‘স্যার থু থু ফেলতে মাস্ক খুলছিলাম, তখন আপনি আইয়া পড়ছেন’
‘বিশ্বাস করেন স্যার, এইমাত্র থুথু ফেলতে মাস্কটা একটু খুলেছিলাম। আর আপনি আইয়া পড়ছেন। আপনারে দেইখ্যা তাড়াহুড়া করে মাস্ক পরছি। এই বারের মতো মাফ কইরা দ্যান, জরিমানা কইরেন না।’
রাজধানীর নিউমার্কেটের ফুটপাতের এক দোকানি মঙ্গলবার (৪ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডা. সঞ্জিব দাসের কাছে ঠিক এভাবেই মাস্ক থুতনির নিচে নামিয়ে রাখার ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন।
এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট তাকে বলেন, করোনার সংক্রমণরোধে মাস্কই এখন সবচেয়ে বড় টিকা। আপনি যেহেতু ভুল স্বীকার করেছেন, তাই ১০০ টাকা জরিমানা করা হলো। সঙ্গে সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে থাকা সহকারী নাম-ঠিকানা লিখে ১০০ টাকার স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে জরিমানা আদায় করেন।
করোনার সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার (৪ মে) দুপুর ১২টা থেকে ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জিব দাসের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়। নিউমার্কেটের ১ নম্বর গেটে প্রবেশপথ থেকেই অভিযান শুরুর সময় দুজনকে ১০০ ও ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
তারা দুজনেই মার্কেটের দোকান কর্মচারী এবং মাস্ক ছাড়াই মার্কেটে প্রবেশ করছিলেন। তবে তাদের দাবি মাস্ক পরেই তারা এসেছিলেন। মাস্ক গরমে ভিজে যাওয়ায় মার্কেটের সামনে রিকশা থেকে নেমে নতুন মাস্ক কিনতে লোক খুঁজছিলেন। না পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করেই ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পড়ে যান।
এ সময় মার্কেটে আসা ক্রেতাদের অধিকাংশকেই মাস্ক পরিধান করতে দেখা গেছে। মার্কেটের নিরাপত্তারক্ষীরাও ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখে হ্যান্ড মাইকযোগে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বার বার ঘোষণা দিচ্ছিলেন।
ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে ফুটপাত ও দোকানের অধিকাংশ বিক্রেতা মুখে মাস্ক পরেন। ম্যাজিস্ট্রেট চলার পথে প্রতিটি দোকানে নজরদারি করতে থাকেন। এ সময় এশিয়ান জুয়েলার্স নামে একটি দোকানে তার নজর পড়ে। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সুসজ্জিত জুয়েলারির এ দোকানে ভেতরে কাউন্টারে একজন মাস্ক নিচে নামিয়ে রেখে বসেছিলেন।
ম্যাজিস্ট্রেট দেখে তিনি মাস্ক পরেন। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট ভেতরে প্রবেশ করে বলেন, মাস্ক থেকেও না পরে থাকা আর মাস্ক না থাকা একই কথা। মাস্ক পরিধান করে থাকলে নিজেই করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেন, অন্যরাও রক্ষা পাবেন। এ সময় তিনি শ্বাসকষ্টের রোগী এবং দোকানে ওই মুহূর্তে ক্রেতা না থাকায় মাস্ক নামিয়ে রেখেছিলেন বলে জানান। মাস্ক না পরার অপরাধে তাকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
একইভাবে জুতার দোকানের এক কর্মচারী ম্যাজিস্ট্রেট দেখে মাস্ক পরায় তাকে প্রথমে ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়। দোকান কর্মচালী অনুরোধ করলে তা কমিয়ে ২০০ টাকা করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ম্যাজিস্ট্রেট ডা. সঞ্জিব দাস জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, অভিযানের মুখ্য উদ্দেশ্য জরিমানা করা নয়, মাস্ক পরিধানসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে ক্রেতা ও বিক্রেতাকে সচেতন করা। তিনি বলেন, অভিযানকালে অধিকাংশ ক্রেতা ও বিক্রেতাকে মাস্ক পরিধান করতে দেখেছি। ঈদের আগ পর্যন্ত এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এমইউ/এএএইচ/এমএস
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ তথ্য স্থানান্তরের কারণে ধীরগতি, দ্রুতই সমাধান
- ২ সাবেক অতিরিক্ত সচিবের গাড়ি থেকে চুরি হওয়া ১০ লাখ টাকা উদ্ধার
- ৩ বিসিএসসহ সব সরকারি চাকরির আবেদন ফি ২০০ টাকা, প্রজ্ঞাপন জারি
- ৪ নিজের ‘দুর্নীতির অভিযোগ’ নিয়ে যা বললেন দুদকের নতুন চেয়ারম্যান
- ৫ বিআরটিএ পরিচালকের সঙ্গে ট্রান্সপোর্ট রিপোর্টার্স সদস্যদের সাক্ষাৎ