মাস্ক ব্যবহারে প্রচারণা আছে, প্রয়োগে পদক্ষেপ নেই!
রাজধানীর শাহবাগে চার রাস্তার মোড়ের সামনে সোমবার মধ্য দুপুরে রিকশা থামিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন এক মধ্যবয়সী রিকশাচালক। প্রখর রোদের তাপে তার শরীর থেকে দর দর করে ঘাম ঝরছিল।
রিকশাচালক যেখানে রিকশাটি রেখে দাঁড়িয়েছিলেন, ঠিক তার পাশেই বিশাল সাইনবোর্ডে লেখা- ‘করোনা থেকে বাঁচতে ভাই, স্বাস্থ্যবিধির বিকল্প না’, ‘মাস্ক পড়ুন, জনসমাগম এড়িয়ে চলুন।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার আসাদুজ্জামান আসাদের পক্ষ থেকে শাহবাগ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে বেশ কয়েকটি স্থানে জনসচেতনতামূলক এ সাইনবোর্ড শোভা পাচ্ছে। এমন উদ্যোগ সকলের নজর কাড়লেও মুখে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করার মত কাউকেই দেখা যায়নি।
এদিকে রাজধানীসহ সারাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকাতে লকডাউন চলছে। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। মন্ত্রিপরিষদের এক সিদ্ধান্তে আজ ফের লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি করে ১৬ মে করা হয়েছে। এছাড়া, আগামী ৬ মে থেকে জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলবে। তবে আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। এদিকে করোনা সংক্রমণরোধে সরকারিভাবে এতদিন টিকা দেয়া হলেও বর্তমানে টিকার মজুত ফুরিয়ে আসছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র এবং সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম সোমবার (৩ মে) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সভায় জানান, চলতি মাসে চীন ও রাশিয়া থেকে টিকা আসবে।
তবে তিনি বলেন, টিকা আসুক আর না আসুক, হাতে টিকা না পাওয়া পর্যন্ত সার্বক্ষণিক ও সঠিক উপায়ে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই এ মুহূর্তে সহজলভ্য টিকা।
এদিকে সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এখনও পর্যন্ত সবার মুখে মাস্ক নেই। গত দু-তিনদিন যাবত করোনার সংক্রমণ কমে যাওয়ায় মানুষ মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও জনসমাগম এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখাচ্ছে। মার্কেট ও শপিংমল খুলে দেয়ায় সেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাবেশ ঘটছে। কিন্তু অনেকেই মাস্ক পরিধান বা ভিড় এড়িয়ে চলছেন না । এ উদাসীনতার কারণে করোনার তৃতীয় ঢেউয়েরও আশঙ্কা করছেন অনেকে।
এর আগে গত ৫ এপ্রিলে লকডাউনের প্রথম দিকে রাস্তায় ব্যারিকেড বসিয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণসহ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাজিস্ট্রেটরা। মাস্ক না পরায় অনেককে জরিমানাও করা হয়। কিন্তু বর্তমানে এমনটি আর চোখে পড়ছে না।
স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে আবার তৃতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে পারে।
এমইউ/জেডএইচ/জেআইএম