ভিকারুননিসার ইউনিফর্ম বানাতে ভোগান্তিতে অভিভাবকরা
ছাত্রীদের ড্রেস তৈরির কারখানায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফলে স্কুল-কলেজ খুললেও সন্তানদের ইউনিফর্ম (ড্রেস কোড) তৈরি করতে পারছেন না অভিভাবকরা। এটি দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সাল থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের চারটি ক্যাম্পাসের ছাত্রীদের ড্রেস তৈরির কাজ করছে মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ। প্রতিটি ক্যাম্পাসের ভেতরে অফিস বানিয়ে তারা ড্রেস তৈরি করে ডেলিভারি দেন। এজন্য ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষকে প্রতি মাসে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা অফিস ভাড়া পরিশোধ করতে হয়।
জানতে চাইলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মজিদ সুজন জাগো নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন পর স্কুল-কলেজ খোলায় প্রায় সব ছাত্রীর ড্রেস নতুন করে তৈরি করতে হচ্ছে। ক্যাম্পাসের মধ্যে ইউনিফর্ম তৈরি করা গেলেও সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য মেয়েদের ড্রেস বানানো যাচ্ছে না। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে দ্রুত ড্রেস মেকার অফিস খুলে দেওয়ার দাবি জানান অভিভাবকরা।
জানা গেছে, গত বছরের ২৭ অক্টোবর ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিন বছরের জন্য চুক্তি নবায়ন করে প্রতিষ্ঠানটি। তিন লাখ ৫০ হাজার ২০০ টাকা জামানতের মাধ্যমে মাসিক দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা ভাড়ায় ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ চুক্তির নবায়ন করা হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের অফিসও ১৮ মাস বন্ধ ছিল বলে ভাড়া বকেয়া হয়।
জানতে চাইলে চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের প্রতিষ্ঠাতা মো. ইব্রাহিম মোল্লা শনিবার জাগো নিউজকে বলেন, কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া গত ৮ সেপ্টেম্বর আমার অফিসে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। অফিস ভাড়ার কোনো চুক্তিপত্র নেই বলে তালা লাগালেও প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে তিন বছরের চুক্তিপত্র দাখিল করার পর আমাদের কাছে বকেয়া ভাড়া চাওয়া হয়। অর্থ পরিশোধের জন্য লিখিতভাবে আমি অধ্যক্ষের কাছে দুই মাসের সময় চাইলেও তাতে রাজি না হওয়ায় আমার অফিস রুম সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, তালা লাগানোর পর অধ্যক্ষকে মানবিকভাবে সেটি খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানালেও তিনি রাজি না হওয়ায় ভিকারুননিসার গভর্নিং বডির সভাপতি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি।
পাশাপাশি টেন্ডার ছাড়া ভিকারুননিসায় কাজ করায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিযোগিতা কমিশন থেকে গত ছয় মাস আগে আমার প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৮০ হাজার টাকা জরিমানা পরিশোধ করতে বলা হয়। এ নির্দেশনা বাতিলে কমিশনে মামলা করেন তিনি। মামলাটি চলমান থাকলেও তার অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার জাগো নিউজকে বলেন, গভর্নিং বডির সিদ্ধান্তে তাদের অফিসে তালা দেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের দরপত্র ছাড়া একজন ব্যক্তিকে এ কাজ দেওয়ায় চলতি বছরের শুরুতে প্রতিযোগিতা কমিশন থেকে চিঠি পাঠিয়ে এটি বাতিল করতে বলা হয়। তার ভিত্তিতে আমরা চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে তালা বন্ধ করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, তাদের কাছে অনেক টাকা ভাড়া জমেছে। বর্তমানে ভাড়া পরিশোধ করলেও ড্রেস মেকার অফিস খুলে দেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি।
এমএইচএম/এমএসএম/এমআরএম/জেআইএম