
উপায় না পেয়ে বাস কাউন্টারগুলোর সামনেই গাজীপুর যাওয়ার উপায় খুঁজতে থাকেন রুহুল আমিন। মুহূর্তেই সামনে হাজির একদল চালক। সঙ্গে কজন ‘উটকো’ লোক। দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন অবশ্য তাদের বলছিলেন ‘দালাল’। তারা হাঁকডাক ছাড়ছিল, ‘ঢাকা, এসি ১০০০, আর একজন লাগে, একজন, এখনই ছেড়ে দেবে’। এই দালালদের কথায় গলে দ্রুত গন্তব্যে যেতে স্ত্রীকে নিয়ে প্রাইভেটকারে ওঠেন রুহুল আমিন। কিন্তু আধঘণ্টায়ও গাড়ি রওয়ানা হয় না। এক হাজার টাকার যাত্রীর জন্য গাড়ির চালক আর তার সঙ্গীদের হাঁকডাক চলতেই থাকে।
ঢাকায় পৌঁছাতে বাস স্টপেজে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী হাসান সরকারও। কিছুক্ষণ পর বিআরটিসির চট্টগ্রাম-সিলেট রুটের একটি এসি বাস থামে সামনে। হাসান পথ এগোতে কুমিল্লা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ‘কুমিল্লা কত?’ প্রশ্ন করলে কন্ডাক্টরের উত্তর, ‘একদাম ৩০০!’ হাসান হাসেন। ফেনী থেকে কুমিল্লায় সাধারণত যেতে লাগে ৪০-৫০ টাকা। এসি বাস হিসেবে সেটা কিছুটা বেশি হয়। এই দুর্দিনে সরকারের এ পরিবহন যেখানে সেবা দেখিয়ে যাত্রীর আস্থা কুড়োনোর কথা, সেখানে তারা কয়েকগুণ বেশি ভাড়া চেয়ে গায়ে মাখছে দুর্নাম। সরকারি এ পরিবহনের লোকেরাও তাহলে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নেওয়ার অপেক্ষায় থাকে!
ধর্মঘটে বন্ধ গণপরিবহন। সেজন্য ভ্যান ভাড়া করে গন্তব্যে যাচ্ছে মানুষ। শনিবার রাজধানীর সড়কে মেলে এ চিত্র। ছবি: মাহবুব আলম
হাসান সেই গাড়িতে ওঠেন না। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর বিআরটিসির চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর রুটের আরেক এসি বাস আসে। কুমিল্লা বিশ্বরোড পর্যন্ত ১০০ টাকা দরদামে হাসান সেই গাড়িতে ওঠেন। আসনে বসতেই চারপাশ থেকে ক্ষোভের ঝাঁঝালো কণ্ঠ শোনা যায়।
একজন বলছিলেন, ‘একটা লকডাউন শেষ হয়ে পারলো না, আরেকটা লকডাউন দিছে’। আরেকজন ভুল ধরিয়ে দেন, ‘লকডাউন না, এটা বাসওয়ালারা ধর্মঘট ডাকছে, সরকার তেলের দাম বাড়াইছে, কিন্তু তাদের (গাড়ি) ভাড়া বাড়ায়নি, সেজন্য’।
পাশাপাশি আসনে বসা দুজন শিক্ষিত গোছের মানুষের স্বর এবার বেশ চড়া হয়। একজন বলতে থাকেন, ‘এসব আসলে কিছুই না, বাস ভাড়াতে বাড়াতে হবে, সেজন্য তারা (পরিবহন শ্রমিক-মালিক) এসব করছে’। অন্যজন সায় দিয়ে বলেন, ‘এসব তাদের ভেতরের ব্যাপার। শাজাহান খান (আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের) সরকারের লোক। খন্দকার এনায়েত উল্লাহও (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি) সরকারের লোক। তারা না চাইলে কার সাহস আছে এই ধর্মঘট ডাকার?’
এত ‘ভেতরকার রাজনীতি’তে মাথা না দিয়ে একজন মধ্যবয়সী বলে ওঠেন, ‘বলতেছে তেলের দাম বাড়ানোর কারণে নাকি এই ধর্মঘট। আচ্ছা যারা বাড়ালো তারা কি কারও সাথে কথা বলেনি? আবার যারা এই বাড়ানোর বিরুদ্ধে ধর্মঘট ডাকলো, তারা কি সরকারের কারও সাথে কথা বলেনি? মানে কেউ কারও সাথে কথা বলা ছাড়াই এসব করতেছে?’
