কারিগরি কমিটি পরামর্শ দিলে বিধিনিষেধ বাড়তে পারে
ঈদ উপলক্ষে চলমান বিধিনিষেধে শিথিলতার বিষয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আগামী ১৪ তারিখ পর্যন্ত বিধিনিষেধের সময়সীমা রয়েছে। আমাদের যেহেতু টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শক যারা আছেন তাদের পরামর্শে সরকার যদি মনে করে বিধিনিষেধ এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে সেটিও হতে পারে। সবকিছুই এখন পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। একটা কথা বারবার বলছি, আমাদের জীবনে ঈদ অনেকবার আসবে যদি আমরা বেঁচে থাকি। আমাদের এ অবস্থা থেকে বের হতেই বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে, সেটি সবার মানা উচিত।
ঈদের আগে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে গণপরিবহন চলবে কি-না এমন প্রশ্নে তিনি জানিয়েছেন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার মতো অবস্থায় আমরা এখনো পৌঁছতে পারিনি।
তিনি বলেন, বিধিনিষেধ চলমান থাকলে গণপরিবহন চলাচলের কোনো সুযোগ নেই। বিধিনিষেধ যদি প্রত্যাহার হয় সেটা কীভাবে প্রত্যাহার হবে, যদি সীমিত আকারে হয় সীমিত আকারেই চলবে। যদি পুরোপুরি উঠে যায় পুরোপুরিই চলবে। আমার মনে হয়, পরিস্থিতি যা আছে সেখানে আমরা পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছতে পারিনি।
রোববার (১১ জুলাই) বিকেলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নৌ-সেক্টরে করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিধিনিষেধের মধ্যেও ভিড় দেখা গেছে- তাদের নিভৃত করার জন্য কোনো উদ্যোগ নেবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফেরিতে মানুষ চলে যাচ্ছে, সেখানে ব্যাপক সমাগম হচ্ছে। আমাদের গণতান্ত্রিক দেশ, আমরা তো এই মানুষগুলোর ওপর আক্রমণাত্মক হতে পারি না। পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থানীয় প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার সেটিই নিচ্ছে। এর বাইরে আমাদের একটি বিষয়ই বলার আছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য এবং সরকারের বিধিনিষেধ মানার জন্য। এটাকে ঘিরে কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য না দেয়ার জন্য আমি সবার প্রতি আহ্বান জানাব।
তিনি বলেন, বিধিনিষেধে যেটা আছে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত গাড়ি পারপার করবে না। ফেরি চলবে অ্যাম্বুলেন্স, সরকারি কার্যক্রম, গণমাধ্যম এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ প্রয়োজনে। কিন্তু এ বিশেষ প্রয়োজনের জন্য আমাদের ফেরিগুলোতে যখন মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে, তাদের ওপর তো আমরা আক্রমণাত্মক হতে পারি না। সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, সচিবালয় থেকে সেই সিদ্ধান্ত দেয়া কঠিন। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।
ঈদে ফেরি চলাচলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ফেরি কখনো বন্ধ করিনি, ফেরি এখনো চালু আছে। বিশেষ ক্ষেত্রে এটাকে ব্যবহার করেছি। আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে, অ্যাম্বুলেন্স, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিশেষ প্রয়োজনে কিছু মুভমেন্ট দরকার হয় সেজন্য ফেরি সচল ছিল। আমরা কিন্তু সরকারের বিধিনিষেধের বিষয় কঠোর ছিলাম।
সর্বসাধারণকে বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছি। অনেকগুলো দেশে রেড জোনে আছি, দীর্ঘদিন এভাবে পড়ে থাকলে আমরা পিছিয়ে যাব। তাই সব নাগরিকের সচেতন হতে হবে। আমরা জানি ঘরে থাকা কঠিন, যুদ্ধক্ষেত্রেও মানুষ ঘরে থাকতে চায় না। কিন্তু এটাও একটা যুদ্ধ, এটাকে না মানায় কিন্তু পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়েছে। গ্রামে অনেকে করোনা টেস্ট করছে না, অনেকে মারা যাচ্ছেন আমরা জানতেই পারছি না। এটি এখন ছড়িয়ে গেছে। সেজন্য সরকারঘোষিত বিধিনিষেধ মেনে চললে আমরা তার সুফল পাব, গতবারও কিন্তু সেটি পেয়েছি।
আইএইচআর/এআরএ/এমকেএইচ