ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

করোনা সংক্রমণ-মৃত্যু রোধে বিপিএমপিএ’র ১৪ দফা প্রস্তাব

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৮:৪২ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২১

দেশে ক্রমবর্ধমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের কাছে ১৪ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল প্রাকটিশনারস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমপিএ)।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বাংলাদেশের বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতি বিষয়ে জুম প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ প্রস্তাব করেন।

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিপিএমপিএ’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া ও মহাসচিব ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৬৭ জন চিকিৎসক মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৬৩ জন বেসরকারি চিকিৎসক এবং ৭৪ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চিকিৎসক।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিগত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বেশি মাত্রায় সংক্রমণ ছড়ানোর কারণে রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে- রোগীর মৃত্যুহার অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে ঢাকার চেয়ে গ্রামে ও মফস্বল শহরের শনাক্তের সংখ্যা অনেক বেশি। ঢাকায় যখন সংক্রমণ বেশি ছিল তখন রোগীর মৃত্যুর যা অনুপাত ছিল, বর্তমানে তা অনেক বেশি। এর অন্যতম কারণ দেরিতে হাসপাতালে যাওয়া। পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় কোনো ঘাটতি আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা দরকার।

রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যুহার কমানোর লক্ষ্যে বিপিএমপিএ’র নিম্নলিখিত ১৪ দফা প্রস্তাব করেন-

>> জেলা ও বিভাগীয় শহরের হাসপাতালগুলোকে প্রয়োজনে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তরিত করতে হবে;

>> বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণ বা নন-কোভিড রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে;

>> হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধি করার সুযোগ না থাকলে কমিউনিটি সেন্টার, স্কুল ও কলেজের ভবনকে অস্থায়ী হাসপাতালে রূপান্তর করে রোগীদের চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে;

>> রেমডেসিভিরসহ অন্যান্য ওষুধ নিয়মিতভাবে গরিব রোগীদের জন্য সরবরাহ করতে হবে;

>> জাতীয়ভাবে প্রণীত করোনা চিকিৎসা গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে কি-না তা মনিটর করতে হবে;

>> চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে, ৩৯তম বিসিএসে নন-ক্যাডার হিসেবে উত্তীর্ণ চিকিৎসকদের নিয়োগ দেয়া অত্যন্ত সহজ বিধায় তাদেরকে নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসক সঙ্কট দূর করা যায়;

>> চিকিৎসকসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে উৎসাহ প্রদান করতে হবে, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা নিয়ে টালবাহানা না করে যথাযথভাবে প্রদান করতে হবে। এ পর্যন্ত কোনো বেসরকারি চিকিৎসককে প্রণোদনার অর্থ দেয়া হয়নি যেটা খুবই দুঃখজনক বিষয়। বেসরকারি চিকিৎসকরাও করোনা রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে রোগাক্রান্ত হচ্ছেন এবং মারা যাচ্ছেন। তাদের পরিবারের কথা ভেবে তাদেরকেও সমানভাবে প্রণোদনা দিতে হবে;

>> যেসব রোগী বাসায় অক্সিজেন নেয় তারা মারাত্মক (সিভিয়ার) ক্যাটাগরির, এই ধরনের রোগী স্বল্প সময়ের মধ্যে মারা যেতে পারে। সেজন্য এই ধরনের রোগীকে বাসায় চিকিৎসা না দিয়ে আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া উত্তম। এজন্য জেলা পর্যায়ে আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করতে হবে;

>> যেসব মাইল্ড ও মোডারেট রোগীর বাসায় আইসোলেশনে থাকার ব্যবস্থা নেই তাদেরকে আইসোলেশন সেন্টারে রাখতে হবে;

>> সিপাপ-এর মাধ্যমে অক্সিজেন দেয়ার ব্যবস্থা করে অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা কমাতে হবে। কারণ সিপাপ যন্ত্রটি হাই ফ্লো নেজাল ক্যানুলার মতো কার্যকরী। এতে অক্সিজেন অনেক কম প্রয়োজন হয়;

>> কন্টাক্ট ট্রেসিং করে শনাক্তদের কোয়ারেন্টাইন করতে হবে। কন্টাক্ট ট্রেসিং কার্যক্রম বেশিরভাগ জেলায় এনজিও সংস্থা দিয়ে করানো হচ্ছে, যা নিয়মিত মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে হবে;

>> কন্টাক্ট ট্রেসিং, মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা নিশ্চিত করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য জনপ্রতিনিধি ও মসজিদ-মন্দিরের ইমাম-পুরোহিতকে সম্পৃক্ত করতে হবে;

>> লকডাউন যথাযথভাবে কার্যকর করতে হবে। অলি-গলিতে নজরদারি বাড়াতে হবে; এবং

>> জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আমলাদের দৌরাত্ম কমিয়ে সংক্রামক ব্যাধি আইন অনুযায়ী সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ক্ষমতাবান করতে হবে এবং জেলা পর্যায়ে বিএমএ ও বিপিএমপিএ নেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

এমইউ/এআরএ/এমএস