ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সিডরের দুঃসহ স্মৃতির ভয়াল ১৫ নভেম্বর আজ

প্রকাশিত: ০২:৫২ এএম, ১৫ নভেম্বর ২০১৪

আজ সেই ভয়াল ১৫ নভেম্বর। ২০০৭ সালের এই দিনে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ সামুদ্রিক ঝড় ‘সিডর’ আঘাত হানে বরিশাল, বরগুনাসহ দেশের উপকূলীয় এলাকায়।

সাত বছর পেরিয়ে গেলেও সেই স্মৃতি আজও ভুলতে পারেনি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। সহায় সম্বল ও স্বজন হারানো মানুষগুলো ফিরে যেতে পারেনি তাদের স্বাভাবিক জীবনে। একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই আর দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য আজও নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

সিডরের ছোবলে দক্ষিণের উপকূলীয় জেলাগুলো পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। প্রিয়জনকে হারিয়ে এখনো এই দিন আসলে বুক ফাটা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেকেই। সিডরের ক্ষতচিহ্ন বহন করে চলেছেন অনেকে।

তবে যারা সিডরের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন তাদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের যোদ্ধা বলে দাবি করেন। কেননা সিডরের পর উপকূলীয় অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আইলা ও নারগিস নামের ঘূর্ণিঝড়কে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছেন।

২০০৭ সালের ১৪ নভেম্বর সারা দেশের আকাশ ছিল মেঘলা। আবহাওয়াবিদরা প্রথমে ৫ নম্বর সংকেত দিতে থাকেন। রাতে তা ৮নং বিপদ সংকেত গিয়ে পৌছে। ১৫ নভেম্বর সকালে ঘোষণা করা হয় সিডর নামের ঘূর্ণিঝড় ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে বাংলাদেশের উপকূলে। দুপুর নাগাদ তা বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করবে। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত।

এই মহাবিপদ সংকেতের কথা শুনে আতংকিত মানুষ। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে বইছে দমকা হাওয়া। সচেতন কিছু মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে শুরু করলেও বেশির ভাগ মানুষ থেকে যায় নিজ বাড়িতে। রাত ১০ টার দিকে প্রবল বাতাসের সঙ্গে যুক্ত হল জলোচ্ছ্বাস। অবশেষে এটি বাংলাদেশে আঘাত হানে ১৫ নভেম্বর রাত ৯টায়।

নিমিষেই উড়ে গেল ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা। বঙ্গোপসাগরের সব পানি যেন যমদুত হয়ে ভাসিয়ে নিল হাজার হাজার মানুষ। মাত্র কয়েক মিনিটে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল গোটা এলাকা। পরের দিন দেখা গেল চারদিকে শুধুই ধ্বংসলীলা। উদ্ধার করা হল লাশের পর লাশ। দাফনের জায়গা নেই, রাস্তার পাশে গণকবর করে চাপা দেওয়া হল বহু হতভাগার লাশ। স্বজন আর সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেল উপকূল এলাকার কয়েক লাখ মানুষ।

সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩০ জেলার ২০০ উপজেলা। সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা বলা হয় ৩৩৬৩ জন। তবে বেসরকারীভাবে মৃতের সংখ্যা আরো বেশি।

সিডর স্মরণে দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ও উপজেলাগুলোতে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। বরিশালের বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে কালোব্যাজ ধারণ, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও ভিডিও প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।