ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বাজেটে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:১৯ পিএম, ০৯ মে ২০২১

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন শ্রমিকদের জন্য আসন্ন বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পরিবহন শ্রমিকদের রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করাসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

রোববার (৯ মে) বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সংগঠনটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক মো. ইনসুর আলী।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, লকডাউনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। পরিবহন মালিকরা শ্রমিকদের কোনো দায়িত্ব নিচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অনুদান পাওয়া যাচ্ছে না।

ইনসুর আলী বলেন, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন গতকাল একটি সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেখানে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের কোনো দাবি করেননি তারা। তারা মালিকদের জন্য প্রণোদনা দাবি করেছেন, আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। যিনি আন্দোলনের হুমকি দিলেন তিনি আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা, সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি শাজাহান খান। আমরা মনে করি এই সংগঠনটি সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সরকার ঘোষিত মজুরি প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়নে তারা কোনো কিছুই করেনি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন নাম হলেও তারা মূলত মালিকদের সমিতি। ফেডারেশনের নেতারা মালিক সমিতির সঙ্গে আঁতাত করে শ্রম আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজির নির্দেশিকা তৈরি করেছে। তারা ১০ লাখ গাড়ি থেকে দৈনিক গাড়িপ্রতি ৫০ টাকা হারে ৫ কোটি টাকা, মাসে দেড়শ কোটি টাকা ও বছরে আঠারোশো কোটি টাকা চাঁদা আদায় করছে।

ইনসুর আলী বলেন, তারা সাংবাদিক সম্মেলনে স্বীকার করেছে যে, তারা চাঁদাবাজির নির্দেশিকা তৈরি করে সব জেলায় পাঠিয়েছে। সেই অনুযায়ী চাঁদা আদায় করছে তারা। কোন আইনের বলে তারা এই নির্দেশিকা তৈরি করেছে, এটা আমাদের জিজ্ঞাসা। তারা সরকারের সঙ্গে প্রতারণা করছে। শ্রমিকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। শুধু শ্রম আাইনের বিরোধিতা করেছে তাই নয়, তারা সড়ক পরিবহন আইনের বিরোধিতা করেছে। একটি আইন যখন গেজেট হিসেবে প্রকাশিত হয়, তখন বাস্তবায়ন করা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের আইনগত নৈতিক দায়িত্ব। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এই আইনে বিরোধিতা করে রাষ্ট্রদ্রোহিতায় লিপ্ত হয়েছে বলে আমরা মনে করি।

ঈদের দিন কর্মসূচি দিয়ে তারা শ্রমিকদের বিপদে ফেলার চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, করোনাকালীন ঈদের দিন টার্মিনালে কর্মসূচি শ্রমিকদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলবে।

সড়ক পরিবহন ফেডারেশনের কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করে ইনসুর আলী বলেন, যেকোনো সমস্যা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত। অবিলম্বে এই কর্মসূচি থেকে সরে আসতে ফেডারেশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সংগঠনটির অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- পরিবহন খাতের প্রতিষ্ঠিত চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা, ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়া, শ্রম আইন অনুযায়ী প্রত্যেক পরিবহন শ্রমিককে নিয়োগপত্র প্রদান করা ইত্যাদি।

সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি হানিফ মো. খোকন বলেন, মালিক শ্রমিকের ঐক্য পরিষদ শ্রমিকদের স্বার্থে কোনো কাজ করে না। করোনাকালে গত বছরে পরিবহন খাতে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে আমরা বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা চেয়েছি। যাতে করে রেজিস্ট্রিকৃত ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রম অধিদফতরের মাধ্যমে এই টাকাটা ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিককে দিতে পারি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক মোশারাফ হোসেন ও দফতর সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।

এসএম/এমএসএইচ/এমকেএইচ