লাইসেন্স ছাড়াই হাজারো ওয়াকিটকি বিক্রি, নিরাপত্তায় হুমকি: র্যাব
বিদেশ থেকে অবৈধ পথে ওয়াকিটকি ওয়্যারলেস সেট এনে দেশের বাজারে খুচরা বিক্রি করতো একটি চক্র। চক্রটি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) লাইসেন্স বা তরঙ্গ নেওয়া ছাড়াই হাজারের বেশি ওয়াকিটকি সেট বিক্রি করেছে।
র্যাব বলছে, দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করে অবৈধভাবে সাধারণ মানুষের কাছে কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যা সার্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
শনিবার রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত বিটিআরসির সহযোগিতায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ওয়াকিটকি ওয়্যারলেস সেট বিক্রি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
রাজধানীর সায়দাবাদ, মনিপুরীপাড়া, রাজারবাগ ও শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে অবৈধ ওয়াকিটকি ওয়্যারলেস সেট ও বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদিসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব। অভিযানে অবৈধ ৩১৭টি বিভিন্ন প্রকার ওয়াকিটকি সেট, ১১৬টি মোবাইল ও পাঁচ হাজার ২৪৪টি বিভিন্ন প্রকার আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
গ্রেফতাররা হলেন- মেহেদী হাসান (২৭), মো. সাদিক হাসান (২৬), মো. ফয়সাল (২৩), তালিবুর রহমান (২৪) ও মো. ফারুক হাসান (৫৯)।
এরমধ্যে মেহেদী হাসানের কাছ থেকে ২২৪টি ওয়াকিটকি ওয়্যারলেস সেট, ফারুক হাসানের কাছ থেকে ৩০টি ওয়াকিটকি ওয়্যারলেস সেট ও পলাতক গোলাম মোহাম্মদ ফেরদৌসের বাসা থেকে ৬৩টি ওয়াকিটকি ওয়্যারলেস সেট ও আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়।
রোববার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন রাব-১০-এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১ এর ধারা ৫৫(৭) মোতাবেক ওয়াকিটকি ব্যবহারের জন্য কোনো প্রকার লাইসেন্স বা তরঙ্গ গ্রহণ না করেই এ চক্রটি ব্যবসা করছিলো। এছাড়াও একই আইনের ৫৭(৩) ধারা মোতাবেক ওয়াকিটকি আমদানি করার আগে বিটিআরসি থেকে অনাপত্তি নেওয়ার বিধান থাকলেও তারা তা ভঙ্গ করে অবৈধভাবে ওয়াকিটকি আমদানির পর বিক্রি করেছে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের কিছু ব্যক্তির মাধ্যমে বিদেশ থেকে এক বছর ধরে লাইসেন্স ছাড়া ওয়াকিটকি সেট ও সরঞ্জামাদি অবৈধ পথে সংগ্রহ করছিলো চক্রটি।
রাব-১০-এর অধিনায়ক বলেন, চক্রটি এ পর্যন্ত এক হাজার ১৫০টি ওয়াকিটকি সেট অবৈধ পন্থায় কেনাবেচা করেছে। এক্ষেত্রে ওয়াকিটকি সেট ও প্রয়োজনীয় তরঙ্গ ব্যবহারের লাইসেন্স দেওয়ার মাধ্যমে সরকার যে রাজস্ব আহরণ করতো, তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। মূলতঃ সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যেই চক্রটি অবৈধ উপায়ে ওয়াকিটকি সেট ও সরঞ্জমাদি আমদানি করেছে।
অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, বিটিআরসি থেকে জারি করা নির্দেশনা মোতাবেক সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যতিত অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তির মাধ্যমে কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
এ ধরনের অবৈধ ওয়াকটকি সেট ব্যবহার করে অপরাধী চক্র ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, দস্যুতা, চাঁদাবাজি ও প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত করে বলেও যোগ করেন এ র্যাব কর্মকর্তা।
টিটি/এমকেআর/জেআইএম