কবে থেকে দেয়া হবে ফাইজারের টিকা?
দুপুর আড়াইটা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তার মোবাইল বেজে উঠল। কল রিসিভ করে কুশল বিনিময় শেষে ওই কর্মকর্তাকে বলতে শোনা গেল— ‘ফাইজারের টিকা ঠিক কবে থেকে দেয়া হবে, তা এখনও নিশ্চিত বলতে পারছি না। সম্ভবত আগামী সপ্তাহে শুরু হতে পারে।’
এসময় ওই কর্মকর্তা জিজ্ঞাসা করেন— ‘আপনি কি রেজিষ্ট্রেশন করেছিলেন?’ ওপাশ থেকে নেতিবাচক উত্তর পেয়ে ওই কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়— ‘আমি আপনার টিকা নেয়ার ব্যবস্থা করার জন্য অবশ্যই চেষ্টা করব। দেখা যাক কী হয়।’
গত সোমবার (৩১ মে) রাতে কোভাক্স ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে আসা ফাইজার বায়োএনটেকের টিকা পেতে মঙ্গলবার (১ জুন) থেকে বিভিন্ন মহল জোর তদবির শুরু করেছে। বিএসএমএমইউ-এর শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে মন্ত্রী, সচিব, রাজনীতিবিদ ও চিকিৎসক নেতাদের কাছে এ টিকা নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে অসংখ্য মানুষ তদবির করছেন।
এখনও পর্যন্ত দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও ফাইজারের টিকা শুরু হলেই যেন টিকা নিতে পারেন, সেজন্য আগাম ব্যবস্থা করে রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। বিশেষ করে আগে যারা রেজিষ্ট্রেশন করেননি, তারা মরিয়া হয়ে ফাইজারের এ টিকার জন্য তদবির করছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার (২ জুন) দুপুরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে বক্তৃতকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও পরিচালক (সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেছেন, ‘আগে যারা টিকার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করেছেন, তারাই অগ্রাধিকার পাবেন।’
তিনি বলেন, ‘ফাইজারের এ টিকা কোথায় দেয়া হবে, কাদেরকে দেয়া হবে -এ নিয়ে জনগণের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। এই টিকা কোনোভাবেই যেন নষ্ট না হয়, যথাযথভাবে প্রয়োগ করা যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, কোন কোন প্রতিষ্ঠানে দেয়া হবে, প্রতিদিন কতজনকে দেয়া হবে; তা পরবর্তীতে গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানিয়ে দেয়া হবে।’
গত সোমবার রাতে ঢাকায় পৌঁছায় ফাইজারের লক্ষাধিক ডোজ টিকা। ফাইল ছবি
জানা গেছে, দেশে ফাইজার-বায়োএনটেকের লক্ষাধিক টিকা এলেও এখনো এগুলো ‘সক্রিয়’ নয়। এসব টিকা ‘নিস্ক্রিয়’। গত ৩১ মে রাতে কোভাক্সের মাধ্যমে আসা এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা মহাখালীর ইপিআই সেন্টারে বিশেষ তাপমাত্রার কোল্ড স্টোরেজে (মাইনাস ৭০-৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) সংরক্ষণ করা হয়েছে।
ফাইজারের এসব টিকা ‘সক্রিয় টিকায়’ রূপান্তর করতে কোভাক্স থেকে আগামী ৭ জুন এক ধরনের ডায়ালোটেড ফ্যাসিলিটি (মিশ্রণ করার দ্রব্য) এসে পৌঁছাবে। ওই ফ্যাসিলিটি পৌঁছানোর পর অন্যান্য সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে পরবর্তী ৭-১০ দিনের মধ্যে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হবে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম।
ফলে ৭ জুন টিকা ‘সক্রিয়’ করার পর ১৪-১৭ জুনের মধ্যে ফাইজারের টিকাদান প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে বলে জানা গেছে।
এমইউ/এএএইচ/এএসএম