‘স্যার, এই পুলিশদের চাকরি যেন না যায়’
প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি চলতি মাসের ২ তারিখ পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি বার্তা পাঠান। বার্তায় স্থানীয় এক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জসহ এক কর্মকর্তার নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ করেন।
এরপর তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে জেলা পুলিশ। তবে এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের চাকরি যেন না যায় সেই আর্জিও করেন অভিযোগকারী ব্যক্তি।
বুধবার (১৯ মে) দুপুরে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা এ তথ্য জানান।
লক্ষ্মীপুর থেকে পুলিশকে পাঠানো বার্তায় ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেন, কিছুদিন ধরে তিনি লক্ষ্য করেছেন স্থানীয় ফাঁড়ির ইনচার্জ ও তার সহযোগী অপর এক কর্মকর্তা সাধারণ মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করছেন। তিনি নিজেও একবার তাদের হয়রানির শিকার হয়েছেন। অভিযোগের সাপেক্ষে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি। তিনি দাবি করেন, গোপনে বিষয়টি তদন্ত করলে তার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।
বার্তা পাঠিয়ে ওই ব্যক্তি তার নিরাপত্তার বিষয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন। যদিও পুলিশ সদরদফতর থেকে তার নিরাপত্তার বিষয়ে পূর্ণ আশ্বাস দেয়া হয়। এরপর ওই ব্যক্তির বার্তাটি লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপার ড. এএইচএম কামরুজ্জামানকে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে একটি গোপন তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানায় পুলিশের সদরদফতর।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সাদা পোশাকে পুলিশের একটি টিমকে ওই এলাকায় নিয়োজিত করেন। সাদা পোশাকে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে তিনি অভিযোগের সত্যতা পান এবং তাৎক্ষণিকভাবে ফাঁড়ির ইনচার্জসহ অপর এক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। তাদেরকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। উপযুক্ত প্রমাণাদি ও তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পর অভিযোগকারী ব্যক্তি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে লেখেন, ‘আপনাদের এবং লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের পেশাদারিত্বে আমি অনেক সন্তুষ্ট। আপনাদের সহযোগিতার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আপনাদের মাধ্যমে আমি লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ থেকে যে সহযোগিতা পেয়েছি তার জন্য পুলিশ বাহিনীর কাছে আমার প্রত্যাশা বহুগুণ বেড়ে গেল। তবে স্যার, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাদের শাস্তি যাতে চাকরিচ্যুতি না হয়, এটা আমার বিনীত অনুরোধ। কারণ স্যার, অপরাধ উনি করেছেন, উনার পরিবার তো করেনি। যাতে ওরা এই কাজগুলো করার আগে দ্বিতীয়বার ভাবে, এটাই আমার অভিযোগ দেয়ার উদ্দেশ ছিল।’
টিটি/জেডএইচ/এএসএম