দুই মেয়ের হাত ধরে কেঁদেছেন মুজাহিদ
ফাঁসি কার্যকর করার আগে পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় হাউমাউ করে কেঁদেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ। এর মধ্যে মুজাহিদ তার দুই মেয়েকে ধরেই সবচেয়ে বেশি কেঁদেছেন বলে কারা সূত্রে জানা গেছে।
কারা সূত্র জানায়, রাত ১০টার পরে পরিবারের সদস্যরা মুজাহিদের সঙ্গে দেখা করতে কারাগারা প্রবেশ করেন। তারা রাত সোয়া ১২টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দুই মেয়ের হাত ধরে কেঁদেছেন মুজাহিদ।
ফাঁসির মঞ্চে আনার আগ পর্যন্ত সেসকল প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে সাকা ও মুজাহিদকে দণ্ড কার্যকর করা হয় তার মধ্যে প্রথমে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের দুজনকে গোসল করানো হয়। রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে দেয়া হয় রাতের খাবার। খাবারের মেন্যু ছিলো ভাত, ডাল সবজি, মুরগি।
তবে তাদের খাবার দিলে প্রথমে খাবেন না বলে জানান। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ যখন জানায় এটাই তাদের শেষ খাবার, তখন সাকা খেলেও মুজাহিদ খাননি। রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে শেষবারের মতো দেখা করতে কারাগারে প্রবেশ করেন সাকার পরিবারের সদস্যরা। তারা ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত কারাগার অবস্থান করেন।
এরপর সাকার পরিবার বের হলে মুজাহিদের পরিবারের সদস্যরা প্রবেশ করেন। তারা অবস্থান করেন সোয়া ১২টা পর্যন্ত। পরিবারের সদস্য বিদায় নিলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদের তওবা পড়ানো হয়। তওবা পড়ান কারাগার পুকুর পাড় সংলগ্ন মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মনির হোসেন খান।
এরপর ১২টা ৩৬ মিনিটে কনডেম সেল থেকে যমটুপি পরিয়ে দু’জনকে একসঙ্গে ফাঁসির মঞ্চে নেয়া হয়। এসময় তাদের মধ্যে কোনো রিঅ্যাকশন ছিলো না। তাদের দাঁড় করানো হয় একই মঞ্চে পাশাপাশি। মঞ্চটি বেশ পুরনো। এ মঞ্চেই কার্যকর হয় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ফাঁসি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম দু’জনকে একইসঙ্গে, একই সময়ে, একই মঞ্চে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর মুজাহিদের মরদেহ আগে তোলা হয়। পরে তোলা হয় সাকার মরদেহ।
পরে কারা চিকিৎসক ডা. বিপ্লব কুমার ও আহসান হাবিব, ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন আবদুল মালেকের তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত হয়। এসময় শুধু তাদের ঘাড়ের রগ কাটা হয়।
কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
এআর/বিএ