ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

এবারও চকবাজারে বসেনি ইফতারের পসরা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৭:৪৯ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২১

 

‘আসব না? এই তো একটু ঘুরতে এসেছি। সব স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তো বেরিয়েছি।’ লকডাউনে বাইরে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করতেই বিরক্তির সুরে এ কথা বলেন এক যুবক। তিনি রাজধানীর চকবাজার শাহী মসজিদের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। চকবাজারে ইফতারসামগ্রী কিনতে এসে না পেয়ে হতাশ ওই যুবক।

যুবক বলেন, ‘আমাদের পুরান ঢাকার মানুষ বাসায় ইফতার কম বানান। চকবাজার থেকে কিনে খাওয়ার অভ্যাস। গত বছরের মতো এবারও তো সেভাবে দোকান বসেনি। তবুও টুকটাক যা দোকান বসেছে, সেখান থেকে কিনতে এসেছি।’

iftar4

চকবাজারের রমজানে দুপুর না হতেই শাহী মসজিদ গলিসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে বাহারি ইফতার বানানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যেত। গোটা এলাকায় থাকত মানুষের ভিড়। বিক্রেতারা চিৎকার করে বলতেন, ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙ্গায় ভইরা লইয়া যায়।’

এখানে বিক্রি হতো আদি মাঠা, আস্তখাসি, খাসির লেগ পিস, মুরগী মসাল্লাম, চিকেন ফ্রাই, বটি কাবাব, টিকা কাবাব, কোফতা, চিকেন কাঠি, সামি কাবাব, শিকের ভারি কাবাব, সুতি কাবাব, কোয়েল পাখির রোস্ট, কবুতরের রোস্ট, জিলাপি, শাহি জিলাপি, নিমকপারা, সমুচা, আলাউদ্দিনের হালুয়া, হালিম, দইবড়া, সৌদি পানীয় লাবাং, কাশ্মীরি শরবত।

jagonews24

হরেক ফলের দোকানে ছেয়ে যেতো গোটা চকবাজার। ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতিতে জোহরের নামাজের পর থেকেই ধুমছে বেচাকেনা শুরু হতো। চকবাজারের আদি ইফতারি তৈরির সঙ্গে জড়িত প্রবীণরা গল্পের ঝুলি মেলে ধরে বাপ দাদার আমলের ইতিহাস তুলে ধরতো। কিন্তু মহামারি করোনার কারণে সেই চকবাজার এবারও ইফতারের বাজারই বসেনি।

বুধবার (১৪এপ্রিল) পবিত্র মাহে রমজান ও বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন সরেজমিন পরিদর্শনকালে চকবাজার চৌহদ্দি ঘুরে ইফতারের বাজারের দেখা মেলেনি। বহু বছরের পুরোনো আনন্দ বেকারি, আলাউদ্দিন সুইটমিটসহ কয়েকটি কনফেকশনারি ও মিষ্টির দোকানে স্বাস্থবিধি মেনে ইফতারসামগ্রী বিক্রি হতে দেখা গেছে।

jagonews24

এদিক-সেদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছুসংখ্যক মাঠা, পিস শসা, আনারস, তরমুজ, বাঙ্গি ইত্যাদি ফলমুল বিক্রি হতে দেখা গেছে। চকবাজারের ঐহিত্যবাহী শাহি মসজিদে তালা ঝুলতে দেখা যায়। একজন মুসল্লি জানালেন, শুধুমাত্র ওয়াক্তের সময় সীমিত সময়ের জন্য মসজিদ খোলা হয়।

তিনি বলেন, চকবাজারে জোহর ও আসরের নামাজ পড়ে ইফতার কিনে নিয়ে যেতো পুরান ঢাকা ও নতুন ঢাকার মানুষ। কিন্তু গত বছর ও এবার লকডাউনের কারণে ইফতারের বাজারই বসেনি। এলাকার এক প্রবীণ এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বলছিলেন, ‘করোনার কারণে বড় বাপের পোলায় খাই, কই হারাইয়া গেল!’

এমইউ/এএএইচ/এমএস