ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘লকডাউনে আরেকবার ধাক্কা খেলে মরণ ছাড়া উপায় থাকবে না’

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০১:২০ পিএম, ০৬ এপ্রিল ২০২১

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) মধ্যদুপুর। রাজধানীর চাঁদনী চক মার্কেটের সামনের রাস্তায় ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে হবে’ প্ল্যাকার্ড হাতে বিমর্ষ বদনে বসে আছেন এক তরুণী। প্রখর সূর্যতাপে তাকে বসে থাকতে দেখে ছাতা হাতে এগিয়ে এলেন মার্কেটের এক কর্মচারী। তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছাতা সরিয়ে নিতে বললেন তিনি।

মার্কেট খোলা রাখার দাবিতে পরশু ও গতকালের মতো আজও রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনীচকসহ বিভিন্ন মার্কেটের কর্মচারীরা এখানে সমবেত হন। অনেকের মধ্যে ওই তরুণীও ছিলেন।

কৌতূহলবশত এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেল- ওই তরুণীর নাম আফরিন। নারায়ণগঞ্জের লালকুঠি এলাকা থেকে এসেছেন। তিনি একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা।

তিনি জানান, গতবছর করোনা মহামারির কারণে তিনি ব্যবসায়িকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হন। ওই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছিলেন। শুধু তিনি একা নন, তার সঙ্গে স্বপ্ন দেখছেন ক্ষুদ্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত আরও শত শত নারী উদ্যোক্তা।

আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে তারা কেউ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আবার কেউ এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন। গতবার যে ক্ষতি হয়েছিল এবার তা পুষিয়ে নেয়ার আশা করছিলেন তারা। কিন্তু নতুন করে লকডাউন শুরু হওয়ায় তাদের সে স্বপ্ন ভেঙে এখন চুরমার।

jagonews24

আফরিন জানান, তিনি ইসলামপুর ও গাউছিয়া থেকে থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন পোশাকের অর্ডার নিয়ে সেগুলোতে বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজ যেমন- কারচুপির কাজ, স্টোন বসানোর কাজ করে দেন। প্রতিবছর রোজা শুরুর আগে নিজ খরচে পোশাকে এসব কাজ করে ব্যবসায়ীদের দেন তিনি। ২৫ রোজার পর দোকান মালিকরা তাকে টাকার হিসাব বুঝিয়ে দেন।

তিনি বলেন, ‘লকডাউনের কারণে যদি মার্কেট বন্ধ থাকে তাহলে ব্যবসায়ীরা টাকা দেবে কোথা থেকে? আর তারা টাকা দিতে না পারলে আমি কারিগরসহ অন্যান্যদের বিল পরিশোধ করবো কোথা থেকে? কয়েকদিন ধরে আমার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। লকডাউনের কারণে আরেকবার ধাক্কা খেলে (আর্থিক ক্ষতি) মরণ ছাড়া উপায় থাকবে না ।’

আফরিন আরও জানালেন, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ বিভিন্ন এলাকায় তার অধীনে দেড় শতাধিক কর্মচারী কাজ করেন। কেবল রাজধানীর ইসলামপুরে তিনি ২৫ লাখ টাকার বেশি মূল্যের পোশাকের কাজ করেছেন। এখন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে কেউ তাকে টাকা দেবেন না। এসব দুশ্চিন্তায় এখন তার পাগল হওয়ার দশা।

তিনি তার মতো ক্ষতিগ্রস্ত নারী উদ্যোক্তাদের রাজপথে নেমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার দাবি জানানোর অনুরোধ জানান।

এমইউ/এমআরআর/এমকেএইচ