ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:৩১ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২১

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। প্রথম দফার তালিকায় ১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম এসেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশ করেন। তালিকাটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাসাইটে পাওয়া যাবে বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের কোনো সংজ্ঞা ছিল না। আমরা আমাদের মন্ত্রণালয়ের সচিবকে প্রধান করে সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসবিদখ্যাত ব্যক্তিদেরকে নিয়ে সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছি। তারা প্রাথমিকভাবে একটা তালিকা প্রস্তুত করেছেন। বাকিটাও প্রকাশ করা হবে, এক্ষেত্রে আমরা কোনোভাবেই ৩০ জুনের বাইরে যাব না।’

মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘আগে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকাগুলো মূলত ঢাকাসহ বড় বড় শহর কেন্দ্রিক ছিল। জেলা থেকে তারা জানত না, আবেদনও করতে পারত না। এখন তারা জেনেছে আবেদন করেছে। অনেক আবেদন আমরা পেয়েছি।’

‘একটা মানদণ্ড ঠিক করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে কারা বুদ্ধিজীবী মুক্তিযোদ্ধা হবেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সংজ্ঞা অনুযায়ী যেসব সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবী, সংস্কৃতিসেবী, চলচ্চিত্র, নাটক সঙ্গীত ও শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যাদের বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী কিংবা তাদের সহযোগীদের হাতে শহীদ কিংবা চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন তারা শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে বিবেচিত হবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আজকে আমরা ১৯১ জনের তালিকা যেটা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে, সেই তালিকাটা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করছি।’

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদ দুই রকমের। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নয় মাস অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ক্ষেত্রবিশেষে ৩১ জানুয়ারি, ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি মিরপুরে যুদ্ধ হয়েছিল। এটার জন্য একটু রিল্যাক্স করা হয়েছে। এই সময়ের যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন বা যুদ্ধের ট্রেনিং গ্রহণের পর পাক বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে নিহত হয়েছেন তারা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। আর মুক্তিযুদ্ধে নিহত হওয়া ৩০ লাখ হচ্ছে গণ-শহীদ।’

‘শহীদ নিয়ে আমাদের বহু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। এই পর্বটা শেষ (মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা) হলে আমরা গণ-শহীদদের বিষয়ে চিন্তা করব। যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন তাদের একটা স্বীকৃতি থাকবে না? তাই আমরা ভাবছি এই গণ-শহীদদের কীভাবে সম্মানিত করা যায়। তাদের একটা তালিকা করে যদি সনদ দেই, সেটা তাদের পরিবারের জন্য একটা সান্ত্বনা, আর্থিকভাবে সুযোগ-সুবিধা পাক বা না পাক। গণ-শহীদদের আমরা কীভাবে সম্মানিত করতে পারি সেটাও বিবেচনায় আছে।’

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নের জন্য গবেষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষকে এই কমিটির সভাপতি করা হয়। কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শহীদুল হক ভূঁঞা। কমিটিতে সদস্য-সচিব হিসেবে রয়েছেন উপসচিব রথীন্দ্র নাথ দত্ত।

কমিটিতে গবেষক সদস্যদের মধ্যে ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ট্রাস্টি চৌধুরী শহীদ কাদের, জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) পরিচালক বায়েজিদ খুরশীদ রিয়াজ এবং গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের গবেষক গাজী সালাউদ্দিন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের মধ্যে ছিলেন- চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ জহির (বীরপ্রতীক)।

আরএমএম/এসএস/জেআইএম