রোগীর চাপ কিছুটা কমেছে ঢামেকের করোনা ইউনিটে
ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক-২) করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রোগীর চাপ কমেছে। দু’দিন আগেও হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে করোনা রোগী বহনে অ্যাম্বুলেন্সের দীর্ঘ সারি থাকলেও আজ (৯ আগস্ট) সেই তুলনায় চোখে পড়েনি। মাঝে মাঝে দু’একটি অ্যাম্বুলেন্স এলেও তাদের রোগী নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়নি।
মুমূর্ষু রোগী হলে ভর্তি নিয়েছেন অন্যথায় প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়ে বাসায় নিয়ে আপাতত চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। হাসপাতালের সামনে স্বজনদেরকেও উদ্বিগ্ন হয়ে এদিক সেদিক ছুটোছুটি করতে দেখা যায়নি। সোমবার (৯ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র চোখে পড়ে।
ঢামেক-২ করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মোট ৬৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। আজ সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ১০ জন রোগী। কয়েক দিন আগেও এই সংখ্যা দুই-তিনগুণেরও বেশি ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢামেকে চিকিৎসা নিতে এসেছেন করোনায় আক্রান্ত পঞ্চাশোর্ধ্ব নাসিমা বেগম। অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে থাকা নাসিমা বেগম অক্সিজেন সিলিন্ডারের সাহায্যে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছিলেন।
পাশে বসে থাকা তার মেয়ে জানান, কয়েক দিন ধরে তিনি (নাসিমা বেগম) জ্বর ও ঠাণ্ডা কাশিতে ভুগছিলেন। নমুনা পরীক্ষার পর তার করোনা শনাক্ত হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু গতকাল তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় ডাক্তারের কাছে গেলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। তাৎক্ষণিকভাবে শ্রীনগরের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু সেখানকার ডাক্তাররা আজ সকালে দ্রুত ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, এখানে নিয়ে আসার সময় চিন্তায় ছিলাম ভর্তি করাতে পারব কি-না। কিন্তু আধা-ঘণ্টার মধ্যেই জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অ্যাম্বুলেন্স থেকে রোগী নামিয়ে ভেতরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের গত ৮ আগস্টের শয্যা সম্পর্কিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ঢামেক-২ হাসপাতালের সাধারণ ৮৪৫ শয্যার মধ্যে ৯৩টি শয্যা খালি রয়েছে। ২০টি আইসিইউ’র একটিও খালি নেই। ৪০টি এইচডিইউ (হাই ডিপেনডেনসি ইউনিট) বেডের চারটি খালি রয়েছে।
স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান লকডাউনে কিছুটা হলেও লাভ হয়েছে। ফলে গত দুদিন ধরে সংক্রমণ কিছুটা কম। তবে করোনাকালে শতভাগ মাস্ক পরিধানসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।
এমইউ/এআরএ/জিকেএস