কোঁচো সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী মমতাজ
রাজশাহী জেলার মনপুরা উপজেলার মহসীনকুন্ডি গ্রামের বাসিন্দা শাহআলম এবং তার স্ত্রী মমতাজ। দুঃখ-দুর্দশা দূর করে শাহআলম ও মমতাজ দম্পত্তির জীবনের আর্থিক স্বচ্ছলতা এনে দিয়েছে কেঁচো বা ভার্মি কমপোস্ট সার।
শনিবার রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে ব্যাংকিং মেলার শেষ দিনে উদ্যোক্তা দম্পতি সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানা যায়।
মমতাজ বেগম জানান, মাত্র ১৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করে এখন তারা পাঁচ লাখ টাকার মালিক। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বিনিয়োগের মূলধন ২৫ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। শুধু নিজের কর্মসংস্থান নয় অন্যদেরও কাজের সুযোগ করে দিয়েছ এ দম্পতি। সরকারের আর্থিক সহযোগিতা পেলে তারা দৈনিক ৪শ মণ পর্যন্ত এই সার উৎপাদন করতে পারবেন বলেও জাগো নিউজকে জানান ।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে আমাদের খামারে ৪ জন কর্মরত আছেন। যাদের মাসিক ৬ হাজার টাকা বেতন দেয়া হয়। এই সার উৎপাদনে আমরা আমাদের জীবনের খারাপ দিনগুলোকে পেছনে ফেলে এসেছি। এই সার উৎপাদন এবং বাজারজাত করণের মাধ্যমে আমরা আর্থিকভাবে এখন স্বচ্ছল।
ভার্মি কমপোস্ট সার সম্পর্কে প্রথমে সংবাদ পত্রের মাধ্যমে জেনে মানিকগঞ্জ কৃষি অফিসে এই সার উৎপাদন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নেন। তারপর তারা এই সার উৎপাদন করা শুরু করেন। এই সার উৎপাদনে প্রয়োজন হয়েছে গোবর এবং কেঁচো। যা পরিবেশ বান্ধব, মাটির ঊর্বরতা রক্ষায় খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
জানা যায়, প্রথমে নিজস্ব পুঁজি ১৫ হাজার টাকাসহ গতবছর নভেম্বর মাসে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ৫৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে এই সার উৎপাদন শুরু করেন। পরবর্তীতে তাদের ব্যবসার সম্প্রসারণে ব্যাংক আরো আর্থিক সহযোগিতা করে।
শাহ আলম আশা প্রকাশ করে বলেন, একমাসের মধ্যে প্রতিদিন চার মণ করে এই সার উৎপাদন করা সম্ভব হবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীসহ অনেক লোক প্রতিদিন আমাদের এই খামার পরিদর্শন করতে আসেন।
তিনি জানান, তারা একটি পরিকল্পনা করেছেন রাজশাহী জেলার প্রতিটি গ্রামে ১০ জন মহিলাকে এই সার উৎপাদন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করার। সরকারের আর্থিক সহযোগিতা পেলে তারা দৈনিক ৪শ মণ পর্যন্ত এই সার উৎপাদন করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আয়োজনে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া ৫ দিন ব্যাপি ব্যাংকিং মেলা চলবে আজ ২৮ নভেম্বর শনিবার পর্যন্ত। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে এবং সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।
মেলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছাড়াও দেশি-বিদেশি ৫৬টি ব্যাংক, ৬টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ৭টি আর্থিক সেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য মেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক শিক্ষা, টাকা জাদুঘর, বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস (টাকা তৈরির মেশিন), বিভিন্ন প্রকাশনা, স্মারক মুদ্রা ও নোট ক্রয়, জনসাধারণের জন্য সেবা ও অভিযোগ কেন্দ্র খোলা রয়েছে।
এসআই/এসকেডি/আরআইপি