ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

৭ বছরে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ৬১৮টি, বাস্তবায়ন ৫২টি

প্রকাশিত: ০১:০৯ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০১৫

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ২০০৮ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী ৬১৮টি প্রতিশ্রুতি ও নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এর মধ্যে গত সাত বছরে মাত্র ৫২টি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়েছে।

জাতীয় সংসদে বুধবার চাপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. আব্দুল ওদুদের তারকা চিহ্নিত লিখিত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

সাংসদ আব্দুল ওদুদ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘২০০৮ সালে মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত চাপাইনবাবগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন জেলা সফরকালে জনসভা মঞ্চে যে সব উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতি আপনি দিয়েছেন এই পর্যন্ত তার কতগুলো বাস্তবায়িত হয়েছে এবং যেগুলো এখনো বাস্তবায়িত করা হয়নি সেগুলো কবে নাগাদ বাস্তাবায়ন করা হবে’?

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এ পর্যন্ত সারা দেশের বিভিন্ন জেলা সফরের সময় আমি সর্বমোট ৬১৮টি প্রতিশ্রুতি ও নির্দেশনা প্রদান করি। ইতোমধ্যে ৫২টি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়েছে। ২৮৫টি বাস্তাবায়নাধীন আছে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ২৮১টি প্রতিশ্রুতি। যার মধ্যে ১০৬টি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ডিপিপি অনুমোদিত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা হবে।’

প্রশ্নত্তোর পর্বের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর চ্যাম্পিয়ান্স অব দ্যা আর্থ পুরস্কার প্রসঙ্গে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের ৭০তম অধিবেশনে অংশগ্রহণকালে আমাকে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মান চ্যাম্পিয়ান্স অব দ্যা আর্থ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। গত ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) নির্বাহী পরিচালক অ্যাচিম স্টেইনার এই সম্মানজনক পুরস্কারটি আমার হাতে তুলে দেন। এই পুরস্কারটি আমি বাংলাদেশের সকল মানুষকে উৎসর্গ করি। কারণ আমি মনে করি আমরা বাংলাদেশের জনগণের সহায়তা নিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলা করছি।

প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি ২০০৪ সালে চ্যাম্পিয়ানস অব দ্যা আর্থ পুরস্কার প্রবর্তন করে। এর পরের বছর ২০০৫ সাল থেকে এই পুরস্কারটি সমগ্র বিশ্বের সেই সব দুরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ এবং সংগঠনগুলোকে দেয়া হচ্ছে, যারা উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং মানব জাতির মর্যাদাপূর্ণ জীবনের জন্য দৃষ্টান্তমূলক নেতৃত্ব দিতে পেরেছেন।

এছাড়া সাবেক ছিটমহলবাসীদের পুনর্বাসন ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, সাবেক ছিটমহলবাসীদের পুনর্বাসন এবং তাদের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য ২০১৫-১৬ অর্থবছরে অর্থ বিভাগের বাজেটে প্রতিকী বরাদ্দ হিসেবে ছিটমহলের উন্নয়নের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী এই অর্থ ছাড় করা হবে। সাবেক ছিটমহলবাসীদের বাংলাদেশের উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ কর্তৃক গৃহীত উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হবে এবং প্রয়োজনের নিরীখে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে।

সাবেক ছিটমহলের উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরে সংসদে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য এলজিইডি’র আওতায় ১৯১ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ২৩ কিলোমিটার মাটির সড়ক, ৭১১ কিলোমিটার ব্রিজ, ১৫টি মসজিদ, ৮টি কমিউনিটি সেন্টার, ৭টি মন্দির এবং ৮টি ঘাট নির্মাণ, ১২টি হাট বাজার, ৪টি কবর স্থান এবং ৩টি শ্মশান ঘাট উন্নয়নসহ প্রায় ১১ কিলোমিটার খাল খনন ও ২৩০ মি স্লোপ প্রোটেকশন অন্তর্ভুক্ত করে ১৯৫ কোটি ব্যয় সম্বলিত একটি ডিপিপি অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন আছে।

এছাড়া ছিটমহলবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ছিটমহলগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ছিটমহলের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনপূর্বক জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পঞ্চগড় জেলায় একটি নতুন থানা ও তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।  

শেখ হাসিনা বলেন, ছিটমহলের এলাকাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব এলাকার স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার কার্যক্রম অব্যাহত আছে। ছিটমহলবাসীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দিবা ও রাত্রিকালীন পুলিশি টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এইচএস/একে/পিআর