ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘মালিক হয়েও চোরের মতো লুকিয়ে বই বেচতে হয়’

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৮:১০ পিএম, ০৩ আগস্ট ২০২১

‘কী বই লাগবে ভাই, মেডিকেল-ইঞ্জিনিয়ারিং?’ মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজধানীর নীলক্ষেতে বইয়ের মার্কেটের সামনের রাস্তায় এক যুবক মোটরসাইকেল থামিয়ে দাঁড়াতেই এক দোকান মালিক ফিস ফিস করে এ কথা জিজ্ঞাসা করেন। ওই যুবকের ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব পেতেই মার্কেটের গেট দিয়ে চুপিসারি ভেতরে প্রবেশ করে কয়েক মিনিট পর বাইরে বেরিয়ে আসেন তিনি।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বাকুশাহ মার্কেটের বইয়ের দোকান মালিক আবদুস সালাম (ছদ্ম নাম) বলেন, ‘লকডাউনের কারণে গত ২৩ আগস্ট থেকে দোকান বন্ধ। আয়-রোজগার সম্পূর্ণ বন্ধ কিন্তু বাড়ি ভাড়া, ছেলেমেয়ের স্কুল ও শিক্ষকের বেতনসহ সংসারের যাবতীয় খরচ থেমে নেই। তাই ১ আগস্ট থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে বই বিক্রি করছি। কিন্তু নিউমার্কেট থানা খুব কাছে হওয়ায় প্রায়ই পুলিশ মার্কেটের ভেতরে প্রবেশ করে কোনো দোকান খোলা আছে কি-না তল্লাশি চালায়।’

jagonews24

এই দোকান মালিক চরম হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘লকডাউনে কপাল পুড়ছে। দোকান মালিক হয়েও লুকিয়ে চোরের মতো বই বেচতে হয়।’

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আবদুস সালামের মতো আরও অনেকেই রাস্তায় সাধারণ মানুষের মতো দাঁড়িয়ে বইয়ের মার্কেটের সামনে দিয়ে কাউকে যেতে দেখলেই বই কিনবেন কি-না জিজ্ঞাসা করছেন।

jagonews24

এছাড়া এ মার্কেটের রাস্তার বিপরীত দিকে লেপ-তোষকের মার্কেটের প্রায় প্রতিটি দোকানের সামনে কর্মচারীদের বসে থাকতে দেখা যায়। আলাপকালে জানা যায়, তারাও দুদিন ধরে দু-এক ঘণ্টার জন্য দোকান খোলার চেষ্টা করছেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে পুলিশ দোকান খুলতে বাধা দিচ্ছে।

jagonews24

মঙ্গলবার সকালে দেখা গেল, হঠাৎ করে একজন পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য বাকুশাহ মার্কেটের ভেতরে দৌড়ে প্রবেশ করছেন। এরই মধ্যে দোকানের সাটার বন্ধ করার আওয়াজ ভেসে আসে। কিছুক্ষণ পর ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে ফিরে আসতে দেখা যায়। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘লকডাউনে দোকানপাট সম্পূর্ণরূপে বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও দুদিন ধরে কিছু দোকানি দোকান খুলে বেচাকেনার চেষ্টা করছেন।’ এ কারণে তারা দিনে কয়েকবার টহল দেন বলে জানান।

jagonews24

সারোয়ার আলম নামে এক কম্পিউটার ও ফটোস্ট্যাটের দোকান মালিক জানান, লকডাউনের কারণে তার দোকানের কর্মচারীরা ঢাকায় আটকা পড়েছেন। আয় না থাকায় তাদের বেতন দিতে না পারলেও খাবার এবং হাত খরচ দিতে হচ্ছে। তাই দোকান কর্মচারীরা দুদিন ধরে দোকান খুলে কিছু কাজ করছেন। কিন্তু পুলিশ দোকান খোলা পেলে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করছে। সেক্ষেত্রে দু-একশ টাকা ইনকামের জন্য দোকান খুলে দুই হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে বলে কর্মচারীদের দোকান খুলতে নিষেধ করেছেন তিনি।

এমইউ/এমআরআর/এএসএম