দু-একজন সায় দেন। সেই শিক্ষিত দুজনের একজনই বলে ওঠেন, ‘আসলে সব কিছু সমন্বয় হওয়ার কথা থাকলেও এখানে সমন্বয়হীনতাই চলছে নিয়মের মতো করে। যেন সাধারণ পাবলিককে ভোগানোর জন্য এত আয়োজন। পাবলিকের পকেট কাটার জন্য এত নাটক। পাবলিক অতিষ্ট হয়ে বলবে, ভাড়া বাড়ে বাড়ুক, তবু রাস্তায় গাড়ি নামাও। এতে তেলের বাড়তি দামে সরকারের পকেটও ভরলো, আবার গাড়িওয়ালাও খুশি হয়ে গেলো।’ পাশের আরেক বয়স্ক লোক মাথা নেড়ে সায় দেন, ‘হুম, একদম ঠিক, যা যাবে পাবলিকের যাবে, কষ্টডা তো গরিবেরই, বড়লোক কর্তাদের কী?’
ধর্মঘটে বন্ধ গণপরিবহন, ফাঁকা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক/ছবি: জাগো নিউজ
আকস্মিক জ্বালানির দাম বৃদ্ধি এবং এর জেরে পরিবহন ধর্মঘটের সুযোগে ভাড়ার বাড়াবাড়ি শুধু বিআরটিসির সেই বাসেই নয়, চলছে সর্বত্র। রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসেও। মানুষও উগরে দিচ্ছে ক্ষোভ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ভুক্তভোগীরা।
‘জাতি আপনাদের এসব অবদানের কথা নিশ্চয়ই মনে রাখবে’
ডেমরা থেকে সদরঘাট যেতে সাধারণত ২৫০-৩০০ টাকা ভাড়া নিয়ে থাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো। কিন্তু ধর্মঘটের সুযোগ নিয়ে অনেক সিএনজিচালক ৫০০-৬০০ টাকা আদায় করছেন। ক্ষুব্ধ সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘...আজ ২৫০ টাকার সিএনজি ভাড়া ৫০০ টাকা দিয়ে সদরঘাট আসলাম। কেরোসিনের দাম বাড়ায় (ঢাকা থেকে) মাদারীপুরের লঞ্চগুলো আজ থেকে (লঞ্চের) কেবিন ভাড়া ২০০ টাকা ও ডেকে জনপ্রতি ৫০ টাকা বাড়িয়েছে। তাছাড়া, পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল এক সময় ৪৫০ টাকা ছিল যা এখন ৭৬০ টাকা! এলপিজি গ্যাস ৯৫০ টাকারটা এখন ১৩৫০ টাকা। রডের দাম টনপ্রতি ৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে, যা এক সময় ৫৫,০০০ থেকে-৬০,০০০ টাকা ছিল।...’
ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক শরীফুল হাসান তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘গরিবের কেরোসিন কিংবা ডিজেলের দাম একলাফে ১৫ টাকা বাড়াতে সাহস লাগে। আর সেটা হলো জনগণকে তোয়াক্কা না করার সাহস! ভারত বা অনেক দেশের সেই সাহস না থাকলেও এই দেশের নীতি নির্ধারকেরা সেই সাহস অর্জন করে ফেলেছেন। ফলে লাখ লাখ মানুষ যখন পরিবহন ধর্মঘটে দুর্ভোগে আমাদের স্যারেরা তখন ঘুমোচ্ছেন! কারণ শুক্র শনিবারে ছুটি। জাতি আপনাদের এসব অবদানের কথা নিশ্চয়ই মনে রাখবে!’
