সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্য কাঠমিস্ত্রির খাট
মানুষ প্রিয়জনের জন্য কত কিছুই না করে। প্রিয়জনকে খুশি করতে অসাধ্য সাধন করে কেউ কেউ। আবার কেউ জীবনের সব সুখ বিসর্জন দিয়ে ইতিহাস রচনা করে। তেমনি বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে তথ্য উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে দূর থেকে ভালোবেসে একটি বিলাসবহুল খাট তৈরি করেছেন টাঙ্গাইলের কাঠমিস্ত্রি হারুন-অর-রশিদ।
ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে এ খাটটি হারুন সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিজ হাতে উপহার দিতে চায়। হারুন টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার কেদারপুর এলাকায় কাঠমিস্ত্রীর কাজ করেন।
তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার সিরাজচর এলাকার মৃত ছমেদ মাতাব্বর এর ছেলে। দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ তিনি এ পেশার সঙ্গে জড়িত। আর টাঙ্গাইলে অবস্থান করছেন ১৫ বছর যাবৎ।
সজীব ওয়াজেদ জয়কে উপহার দিতে তিনি খাটটি মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করেছেন। বাহারী নকশাঁ ও কারুকার্য এবং চারদিকে ১০টি নৌকা সংযোগ করা হয়েছে এই খাটটিতে। এ খাটটির নাম দেওয়া হয়েছে নৌকাখাট। তিনি সাড়ে ৩ বছরে ৩৫০ রোজ (দিন) কাজ করে তৈরি করেছেন এ নৌকাখাটটি। খাটটি তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা। সারা জীবনের আয় করা করা ব্যয় করেও তিনি এ খাটটির তৈরির কাজ শেষ করতে পারেননি। পরে তিনি কাজ শেষ করতে মহাজনের কাছ থেকে প্রায় এক লক্ষ টাকা ধার নিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে মিস্ত্রী হারুন-অর-রশিদ বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে খুব ভালোবাসি এবং শ্রদ্ধা করি। সেই সঙ্গে তার মেয়ে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার প্রতি রয়েছে আমার শ্রদ্ধা । প্রধানমন্ত্রীর ছেলে (সজীব ওয়াজেদ জয়) কথা-কাজ, হাঁটা-চলা এবং পোশাক সবই আমার খুব প্রিয়। তাই আমি এই প্রিয় মানুষটির জন্য জীবনের উপার্জিত সব টাকা ব্যয় করে এ খাটটি তৈরি করেছি। আমার দীর্ঘদিনের আশা আমি খাটটি নিজ হাতে সজীব ওয়াজেদ জয়কে উপহার দেব।
এ ব্যাপারে কেদারপুর বাজারের ফার্নিচার ব্যবসায়ী এরশাদ বলেন, হারুন আমাদের দোকানে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে আসছে। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি আমাদের কাজের ফাঁকে ফাঁকে এ খাটটি তৈরি করেছেন। শেষ দিকে তিনি আমাদের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা অগ্রিম নিয়ে এ কাজ সমাপ্ত করেছেন।
কেদারপুর বাজার বণিক সমিতিরি সহ-সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম হানিফ বলেন, হারুন আওয়ামী লীগকে পাগলের মতো ভালোবাসে। আর সেই ভালোবাসা থেকেই সে এমন খাট তৈরি করেছে। তার মনের আশা পূরণ হোক।
এ বিষয়ে মুকনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ বলেন, মানুষ তার ভালোবাসার নিদর্শন রাখতে তাজমহল তৈরি করেছেন। তিনি (হারুন) আওয়ামী লীগকে ভালোবাসে খাট তৈরি করেছেন। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করবো তিনি যেন উপহারটি গ্রহণ করেন। ইতোমধ্যে আমরা আমাদের আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার আব্দুল বাতেন এমপিকে বিষয়টি জানিয়েছি।
এদিকে প্রতিদিনই শত শত মানুষ এই নৌকা খাটটি দেখতে ভিড় করছে হারুনের বাড়িতে।
কেদারপুর আগ দিগিলা এলাকার জমিলা বেগম খাট দেখতে এসে জানালেন, আগের যুগের রাজা-রাণীরা এমন খাট ব্যবহার করতো। আমরা এ খাটটি তৈরির খবর শুনে দেখতে আসছি। দেখে সত্যিই ভালো লাগলো। এর আগে এমন খাট কোনোদিনও দেখিনি।
এমএএস/আরআইপি