গুটিকয়েকের অনিয়মে জনপ্রতিনিধিদের অর্জন ম্লান হতে পারে না
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, গুটিকয়েক জনপ্রতিনিধির অনিয়ম এবং ভুলের কারণে ৬৫ হাজারের বেশি জনপ্রতিনিধির অর্জন ম্লান হতে পারে না। স্থানীয় সরকার অর্থাৎ জনপ্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানই পারে জনমানুষের আশা এবং প্রত্যাশা পূরণ করতে।
রোববার (২০ জুন) বিকেলে গভর্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত ‘করোনাকালে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা ও বাজেট ২০২১-২২’ শীর্ষক অনলাইন মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ৬৫ হাজারের বেশি জনপ্রতিনিধি আছে। তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত হলে এর জন্য সব জনপ্রতিনিধিকে দোষারোপ করা ঠিক নয়।
তিনি বলেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মহাসঙ্কটে সরকার দেশে লকডাউন ঘোষণার পর সব জনপ্রতিনিধি মাঠে-ময়দানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ সময় দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে দু-একজনের ভুলত্রুটি হয়েছে। সেটা নিতান্তই নগণ্য। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে আসে।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, জনমানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং জেলা পরিষদসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। শুধু শক্তিশালী করলেই হবে না, এর পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশে লকডাউন ঘোষণা করার পর থেকেই তিনি নিজেও প্রতিদিন অফিস করার পাশাপাশি স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। খোঁজ-খবর নিয়েছেন। তাদের পাশে থেকে শক্তি ও সাহস জুগিয়েছেন।
মো. তাজুল ইসলাম আশা প্রকাশ করে বলেন, সময়ের ব্যবধানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে জনপ্রতিনিধিরাই প্রমাণ করবে সত্যিকারের বাংলাদেশ এবং মানুষের পরিবর্তনের জন্য এ প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ।
জনপ্রতিনিধি এবং আমলাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে বলে অনেকে অভিযোগ করলেও এটি সঠিক নয় জানিয়ে তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি হোক আর আমলা হোক সবাই এদেশের সন্তান। সবার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একটাই আর তা হলো দেশ, মাটি এবং মানুষের উন্নয়ন। সবাই বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শ বুকে ধারণ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্ব এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাজেট বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে এবং কিছু কিছু খাতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য সরাসরি কেন্দ্রীয়ভাবে বাজেট বরাদ্দের নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি নেই। নিজেদের আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে স্বনির্ভর হয়ে উন্নয়নকাজে অবদান রাখা উচিত।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণেই দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তার নেতৃত্বে গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ।
দেশে করোনা টিকা প্রদানের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও আমাদের আগে টিকার ব্যবস্থা করতে পারেনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতায় বাংলাদেশ ভ্যাকসিন পেয়েছে।
গভর্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরামের চেয়ারপারসন ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত।
এছাড়া মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ঢাবি উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ শাহান অন্যদের মধ্যে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
আইএইচআর/ এমআরআর/এমকেএইচ