বিদেশি কোম্পানির কাছে ইভ্যালি বিক্রির পরিকল্পনা ছিল: র্যাব
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবসায়িক স্ট্র্যাটেজি তৈরি করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল। এরপর দায়সহ কোনো প্রতিষ্ঠিত বিদেশি কোম্পানির কাছে ইভ্যালি বিক্রি করে লভ্যাংশ নিতে চেয়েছিলেন তিনি। এ পরিকল্পনা মাফিক বিভিন্ন দেশও ভ্রমণ করেন এমডি রাসেল।
শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, একটি বিদেশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় অফার (১ঃ২) এর আলোকে ইভ্যালির ব্যবসায়িক স্ট্র্যাটেজি তৈরি করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির কাছে কোম্পানি শেয়ারের অফার দিয়ে প্রলুব্ধ করে দায় চাপানোও ছিল পরিকল্পনার অংশ। এছাড়া তিন বছর পূর্ণ হলে শেয়ার মার্কেটে অন্তর্ভুক্ত হয়ে দায় চাপানোর পরিকল্পনা নেন রাসেল। দায় মেটাতে বিভিন্ন অজুহাতে সময় বাড়ানোর আবেদনও একটি অপকৌশল মাত্র। সর্বশেষ তিনি দায় মেটাতে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা করেছিলেন।
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির দেনা দাঁড়ায় ৪০৩ কোটি টাকা; তাদের চলতি সম্পদ ছিল ৬৫ কোটি টাকা, বিভিন্ন পণ্য বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম নেওয়া ২১৪ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন গ্রাহক ও কোম্পানির কাছে বকেয়া প্রায় ১৯০ কোটি টাকা। নানা সংস্থার সূত্রে প্রকাশিত বিপুল পরিমাণ দায়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রেক্ষিতে রাসেল দম্পতি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
প্রতিষ্ঠানটির আরও দায়-দেনা রয়েছে জানিয়ে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, দায়ের সর্বমোট পরিমাণ ১০০০ কোটি টাকার বেশি। কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে লোকসানি কোম্পানি, কোনো ব্যবসায়িক লাভ করতে পারেনি। গ্রাহকের অর্থ দিয়েই যাবতীয় ব্যয় ও খরচ নির্বাহ করা হতো। ফলে দেনা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার রাসেল আরও জানান, ইভ্যালি ছাড়াও তার আরও কয়েকটি ব্যবসায়িক প্লাটফর্ম রয়েছে। এর মধ্যে ই-ফুড, ই-খাতা, ই-বাজার ইত্যাদি দিয়েই ইভ্যালির ব্যবসায়িক কাঠামো শুরু হয়েছিল। তার ব্যবসায়িক স্ট্র্যাটেজি ছিল তৈরিকারক ও গ্রাহক চেইন বা নেটওয়ার্ক থেকে বিপুল অর্থ তুলে নেওয়া। তিনি বিশাল অফার, ছাড়ের ছড়াছড়ি আর ক্যাশব্যাকের অফার দিয়ে সাধারণ জনগণকে প্রলুব্ধ করতেন, যাতে দ্রুততম সময়ে ক্রেতা বৃদ্ধি করা যায়।
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ইভ্যালির গ্রাহক সংখ্যা ৪৪ লাখেরও বেশি। তিনি বিভিন্ন লোভনীয় অফারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে এত সংখ্যক গ্রাহক সৃষ্টি করেছেন। ইভ্যালির বিভিন্ন লোভনীয় অফারগুলো হলো- সাইক্লোন অফার বাজার মূল্যের অর্ধেক মূল্যে পণ্য বিক্রি, ক্যাশব্যাক অফার (মূল্যের ৫০-১৫০% ক্যাশব্যাক অফার) আর্থকুয়েক অফার প্রায়োরিটি স্টোর, ক্যাশ অন ডেলিভারি। এছাড়া বিভিন্ন উৎসবেও ছিল জমজমাট অফার; যেমন- বৈশাখী কিংবা ঈদ অফার ইত্যাদি।
বিক্রি বাড়ায় গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত চাহিদাও বাড়তে থাকে। সেক্ষেত্রে মোবাইল, টিভি, ফ্রিজ, এসি, মোটরবাইক, গাড়ি, গৃহস্থালি, প্রসাধনী, প্যাকেজ ট্যুর, হোটেল বুকিং, জুয়েলারী, স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী ও ফার্নিচার পণ্যগুলো বেছে নেওয়া হয় বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় রাসেল দম্পতি। এসব পণ্যের মূল্য ছাড়ের ফলে গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়। এতে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির বিশাল আকারে দায় (Liabilities) তৈরি হয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ইভ্যালির ব্যবসায়িক অপকৌশল ছিল, নতুন গ্রাহকের ওপর দায় চাপিয়ে পুরোনো গ্রাহক ও সরবরাহকারীর দায়ের (Liabilities) আংশিক করে পরিশোধ করা। অর্থাৎ দায় ট্রান্সফারের মাধ্যমে দুরভিসন্ধিমূলক অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছিলেন রাসেল।
