ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

খুলছে দোকান-শপিংমল, স্বাস্থ্যবিধি মানছে না ক্রেতা-বিক্রেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৩২ পিএম, ০৯ এপ্রিল ২০২১

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের পঞ্চম দিনে শপিংমল ও দোকান-পাট খুলে দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব মার্কেটের দোকান-পাট খোলার কথা থাকলেও, তা মানছেন না অনেকেই।

শুক্রবার (৯ এপ্রিল) সকাল ১০টায় রাজধানীর মিরপুরের একাধিক শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, প্রবেশপথে নিরাপত্তারক্ষীরা হাতে স্যাভলন মিশ্রিত পানি ছিটাচ্ছেন। দোকানগুলোতে নেই সামাজিক দূরত্ব। অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক থাকলেও, সেটা অনেকের থুতনির নিচে স্থান পেয়েছে।

market1

শর্তসাপেক্ষে মার্কেট খোলার অনুমতি দেয়ার জন্য সবাই সরকারের প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। দোকান মালিকরা বলছেন, ক্রেতা-বিক্রেতা সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানলে মার্কেট থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা কম।

স্যানিটাইজারের বদলে মেলে স্যাভলনের পানি

গত ৫ এপ্রিল ৭ দিনব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেন ব্যবসায়ীরা। এ সময় তারা স্লোগান দেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মানবো, দোকানপাট খুলবো।’ এমন অবস্থায় শুক্রবার থেকে পাঁচদিন কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শপিংমল খোলা রাখা যাবে বলে ঘোষণা দেয় সরকার।

স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন না করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। তবে মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেট ও হাতেগোনা কয়েকটি ফ্যাশন হাউজে প্রবেশ করতে গেলে হাতে ছিটিয়ে দেয়া হচ্ছে স্যাভলন মিশ্রিত পানি।

market1

জানতে চাইলে শাহ আলীর এক সিকিউরিটি গার্ড বলেন, ‘আমাদের অফিস থেকে এগুলোই দিতে বলছে। এর আগেও স্যাভলনের পানি দিয়েছি।’

মার্কেটের জুতার ব্যবসায়ী কামাল আহমেদ জাগো নিউজকে জানান, ‘৫ দিন পর আজকে দোকান খুলেছি। আমরা মাস্ক ছাড়া কাউকে দোকানে ঢুকতে দিচ্ছি না।’

সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে তিনি জানান, ‘একসঙ্গে অনেক কাস্টমার ঢুকে পড়ে। আমরা তাড়াতাড়ি বিদায় করার চেষ্টা করি।’

হাত ধোয়ার বেসিন উধাও, ফুটপাতে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

গত বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময় ১০ নম্বরের শাহ আলী মার্কেটসহ একাধিক স্থানে অস্থায়ী হাত ধোয়ার বেসিন বসানো হয়েছিল। সেগুলো কোথায় গেছে জানে কেউ।

মিরপুর ২ নম্বরে বাচ্চাদের জামা-কাপড় বিক্রি করেন মো. জুয়েল। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, মার্কেটগুলোর সামনে গত ঈদের আগে এসব বেসিন ছিল। ঈদের পর ব্যবহার হয় না দেখে এইগুলো নিয়ে গেছে। এখন একটাও নেই।

market1

এদিকে মিরপুর ১০ থেকে ২ নম্বর পর্যন্ত ফুটপাতে ব্যবসায়ীরা বসেছেন। তবে মাস্ক ছাড়া কেউই আর কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানছে না।

ফুটপাতের দোকানদার শরিফ আহমেদ জানান, ‘দোকান খুলছি ঠিক আছে, তবে বিক্রি তো হয় নাই। আমাদের তো দিনে এনে দিন খাওয়ার অবস্থা। একদিন বিক্রি না হলে ফ্যামিলি নিয়ে চলতে কষ্ট হয়।’

ফুটপাত ঘুরে দেখা গেছে, মাস্ক পরা নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই সমান অনাগ্রহ। এ জন্য তাদের কাছে আছে গরম লাগা, কথা বলতে না পরাসহ নানা অজুহাত।

মিরপুর ২ নম্বরে এক ক্রেতাকে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে, তিনি বলেন ‘মাস্ক পরি নাই তো কী হইছে?’

গত একদিনে ৭৪ জন করোনাভাইরাসে মারা গেছেন জানালে তিনি বলেন, ‘মরে যাওয়া ভালো তো!’

তদারকির কেউ নেই

দোকান-মার্কেটে স্বাস্থ্যঝুকি মানা হচ্ছে কি না তা তদারকি করতে দোকান মালিক সমিতি, পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট কারও উপস্থিতি চোখে পড়েনি।

market1

এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারছেন অনেক ব্যবসায়ী। তাই তারা নিয়েছেন পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা।

এমনই একজন মিরপুর ২-এর জুতার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘দোকানের বাইরে রশি টানিয়ে দিয়েছি। বাইরে থেকে বেচাকেনা করছি। কাউকে দোকানের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছি না। মাস্ক ছাড়া কারও কাছে পণ্য বিক্রি করছি না ‘

তিনি বলেন, ‘যারা সামনে থেকে করোনা রোগী দেখেছে বা আত্মীয় স্বজনকে অসুস্থ হতে দেখেছে, একমাত্র তারাই জানে করোনা কতটা ভয়াবহ। ম্যাজিস্ট্রেট আসলে জরিমানা করলে অন্য ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান চালানো সম্ভব। প্রথম দিকেই যদি কার্যকর লকডাউন দিতো, তাহলে পরিস্থিতি এমন হতো না।’

আসছে ঈদ মৌসুমে আশানুরূপ বেচাকেনা করতে পারলে গত বছরের লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা ব্যবসায়ীদের।

এসএম/এমএসএইচ/এমএস