‘মামা কই যাবেন, গাড়ি আছে’
আর মাত্র দুই দিন পরই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর ঈদের আগ মুহূর্তে পোশাক ও শিল্পকারখানায় ইতোমধ্যে ছুটি দেয়া শুরু হয়েছে। আজ বাকি সব কারখানা ঈদের বকেয়া পরিশোধ করেই বন্ধ হতে পারে।
এদিকে বিভিন্ন কারখানায় ছুটি পেয়ে মালিকপক্ষ ও সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাড়ি ছুটছেন রাজধানীবাসী। আর এ সুযোগকে কাজে লাগাতে বাস কাউন্টারগুলো বিকল্প পরিবহণের ব্যবস্থা রেখেছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তিন গুণ বেশি টাকা দিলেই মিলছে টিকিট। তারা নির্দিষ্ট গন্তব্যের জন্য রেডি করে রেখেছেন মাইক্রোবাস-পিকআপ।
অন্যদিকে জরুরি পণ্যপরিবহণকারী ট্রাকগুলোও সুযোগ বুঝে ঘরমুখো মানুষকে তুলে নিচ্ছে। সেখানেও ৫০০ টাকার বাস ভাড়ার সমান গন্তব্যে যেতে লাগছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। রাজধানী থেকে পণ্য ডেলিভারি দিয়েই যাত্রী ভর্তি করে তারা ফিরছেন নিজ এলাকায়। মঙ্গলবার (১১ মে) রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী, ফকিরাপুল, যাত্রাবাড়ী এলাকা ঘরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
এসব এলাকায় সাহরির পর থেকেই যাত্রী পরিবহন চলছে বাসের বিকল্প এসব পরিবহণে। বাস কাউন্টারগুলোর সামনে সেখানকার কর্মরতরা দাঁড়িয়ে সাধারণ পথচারীদের হাঁক-ডাক দিচ্ছেন ‘মামা, কই যাবেন, গাড়ি আছে’ ইত্যাদি বলে। সাধারণ সময়ের চেয়ে তিনগুণ বেশি টাকা দিলেই আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা এসব পরিবহণে যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ফকিরাপুল কাউন্টারে কর্মরত জিল্লু নামে একজন বলেন, ‘মামা, এখন বাস চলছে না। আমাদেরও পরিবার আছে, সরকারি কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না, সংসার চলে না। এখন ঘরে ফেরা মানুষকে একটু সহযোগিতা করছি বিনিময়ে সামান্য কিছু অর্থ পাচ্ছি যা দিয়ে ঈদটা কাটানো যাবে। আবার যারা বাড়ি ফিরছেন তারাও পরিবারের সাথে আনন্দে ঈদ কাটাতে পারবেন।’
নাটোর থেকে পিকআপযোগে রাজধানীতে কাঁচামাল নিয়ে এসেছিলেন এক চালক এখন তিনি গাবতলী থেকে বেশ কয়েকজন যাত্রী নিয়ে গ্রামের পথে রওনা হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘গাড়িটি খালি যাচ্ছে, এখন কিছু যাত্রী পেয়ে বাড়তি ইনকাম (আয়) হলো। এই ঈদে যেটা পরিবারের জন্য ভালো সহায়ক হবে।’
রফিক নামে একজন রাজধানী থেকে যাবেন চট্টগ্রাম।তিনি বলেন, ‘সরকার সব কিছু খুলে দিয়েছে। মার্কেট খোলা, কেনাকাটা করলাম এগুলো কী করবো? বাস চলছে না, পরিবহন খুলে দিতে আপত্তি কোথায়? যেখানে সবকিছু চলছে। এগুলো (ঈদের কেনাকাটা) পরিবারকে দিতেই গ্রামের বাড়ি (চট্টগ্রাম) যাচ্ছি। গ্রামে যেতে ২২০০ টাকা লাগছে, তার চেয়ে বড় খুশির বিষয় পরিবারের সাথে ঈদ কাটাতে পারবো।’
ইএআর/এমআরআর/জেআইএম