চাকরি হারিয়ে পেটের দায়ে রিকশা চালাচ্ছেন জাকির
রাজধানীর নিউমার্কেট সংলগ্ন চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনে শনিবার পড়ন্ত বিকেলে যাত্রীর সন্ধান করছিলেন এক রিকশাচালক। বয়স প্রায় ২০ বছর। পরনে জিন্স প্যান্ট-গেঞ্জি। তার রিকশা চালানোর ধরন দেখে বোঝা যাচ্ছে তিনি একজন নতুন রিকশাচালক।
অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও যাত্রী না পেয়ে তাকে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পাশের এক রিকশাচালককে বলতে শোনা যায়, ‘যাত্রী এত কম হলে তো না খাইয়া মরতে হইবো।’
কৌতূহলবশত সামনে গিয়ে জাকির হোসেন নামের তরুণ এ রিকশাচালকের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, আগে তিনি নিউমার্কেটের একটি ফাস্টফুডের দোকানে চাকরি করতেন। পরিশ্রম তেমন ছিল না। বেতনের পাশাপাশি কাস্টমাররা খুশি হয়ে যা দিতেন তা দিয়ে ভালই আয় হতো। কিন্তু লকডাউনের কারণে মার্কেট বন্ধ থাকায় চাকরিটি আপাতত নেই।
আলাপকালে তিনি জানান, চাকরি না থাকায় বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে কিছুদিন ধরে রিকশা চালাতে শুরু করেছেন। চালক হিসেবে নতুন ও পরিশ্রম বেশি হওয়ায় এক বেলা রিকশা চালাতে পারেন।
জাকির হোসেন আরও জানান, রিকশা চালানোর চাইতে চাকরি অনেক ভালো ছিল। কিন্তু পেটের দায়ে তাকে রিকশা নিয়ে পথে নামতে হয়েছে। এবারের লকডাউনে গতবারের চেয়ে কড়াকড়ি হওয়ায় রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি কম, তাই রোজগারও কম। বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত মাত্র ২০০ টাকা আয় করেছেন। দিনের চেয়ে সন্ধ্যার পর রাস্তায় আরও কম সংখ্যক যাত্রী থাকে বলে তিনি জানায়।
সেখানে কথা হয় বগুড়ার রিকশাচালক আব্দুল হালিমের সঙ্গে। ঈদের ১০-১২ দিন আগে ঢাকায় এসেছেন। তিনি জানান, লকডাউনের কারণে গ্রামেও কাজকর্মের তেমন সুযোগ নেই। তাই ঢাকায় এসে রিকশা চালাচ্ছেন। তবে রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি কম হওয়ায় আয়-রোজগার কমে গেছে।
আব্দুল হালিম শনিবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৭০০ টাকা আয় করেছেন। এ টাকা থেকে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাওয়া এবং গ্যারেজের মালিককে ভাড়া দিয়ে হাতে তেমন কিছু থাকবে না। আগে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় থাকলেও করোনাকালে খরচ কমাতে পরিবারকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এখন রিকশার গ্যারেজে কোনভাবে রাত কাটান।
এমইউ/এমএইচআর/এমএস