পাঁচ রাষ্ট্রনেতার আগমনকালে শাহজালালে বন্ধ থাকবে বিমান ওঠানামা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে সরকার। এ উপলক্ষে বাংলাদেশে আসছেন ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপের রাষ্ট্র্র বা সরকার প্রধানরা। তাদের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এবং নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী আসছেন সফরসঙ্গীসহ তাদের নিজস্ব চার্টার্ড বিমানে।
শুধুমাত্র মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহীম মু. সালেহ দুবাই থেকে ৩১ সফরসঙ্গীসহ আসবেন যাত্রীবাহী বিমানে।
এ অনুষ্ঠানের আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নির্ভরযোগ্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানান, অতিথি ও তাদের সঙ্গীদের বহনকারী চার্টার্ডা বিমান আগমনের সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট করে সব ধরনের ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ থাকবে। ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের বহনকারী চার্টার্ড ফ্লাইট রানওয়েতে অবতরণের আগে ৪৫ মিনিট ও পরে ৩০ মিনিট শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ থাকবে।
তারা জানান, ভিভিআইপি ও ভিআইপিরা বিমানবন্দরে অবতরণের পর তাদের গানস্যালুট ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। সেখান থেকে রাষ্ট্রপ্রধানরা সাভার স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হেলিকপ্টারে এবং অন্যরা সড়ক পথে স্মৃতিসৌধে যাবেন। নরেন্দ্র মোদি গোপালগঞ্জে জাতির জনকের মাজারে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। জানা গেছে অতিথিদের সফরসঙ্গীরা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি আবাসিক হোটেলে যাবেন। সেখানে তাদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে।
এর আগে শুক্রবার (১২ মার্চ) বিকেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী জানান, ১০ দিন নানান ভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম তুলে ধরা হবে। এটি হবে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে। বিভিন্ন দেশের প্রধানগণ এতে অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এই আয়োজনের মূল থিম ‘মুজিব চিরন্তন’।
অনুষ্ঠানমালার ১০ দিনের মধ্যে ৫দিন বিদেশি অতিথিরা থাকবেন। ১৭, ১৯, ২২, ২৪ ও ২৬ মার্চ এ পাঁচদিন বিদেশি অতিথি ও দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। এর বাইরেও বিভিন্ন দেশের প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন।
এ দিনগুলোর অনুষ্ঠান বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে রাত ৮টায় শেষ হবে। প্রতিদিন আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে। এ পাঁচদিনের অনুষ্ঠানে নির্ধারিত ৫০০ জন দর্শক থাকতে পারবেন। তবে অনুষ্ঠানের আগে তাদের কোভিড টেস্ট করাতে হবে। টেস্টের কার্যকারিতা থাকবে ৪৮ ঘণ্টা। টেস্টের জন্য ৫টি সেন্টারও ঠিক করে দেয়া হয়ে
১৭ মার্চের আয়োজনের থিম ‘ভেঙেছে দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়’। এদিন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি থাকবেন। সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইবরাহীম মু. সালেহ উপস্থিত থাকবেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভিডিও বার্তা দেবেন।
১৮ মার্চ আয়োজনের থিম ‘মহাকালের তর্জনী’। সে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন।
১৯ মার্চের অনুষ্ঠান ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা’। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে উপস্থিত থাকবেন।
২০ মার্চ ‘তারুণ্যের আলোকশিখা’। এই অনুষ্ঠানে ওআইসি’র সেক্রেটারি জেনারেল ড. ইউসেফ আল ওথাইমিন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন।
২১ মার্চের আয়োজন ‘ধ্বংসস্তূপে জীবনের গান’, এতে দেশীয় একাডেমিশিয়ানরা বক্তব্য দেবেন।
২২ মার্চের আয়োজন ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’। এদিন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন।
২৩ মার্চ ‘নারীমুক্তি, সাম্য ও স্বাধীনতা’, এদিন ইউনেস্কোর ডিজি উপস্থিত থাকবেন।
২৪ মার্চ ‘শান্তি-মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত’, সেদিন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং উপস্থিত থাকবেন। পোপ ফ্রান্সিস শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন।
২৫ মার্চ ‘গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রা’। এদিন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চুং স্যু-কুয়েন এবং তাকাশি হাওয়াকাওয়ার পুত্র ওসামু হাওয়াকাওয়া শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন।
২৬ মার্চের আয়োজন ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’। এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।
এমইউ/এমএইচআর/জিকেএস