ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বিশেষ ফ্লাইট-স্থলপথে আগত প্রবাসীদের কোয়ারেন্টাইন হচ্ছে যেভাবে

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল | প্রকাশিত: ০৯:০১ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০২১

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক সব রুটে ফ্লাইট চলাচল তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া প্রবাসী কর্মী ও দেশে ছুটিতে এসে কিংবা নতুন ভিসা নিয়ে যাচ্ছেন এমন প্রবাসী কর্মী ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কথা বিবেচনা করে বিশেষ বিবেচনায় বর্তমানে সাতটি দেশে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। দেশ সাতটি হলো- সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, সিঙ্গাপুর, চীন কুয়েত ও বাহরাইন।

প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আকাশপথে আগে থেকেই ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। সম্প্রতি দুই সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশের সব সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিশেষ বিবেচনায় কোয়ারেন্টাইনে থাকা সাপেক্ষে সীমিত আকারে স্থলপথে কিছু সংখ্যক বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিক নিজ নিজ দেশে ফিরছেন।

প্রবাসী অনেকের মনে প্রশ্ন দেশে ফিরলে তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে কোথায় কতদিন থাকতে হবে। অনেকেরই এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম শাহ আমানত ও সিলেট ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে কোয়ারেন্টাইনে থাকা নিয়ে ঝামেলায় পড়েন।

সর্বশেষ গত ২২ এপ্রিল রাতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যাদের করোনার দুটি ভ্যাকসিন নেয়া আছে এবং করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট আছে, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা লাগবে না। তারা বাড়িতে গিয়ে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। স্থানীয় প্রশাসন তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করবে।

আর যাদের করোনা ভ্যাকসিনের একটি ডোজ নেয়া আছে এবং করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট রয়েছে, তাদের তিনদিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে। তাদের দেশে প্রবেশের পর করোনা টেস্ট করানো হবে। টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তারা বাকি ১১ দিন বাড়িতে গিয়ে কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, বর্তমানে রাজধানীতে সরকারি দুটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার (আশকোনা হাজি ক্যাম্প ও উত্তরা দিয়া বাড়ি) এবং বেসরকারি সংস্থা ব্রাকের একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হচ্ছে। এজন্য প্রবাসী কর্মীদের কোনো টাকা খরচ করতে হচ্ছে না।

পাশাপাশি যুক্তরাজ্যফেরত যাত্রীদের সরকারি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের বদলে সরকার নির্ধারিত যে ২৮টি হোটেলে নিজ খরচে থাকার সুযোগ ছিল, প্রবাসী কর্মীরা চাইলে সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে না থেকে সেসব হোটেলে তিনদিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে পারবেন।

পূর্বের সরকারি নির্দেশনায় বলা আছে, করোনাকালে বিশেষ হ্রাস করা মূল্যে তিনবেলা মানসম্মত খাবারসহ আবাসন সুবিধা দেয়ার শর্তে নিম্নোক্ত ২৮টি হোটেলকে নির্দেশক্রমে অনুমোদন দেয়া হলো। হোটলেগুলো হলো- ইন্টারকন্টিনেন্টাল, বেঙ্গল ক্যানারি পার্ক লিমিটেড, সিক্স সিজন্স হোটেল, ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন, হোটেল প্লাটিনাম, হোটেল গার্ডেন রেসিডেন্স, হোটেল বেঙ্গল ইন, স্কাইলিংক লিমিটেড, হোটেল স্প্রিং হিল অ্যাপার্টমেন্ট, রয়্যাল পার্ক রেসিডেন্স হোটেল, প্লাটিনাম রেসিডেন্স, হোটেল দি রহমানিয়া ইন্টারন্যাশনাল, গ্যালেসিয়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড, ওয়েস্ট পার্ক ইন রেসিডেন্স, ন্যাসেন্ট গার্ডেনিয়া, এনকোরেজ দি রেসিডেন্স, ব্লু কাস্টেল হোটেল, রাফ্রেসিয়া সার্ভিসড অ্যাপার্টমেন্ট, লেকসোর হোটেল, দি ওয়ে ঢাকা, ডরিন হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট (সাবেক ফোর পয়েন্ট বাই শেরাটন), ন্যাসেন্ট গার্ডেনিয়া রেসিডেন্স, হলিডে এক্সপ্রেস, রেনেসা ঢাকা গুলশান হোটেল, গ্রিন হাউজ, প্রিয় নিবাস স্টাইলিস রেসিডেন্টাইল হোটেল এবং হোটেল অ্যারিস্টোক্রেট ইন লি.।

এতে আরও বলা হয়েছে, হোটেলে অবস্থানকালীন বিদেশফেরত যাত্রীদের অবশ্যই সকল স্বাস্থ্যবিধি এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের সব বিধি-বিধান কঠোরভাবে মেনে চলার বিষয়টি হোটেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করবে। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের কোনো বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করা হলে বা মেনে না চললে সংশ্লিষ্ট হোটেলের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্প্রতি ভারতে করোনার সংক্রমণ আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই সপ্তাহের জন্য সকল বন্দরে আসা যাওয়া বন্ধের নির্দেশনা জারি হয়। এর ফলে অনেক বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিক আটকা পড়েন। তাদের জন্য বিশেষ বিবেচনায় করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে আসাসহ বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন মানতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্থলবন্দরের জেলা প্রশাসকের অধীনে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে তাদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকার শর্তে বিশেষ বিবেচনায় উভয় দেশে ফিরতে দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এমইউ/ইএ/এমএস