বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় পরিষদ সভা অনুষ্ঠিত
‘কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করি, নারী আন্দোলনকে অগ্রসর করি’ শ্লোগানকে সামনে রেখে বৃহস্প্রতিবার (১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে অনলাইনে জাতীয় পরিষদ সভার উদ্বোধনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডিস দূতাবাসের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন মিস ক্রিস্টিন জোহানসন এবং ইউএন উইমেনের দেশীয় প্রতিনিধি শোকো ইশিকাওয়া।
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘যেকোনো সংকট নারীর জীবনে ভিন্ন অভিঘাত সৃষ্টি করে। করোনা মহামারির সময়ে পুরুষের পাশাপাশি অনেক নারী কাজ হারিয়েছেন, ঘরে থেকে অনেক নারী ও শিশু সহিংসতার শিকার হয়েছেন। শিক্ষাসহ প্রায় সকল দিকের নেতিবাচক প্রভাব যে নারী ও কন্যা শিশুর ওপর পরিলক্ষিত হয়েছে, তাদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নানা অগ্রগতি হলেও জেন্ডার সমতা এখনো চ্যালেঞ্জের মুখে আছে। ৫০ বছরে দীর্ঘ সংগ্রামের ফলে, সরকারি-বেসরকারি প্রচেষ্টার ফলে, নারীদের অবদানে দেশের অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে হলে মৌলিক কতগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।’
পাশাপাশি তিনি অর্জনসমূহকে টিকিয়ে রাখার জন্য স্থানীয় থেকে বৈশ্বিক পর্যায় এবং সরকার থেকে বৃহত্তর সমাজকে উদ্যোগ গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শোকো ইশিকাওয়া বেইজিং সম্মেলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ‘২৬ বছর আগে নারী ও কন্যার অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বেইজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশন গৃহীত হয়। বেইজিং সম্মেলনের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে প্রতিটি দেশ কাজ করে যাচ্ছে এবং এর পর্যালোচনায় এসে দেখা যাচ্ছে, নারীর জীবনে অনেক অগ্রগতি হলেও কোভিড পরিস্থিতি সমস্ত অগ্রগতিকে স্থবির করে দিয়েছে। নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে, শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ কমেছে।’
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘৫০ বছরে নারীর অবস্থায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। নারীর যে প্রচলিত ইমেজ তা থেকে নারীকে এখনও বের করতে পারিনি। তার ইমেজ হবে তিনি পরিবারে-সমাজে একজন দায়িত্ববান ব্যক্তিত্ব, এটি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নারীদের মাঝে জাগরণ হয়েছে, একে আত্মপরিচয়ের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। বিভিন্ন পেশার নারীরা তাদের যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। নারীরা যত নেতৃত্বের দিকে এগিয়ে যাবে, তত সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। সাম্প্রতিক সময়ে নারীর অগ্রগতি হয়েছে, তবে নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি আমাদের উদ্বিগ্ন করে। এর জন্য বিচারহীনতার সংস্কৃতি, সুষ্ঠু জবাবদিহিতার অভাব, দুর্নীতি এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতা- সমস্ত কিছুর নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে নারীর ওপর। এখন চ্যালেঞ্জ কেবল নারীর মানবাধিকার নিয়ে নয় বরং মানবতা প্রতিষ্ঠার দিকে।’
এনএইচ/ইএ/জিকেএস