ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

দুই সপ্তাহ সেবা করেছেন রেশমা, বাড়ি ফেরার সময় কাঁদলেন বৃদ্ধা

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল | প্রকাশিত: ০৪:৪৩ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০২১

সোমবার (১৯ এপ্রিল), দুপুর পৌনে ১টা। করোনা ডেডিকেটেড ঘোষিত সরকারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২ এর প্রবেশদ্বারের সামনে হুইল চেয়ারে বসে আছেন আনুমানিক ৫৫ বছর বয়সী পুরান ঢাকার বাসিন্দা মাকসুদা বেগম।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিন দিন বাসায় ছিলেন মাকসুদা বেগম। কিন্তু এরপর শ্বাসকষ্ট ও গায়ে ব্যাথাসহ নানা সমস্যা দেখা দিলে তিনি গত ৭ এপ্রিল ঢামেক হাসপাতালের ৯ তলার দুই নম্বর বেডে ভর্তি হন। প্রায় দুই সপ্তাহ ঢামেক হাসপাতাল-২ এর করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন মাকসুদা বেগম। বিদায় বেলায় প্রাইভেটকারে উঠে বসে তিনি অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা এক তরুণীকে ইশারায় কাছে ডাকলেন।

jagonews24

ওই তরুণী এগিয়ে আসতেই পরম স্নেহে তার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘ভালো থেকো, আবার দেখা হবে’। মাকসুদা বেগমের সঙ্গে থাকা এক যুবক ওই তরুণীকে অদূরে ডেকে নিয়ে কিছু টাকা হাতে গুঁজে দিলেন। এ সময় মাকসুদা বেগম ও তরুণীর চোখ ছলছল করে ওঠে। অশ্রুসিক্ত তরুণী তাকে বিদায় দিয়ে হুইল চেয়ার ঠেলে ফিরে যান হাসপাতালের ভেতর।

তরুণীর নাম রেশমা। মাকসুদা বেগম তার রক্তের সম্পর্কের কোনো আত্মীয় নন। গত দুই সপ্তাহ হাসপাতালে তার শয্যার পাশে সার্বক্ষণিক থেকে এক ধরনের মায়া জন্মেছে রেশমার। চিকিৎসক ও নার্সরা চিকিৎসা দেন, কিন্তু রেশমাদের মতো আয়ারা সার্বক্ষণিক রোগীর পাশে থেকে স্বজনদের চেয়েও বেশি সেবা-শুশ্রুষা করেন বলে জানান রোগীর এক আত্নীয়।

সরেজমিন দেখা গেছে, আগের তুলনায় ঢামেক হাসপাতালে করোনা রোগীর ভীড় অনেকটাই কমেছে। হাসপাতালে করোনা শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করায় রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে না। যাদের আইসিইউ প্রয়োজন নেই, এমন রোগীদের সমস্যা বিবেচনায় ভর্তি করে নেয়া হচ্ছে। আগের মতো ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না।

jagonews24

অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগিয়ে সুচিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে আসছেন। হাসপাতালে আসার পর প্রথমে তাদের অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। পরে চিকিৎসক বুঝে-শুনে ভর্তি করছেন।

ঢামেক হাসপাতালে প্রতিদিন নতুন করে রোগী যেমন ভর্তি হচ্ছে, তেমনি চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মীদের নিবিড় পর্যবক্ষণে থেকে সুস্থ হয়েও বাড়ি ফিরছেন। যারা আক্রান্ত হয়ে আসেন তাদের স্বজনদের চোখেমুখে হতাশা ও দুশ্চিন্তা, আর যারা সুস্থ হয়ে ফিরে যান, তাদের চোখেও পানি থাকে, তবে তা আনন্দের।

এমইউ/এমএসএইচ/জিকেএস