ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

উচ্ছেদের পর ফের সুন্দরবন মার্কেটে শতাধিক অবৈধ দোকান নির্মাণ

মুসা আহমেদ | প্রকাশিত: ০৯:১৮ এএম, ০৮ মে ২০২১

রাজধানীর গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটে ফের নকশাবহির্ভূত শতাধিক দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। এসব দোকান মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভাড়া এবং বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কোনো পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।

ডিএসসিসির মালিকানাধীন ওই মার্কেটে গত বছরের ডিসেম্বরে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে তখন প্রায় সাড়ে ৭০০ নকশাবহির্ভূত দোকান ভেঙে দেয়া হয়েছিল। এর মাসখানেক পরেই ধীরে ধীরে মার্কেটটিতে নকশাবহির্ভূত দোকান তৈরির কাজ শুরু হয়। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের মধ্যে যখন মার্কেট বন্ধ ছিল, তখন পুরোদমে কাজ চলে।

মার্কেটটির বৈধ দোকানিরা জানান, এই মার্কেটে এখন অবৈধ দোকান তৈরির মহোৎসব চলছে। বিষয়টি সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে তারা কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দোকানি অভিযোগ করেন, এই কাজে প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্যবসায়ী ফিরোজ আলম। তিনি ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিনের অনুসারী বলে পরিচিত। এছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর বিরুদ্ধেও এ কর্মকাণ্ডে পরোক্ষভাবে সহযোগিতার অভিযোগ করেন ওই দোকানিরা।

Market-3.jpg

উচ্ছেদের মাসখানেক পরেই মার্কেটটিতে নকশাবহির্ভূত দোকান তৈরির কাজ শুরু হয়

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আবু আহমেদ মন্নাফী। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার নাম ভাঙিয়ে কেউ হয়তো এই অবৈধ কাজ করছে। ডিএসসিসিকে তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে ব্যবসায়ী ফিরোজ আহমেদ ও যুবলীগ নেতা শাহাবুদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

গত ৫ মে সরেজমিনে দেখা যায়, মার্কেটের নিচ তলা থেকে চারতলা পর্যন্ত শতাধিক দোকান নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। কিছু দোকানের কাজ অর্ধেক করে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি দোকানে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। পাঁচতলায় দোকান তৈরি করা না হলেও তারা তা গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করছেন। তবে পার্কিংয়ে যেসব দোকান ভেঙে ফেলা হয়েছিল, সেখানে নতুন করে কোনো দোকান নির্মাণ করা হয়নি।

সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের দোকানিরা জানান, উচ্ছেদ অভিযানের আগে ভুয়া কাগজ তৈরি করে যারা নকশাবহির্ভূত দোকান তৈরি করে ব্যবসা করছিলেন, তারাই এখন নতুন করে দোকান তৈরি করে দখল নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে প্রতিটি দোকান থেকে গড়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট কারবারিকে দিতে হচ্ছে। এই হিসেবে ১০০ দোকান থেকে এক কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।

Market-3.jpg

পাঁচতলায় দোকান তৈরি না হলেও করা হয়েছে গোডাউন

ডিএসসিসির বাজার শাখার প্রকৌশলীরা জানান, ওই দোকানগুলো মার্কেটের হাঁটাচলার জায়গা, বারান্দা, টয়লেট, লিফটের জায়গায় তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা দুইবার ওই মার্কেট পরিদর্শন করেছেন। উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রতিবেদন দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত উচ্ছেদের কোনো উদ্যোগ নেই।

ডিএসসিসি মালিকানাধীন স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দেখভাল করে সংস্থাটির সম্পত্তি বিভাগ। জানতে চাইলে প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওই মার্কেটে নতুন করে যেসব দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে, সেগুলো ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে উচ্চতর অভিযান চালাতে গেলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশ সদস্যের দরকার। চলমান লকডাউনে সরকারি বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পুলিশ ব্যস্ত রয়েছে। লকডাউনের পরপরই ওই মার্কেটে অভিযান চালানো হবে।’

এমএমএ/এআরএ/এইচএ/এমএস