‘মাইকে ঘোষণা শুনে টিকা দিতে এসেছি’
‘মাইকে ঘোষণা শুনে টিকা দিতে এসেছি। আগে জানতাম না। টিকা নিতে এসে অপেক্ষা করতে হয়নি। সবাই সুন্দরভাবে টিকা নিতে পারছেন। কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর সায়দাবাদের ৫০নং ওয়ার্ডের চন্দনকোঠা কমিউনিটি সেন্টারে টিকা দিতে আসা সালমা বেগম জাগো নিউজকে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে করোনাভাইরাসের গণটিকাদান কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সারাদেশে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আজ একদিনে ৭৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে। তবে সকাল থেকে রাজধানীর টিকাকেন্দ্রগুলোতে টিকা নিতে আসা মানুষের তেমন উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) যাত্রাবাড়ীর সায়দাবাদ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৯টা থেকে টিকাদান কার্যক্রম শুরুর হলেও টিকাকেন্দ্রের সামনে নেই কোনো দীর্ঘ লাইন। দু-একজন করে আসছেন, টিকা নিয়ে চলে যাচ্ছেন।
তবে সকাল থেকে রাজধানীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি দিনের শুরুতে টিকাকেন্দ্রে ভিড় না থাকার কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
গত ৭ আগস্ট থেকে প্রথম ধাপে গণটিকা দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। শুরুতে টিকাকেন্দ্রগুলোতে টিকা গ্রহণেচ্ছু মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল।
সকালে চন্দনকোঠা কমিউনিটি সেন্টারে টিকা দিতে আসা আরেক নারী ময়না আক্তার জাগো নিউজকে জানান, মাসখানেক আগে ভ্যাকসিনের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছি। আজ প্রধানমন্ত্রীরর জন্মদিন উপলক্ষে টিকা দেওয়া হবে জেনে এসেছি। তেমন ভিড় নেই। এসেই টিকা দিতে পেরেছি। লাইনেও দাঁড়াতে হয়নি।
এ টিকাকেন্দ্রের সুপারভাইজার উন্নতি রানি পাল জাগো নিউজকে জানান, সকাল ৯টা থেকে আমরা টিকা দেওয়া শুরু করেছি। তবে ভিড় কিছুটা কম। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে মাইকিং করে মানুষকে টিকা কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। মূলত যাদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা আছে, তাদেরই টিকা দেওয়া হচ্ছে। সে কারণেই ভিড় কম।
জানা গেছে, আজ (২৮ তারিখ) সকাল থেকে শুরু হওয়া গণটিকাদান কর্মসূচিতে ৭৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত টিকাদান কর্মসূচি চলবে। প্রয়োজনে একাধিক শিফটে টিকা দেওয়া হবে। পাশাপাশি নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিও চলবে।
এর আগে গত রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে সারাদেশের ছয় হাজারের বেশি কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে দিনব্যাপী একাধিক শিফটের মাধ্যমে ৭৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে। টিকাদানের ক্ষেত্রে প্রথম দুই ঘণ্টা ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধীরা অগ্রাধিকার পাবেন। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কাছে টিকা পৌঁছে দেওয়ার জন্য এ টার্গেট নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে একদিনে ৪৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ৭৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার টার্গেট পূরণ করতে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, রাজনীতিক ও গণমাধ্যমকর্মীসহ সবার সহযোগিতা চান তিনি।
চার হাজার ৬০০টি ইউনিয়ন, এক হাজার ৫৪টি পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪৩৩টি ওয়ার্ডে স্থাপন করা টিকাকেন্দ্র থেকে এ গণটিকাদান কর্মযজ্ঞ চলছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে তিনটি, পৌরসভায় একটি এবং সিটি করপোরেশন এলাকার কেন্দ্রগুলোতে তিনটি করে বুথ থাকবে। যারা টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন তাদের এ ক্যাম্পেইনে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
আইএইচআর/এমকেআর/জিকেএস