১১ মাসে ২৩০টি হারানো মোবাইল উদ্ধার করেছেন এএসআই মাসুদ
যেন মরুভূমিতে সুই খোঁজার চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ রানা। শেষমেশ সফল হয়ে দুই শতাধিক হারানো মোবাইল উদ্ধার করেছেন। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একাধিকবার পুরস্কৃতও হয়েছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নিউমার্কেট থানায় কর্মরত।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২৩০টি মোবাইল উদ্ধার করে প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। প্রতিটি হারানো মোবাইল মালিকের হাতে ফেরত দেওয়ার সময় একটি করে ফুল শুভেচ্ছা উপহারও তুলে দেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এছাড়া বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেওয়া কয়েকটি ঘটনায় সাড়ে ২৬ হাজার টাকা উদ্ধার করে মালিককে বুঝিয়ে দিয়েছেন মাসুদ রানা। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকাশ থেকে খোয়া যাওয়া ২৫ হাজার টাকা কুড়িগ্রাম থেকে উদ্ধার করে প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ডিএমপির নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স ম কাইয়ুম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এএসআই মাসুদ রানা প্রযুক্তিতে অনেক দক্ষ। এজন্য থানায় মোবাইল হারানো সংক্রান্ত জিডি হলে ডাক পড়ে তার। অত্যন্ত সুকৌশলে দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পরিশ্রম করে তিনি মোবাইল উদ্ধার করেন। এসব অভিযোগ নিয়ে কাজ করা আর মরুভূমিতে সুই খুঁজে বের করা প্রায় একই কথা ‘
জানতে চাইলে এএসআই মাসুদ রানা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার কর্মরত থানাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নিউমার্কেট এলাকাধীন হওয়ায় বেশিরভাগ মোবাইল হারানোর জিডি হয় ছাত্র ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের। আমি সবগুলোই সমান গুরুত্বের সঙ্গে তাদের হারানো মোবাইল উদ্ধারের চেষ্টা করি।’
তিনি বলেন, ‘অনেক দামি জিনিস হারানোর চেয়ে মোবাইল হারানোর কষ্ট অনেক বেশি। কেননা মোবাইলে প্রয়োজনীয় নম্বর থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে। জিডি করার পর ফোন উদ্ধার করে ভুক্তভোগীকে ফিরিয়ে দিলে তারা অনেকে বিশ্বাসই করতে চান না। মোবাইল নেওয়ার সময় অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।’
মাসুদ রানা আরও বলেন, ‘হারানো মোবাইল উদ্ধার করে প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দেওয়ায় ডিএমপি কমিশনার স্যার আমাকে সাতবার পুরস্কৃত করেছেন। এছাড়া রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান স্যারও আমাকে পুরস্কৃত করেছেন। সাধারণ মানুষও আমাকে স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন।’
মাসুদ রানা ২০০৩ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। এরপর ২০১৫ সালে এএসআই পদে পদোন্নাতি পান। গত বছরের ১৯ আগস্ট থেকে তিনি নিউমার্কেট থানায় দায়িত্ব পালন করছেন। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ি। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিসুর রহমানও পুলিশ সদস্য ছিলেন।
টিটি/এএএইচ/জেআইএম