সীমাহীন দুর্ভোগ পরীক্ষার্থী-চাকরিপ্রত্যাশীদের
খাদ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে ৫ নভেম্বর (শুক্রবার) সকালে। ফেনীর লেমুয়া ইউনিয়নের চাকরিপ্রত্যাশী মো. জহিরুল হকের পরীক্ষা কেন্দ্র পড়েছে চট্টগ্রামের কলেজিয়েট স্কুলে। ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত জহিরুলের পরিকল্পনা ছিল, পরদিন ভোর ৬টা-৭টার দিকে রওয়ানা হয়ে নির্ধারিত সময় ১০টার অনেক আগেই পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে যাবেন।
ধর্মঘটে গণপরিবহন বন্ধ। রাজধানীর সড়কে গাড়ির অপেক্ষায় কর্মস্থলগামী মানুষ। ছবি: মাহবুব আলম
কিন্তু যখন খবরে শুনলেন সকাল থেকে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, গণপরিবহন চলবে না, জহিরুল বিপাকে পড়ে যান। অগত্যা সেই রাতেই রওয়ানা হন চট্টগ্রামে। পরে পরীক্ষা কেন্দ্রের পাশের একটি আবাসিক হোটেলে রাতযাপন করে অংশ নেন পরীক্ষায়।
শনিবার (৬ নভেম্বর) সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষা। এই কলেজগুলোতে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীরাও ভুগেছেন ঢাকায় আসতে এবং কেন্দ্রে পৌঁছাতে। যেমন রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে আজিমপুরে যাওয়ার জন্য প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে সড়কে অপেক্ষা করছিলেন ভর্তিচ্ছু নাবিল বিন আহসান। দীর্ঘ অপেক্ষার পর সিএনজিচালিত অটোরিকশার দেখা মিললেও ভাড়া চাওয়া হয়েছে ৭০০ টাকা। অথচ অন্য সময় ৩০০-৩৫০ টাকায়ই যাওয়া যায়। হাতে সময় কম বলে অনেক বেশি ভাড়া দিয়েই রওনা হতে হয় ওই পরীক্ষার্থীকে।
আগেরদিন ৫ নভেম্বর ঢাকায় মোট ২৬টি নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সকালে হয় ১৭টি, বিকেলে হয় ৯টি। এই পরীক্ষার্থীদেরও কেন্দ্রে পৌঁছাতে শিকার হতে হয়েছে সীমাহীন ভোগান্তির, গুনতে হয়েছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া।
খেসারত সাধারণ মানুষকেই বেশি দিতে হবে
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে বেশি ভুগছে সাধারণ মানুষই। এই দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না এলে শেষ পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধির ঘা-ও হজম করতে হবে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদেরই।
এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এবং ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষায় কাজ করা কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি-বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, জ্বালানি খাতে যেভাবে দাম নির্ধারণ করে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় চলছে, তা আইনের ভাষায় লুণ্ঠনমূলক আয়। যৌক্তিক মূল্যের বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় মানেই প্রতারণা বা তছরুপ বা লুণ্ঠন। এখন তাই হচ্ছে। ভয়ঙ্করভাবে আইনের লঙ্ঘন করছেন তারা।
ধর্মঘটের কারণে গণপরিবহন বন্ধ। এই অবস্থায় রাস্তায় নেমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে নারী ও শিশুরা। ছবি: জাগো নিউজ
‘এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকেই সবচেয়ে বেশি খেসারত দিতে হবে। তেলের দাম বাড়লে সবকিছুরই দাম বাড়বে। কিন্তু সাধারণ মানুষের তো আর ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে না। বেঁচে থাকতে হলে তাকে ব্যয় কমাতে হবে। অধিকাংশ মানুষ যদি ব্যয় কমাতে বাধ্য হয় বাজারে সরবরাহ কমবে। এতে কিন্তু সরকারের রাজস্ব আয়ও কমে যাবে। তখন সরকার ব্যাংকের ঋণের ওপর নির্ভর করবে। সরকার ব্যাংকের ঋণ বাড়ালে সাধারণ মানুষ ব্যাংক ঋণ পাবে না। তখন বেসরকারি বিনিয়োগে ধস নামবে। পাশের দেশ ভারতে জ্বালানির দাম বাড়ানোর কারণেই অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছে। তাদের জিডিপি-প্রবৃদ্ধি এখন বাংলাদেশের চেয়েও কম। করোনার মধ্যেও জ্বালানির দাম কম থাকার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভারতের চেয়ে ভালো ছিল। এবার এই মূল্যবৃদ্ধি অর্থনীতিকে চরম বেসামাল করে তুলবে বলে মনে করি। সর্বত্রই অস্থিরতা দেখা দেবে‘—বলেন শামসুল আলম।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে ফের ডিজেল-কেরোসিনের মূল্য সমন্বয়
গত ৩ নভেম্বর রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানায়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে নতুন দাম ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। তার পরদিনই পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দেন।
এই ধর্মঘটে সারাদেশে জনদুর্ভোগ সীমাহীন রূপ নিলেও সংকট নিরসনে এখন পর্যন্ত সরকার বা আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে কোনো ঘোষণা আসেনি। বরং দেশের বাজারে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়মিত সমন্বয় করছে। কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় রেখে সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহ করতে বদ্ধপরিকর।... আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে ফের ডিজেল-কেরোসিনের মূল্য সমন্বয় করা হবে।’
এইচএ/এমএস