তিনি জানান, রাসেল ও তার স্ত্রীর ইভ্যালি প্রতিষ্ঠান চলতো পরিবার নিয়ন্ত্রিত পরিকল্পিত ব্যবসায়িক গঠনতন্ত্রে। একক সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বেচ্ছাচারিতা দেখিয়েছেন তারা। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতি ছিল। ফলে ক্রমান্বয়ে প্রতিষ্ঠানের দায় বাড়তে বাড়তে বর্তমানে প্রায় অচলাবস্থায় উপনীত হয়েছে।
টিটি/এমকেআর
টাইমলাইন
- ০২:২৮ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ রাসেল দম্পতির মুক্তির দাবিতে আজও আদালতের সামনে মানববন্ধন
- ০১:৩৫ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ আদালতে ইভ্যালির রাসেল, কারাগারে রাখার আবেদন
- ১১:৪৯ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইভ্যালির চেয়ারম্যান-এমডির মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন
- ০৩:০৭ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ই-কমার্স গ্রাহকদের লোভ কমিয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ
- ১২:১২ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ এবার রাসেল দম্পতিসহ ইভ্যালির ২০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
- ০৪:৪২ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ করোনা পরিস্থিতিতে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে ইভ্যালি: আইনজীবী
- ০৩:৫২ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইভ্যালির রাসেলের মুক্তি চেয়ে এবার আদালতের সামনে বিক্ষোভ
- ০৩:২৪ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইভ্যালির চেয়ারম্যান-এমডি ৩ দিনের রিমান্ডে
- ০৩:০৬ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইভ্যালির চেয়ারম্যান-এমডির জামিন আবেদন
- ০২:১৯ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইভ্যালির চেয়ারম্যান-এমডিকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন
- ০২:০৪ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ আদালতে ইভ্যালির চেয়ারম্যান-এমডি
- ০১:৩৭ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ বিদেশি কোম্পানির কাছে ইভ্যালি বিক্রির পরিকল্পনা ছিল: র্যাব
- ০১:৩৬ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে রাসেল দম্পতির
- ০১:২৬ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ সুনসান ইভ্যালির কার্যালয়
- ০১:১৪ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ গুলশান থানায় নেওয়া হলো রাসেল দম্পতিকে
- ১২:২৫ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইভ্যালি থেকে মাসে ১০ লাখ নিতেন রাসেল দম্পতি: র্যাব
- ০৯:২৩ এএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ আরও কিছু মাস প্রয়োজন ছিল: ইভ্যালি
- ০২:৩৭ এএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইভ্যালির এমডি-সিইও’র মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনের ডাক
- ০৯:১৪ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইভ্যালির চেয়ারম্যান-এমডিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, থানায় হস্তান্তর আজ
- ০৭:৩১ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ‘ইভ্যালির রাসেল চেয়েছেন ৬ মাস, হাতে এখনো ৫ মাস’
- ০৬:০০ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ গ্রেফতারের পর উল্টো ইভ্যালির রাসেলের পক্ষেই বিক্ষোভ
- ০৫:২৯ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হলো ইভ্যালির চেয়ারম্যান-এমডিকে
- ০৪:৫৫ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ আজ অফিসেও যাননি ইভ্যালির এমডি রাসেল
- ০৪:৫৪ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইভ্যালির এমডি রাসেল ও তার স্ত্রী গ্রেফতার
- ০৪:১০ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইভ্যালির রাসেলের বাসায় অভিযানে র্যাব