সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বিশেষ নজর : জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন শনাক্ত হওয়ায় সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কারিগরি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সীমান্তের বাকি জেলাগুলোতে বিধিনিষেধ দেয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
রোববার (৩০ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা জানান। চলমান লকডাউন (বিধিনিষেধ) আগামী ৬ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির বিষয়ে ব্রিফিং করেন তিনি।
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ ও কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আরও এক সপ্তাহের জন্য বিধিনিষেধ চলমান থাকবে। আমরা চাচ্ছি সংক্রমণটাকে ৫ শতাংশের কাছাকাছি নিয়ে আসতে। ৫ শতাংশে নেমে আসলে বলা হয় স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি আছে, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা নয়। আমরা সেই রকম অবস্থায় দিকে নিতে চাই। মানুষ যথেষ্ট সাড়া দিচ্ছে। প্রত্যেকে সচেতন হয়েছে, মানুষ অপ্রয়োজনে বাইরে আসছে না। এটা একটা ভাল লক্ষণ। এক্ষেত্রে আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি।’
‘ইতোমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্থানীয়ভাবে লকডাউন দিয়েছি। ভারতের বিষয়টির আশঙ্কা থেকেই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সেটা আমরা করছি। সীমান্তবর্তী পাঁচটি জেলার স্থানীয়ভাবে বিধিনিষেধ দেয়ার বিষয়ে প্রস্তাব এসেছে, আমরা সেটি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি। সেই বিষয়ে আমরা হয়তো জানাবো, কী করা যেতে পারে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে সংক্রমণ বেড়েছে। সংক্রামক ব্যাধি নির্মূল আইনের আলোকে কোথাও সংক্রমণ বাড়লে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে সুপারিশ করতে পারে, তারা সেটা পরিস্থিতি অনুযায়ী অনুমোদন দেবে।’
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যেখানে সংক্রমণ বেশি ছিল সেখানে কমে গেছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর ওপর আমরা বিশেষ নজর রেখেছি। যদি সেখানে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, ওই জায়গাগুলোতে চলাফেরার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারব। বিষয়গুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আপাতত স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি বুঝে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, যশোর, নাটোর ও সাতক্ষীরার বিষয়টি আমরা একটু বেশি দেখছি। হয়তো সিদ্ধান্ত আসবে, কীভাবে এটা করা যায়। তবে আমরা চাইব, যে জায়গাটিতে স্পেসিফিক্যালি (নির্দিষ্টভাবে) আক্রান্ত, সেখানে শনাক্ত করার চেষ্টা করব। এমনও হতে পারে পুরো সাতক্ষীরা নয়, যে স্থানটিতে বেশি সংক্রমণ সেই জায়গাগুলোতে করার চেষ্টা করব, যাতে মানুষের জীবন-জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সরকার সেই বিষয়টি খেয়াল রাখছে।’
বলা হচ্ছে, সংক্রমণ ৫ শতাংশ স্বাভাবিক, এখন সংক্রমণ কত শতাংশ— জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ৯ শতাংশের বেশি, ৮ শতাংশের বেশি এমন আছে।’
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ রাখার নিষেধাজ্ঞা আরও ২ সপ্তাহ বহাল থাকবে। ভারতের সঙ্গে চলাচলের ৩৬টি সীমান্ত পয়েন্ট রয়েছে।’
লকডাউন ধাপে ধাপে বাড়ছে, সরকারের এক্সিট প্ল্যান কী, একবারে এক্সিট করা নাকি জেলায় জেলায় লকডাউন দেয়া—এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের তো সেক্রিফাইস (ছাড় দেয়া) করতে হচ্ছে। এটা আমাদের বড় রকমের একটা সেক্রিফাইস করতে হচ্ছে। টোটালি যদি আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসতে পারতাম...কিন্তু আমরা চাচ্ছি ৫ শতাংশ আসার পর...আমরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজকর্মগুলো করতে পারি, যতটুকু সম্ভব। স্কুল, কলেজ, অফিস আদালত বন্ধ রেখেছি। তাতে করে মানুষের চলাফেরায় বাধ্যবাধকতাটা নেই।’
আরএমএম/এমএসএইচ/জেআইএম