‘স্বতঃস্ফূর্ত হয়েই আমরা টিকা নিচ্ছি, ভয়ের কিছু নেই’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারে টিকা নেয়া স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেছেন, ‘স্বতঃস্ফূর্ত হয়েই আমরা টিকা নিচ্ছি এখানে ভয়ের কিছু নেই। আপনারা যারা টিকা নিয়ে সংশয়ে আছেন তাদের বলবো- আপনারা ভয় না পেয়ে টিকা নিন।’
বিএসএমএমইউ’র কনভেনশন সেন্টারের নিচতলায় বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল থেকেই আনন্দমুখর পরিবেশে করোনা টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। যা দুপুর দুইটা পর্যন্ত চলে।
টিকা নেয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের একজন বিএসএমএমইউ’র থোরাসিক সার্জারি ইউনিটের সহকারী অধ্যাপক ডা. হিমেল সাহা জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনার মাঝে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। এখন টিকা এসেছে যা বহুল আকাঙ্খিত। আমিও টিকা নিলাম। টিকা নিয়ে আসলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘এখানে সুশৃঙ্খল পরিবেশে টিকা দেয়া হচ্ছে। পুরো প্রক্রিয়ার জন্য আমি খুবই সন্তুষ্ট। এভাবে টিকা দেয়া হলে আমাদের দেশ থেকে করোনা দূরীভূত হবে বলে আশা করছি।’
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে এই চিকিৎসক বললেন, ‘সব টিকারই কিছু না কিছু প্রতিক্রিয়া থাকে, এজন্য ভয় পেলে তো হবে না। একশ জনের মধ্যে একজনের প্রতিক্রিয়া হওয়ার বিষয়টিকে স্বাভাবিক হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। আর আমারই তো টিকা নেয়া আধা ঘণ্টা হয়ে গেল, তেমন কোনো প্রতিক্রিয়াও মনে হচ্ছে না।’
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারের নিচতলায় করোনা টিকা নিতে নিবন্ধনের জন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। চারটি নিবন্ধন বুথের পাশেই রয়েছে চারটি ভ্যাকসিন বুথ। নিবন্ধনকৃতরা পর্যায়ক্রমে টিকা নিতে থাকেন। টিকা নেয়া শেষে বিশ্রাম কক্ষেও কেউ কেউ অবস্থান করেন। এসময় এক ঘণ্টার ব্যবধানে অন্তত সাতজনকে করোনার টিকা নিতে দেখা যায়।
নিবন্ধন বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র স্টাফ নার্স জোনায়েদ সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘যে স্বাস্থ্যকর্মীরা রেজিস্ট্রেশন করছেন তারা এখানে আজ টিকা নেবেন। সকাল থেকেই টিকা দেয়া হচ্ছে। আমাদের উপাচার্য স্যার সকালে টিকা নিয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন। দুপুর দুইটা পর্যন্ত আমাদের এ টিকাদান কার্যক্রম চলবে।
এর আগে সকাল সোয়া নয়টার দিকে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া প্রথম টিকা নিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এরপর তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী (আইসিটি) জুনাইদ আহমেদ পলকসহ স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান ও তথ্য সচিব খাজা মিয়া টিকা নেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. রফিকুল আলম (প্রশাসন), অধ্যাপক ডা. শাহানা আক্তার (শিক্ষা) ও অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন (গবেষণা), কোষাধ্যক্ষ মো. আতিকুর রহমান এবং হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আহমেদ আমিনও করোনা টিকা নিয়েছেন।
টিকা নেয়ার পর ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘টিকা নেয়াটা আমার সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত দায়িত্ব। আমাকে দেখে মানুষ আস্থা পাবে, সাহস পাবে।’
করোনার টিকা প্রদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে আজ রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালে টিকা দেয়া হয়।
এওয়াইএইচ/এমআরআর/এমকেএইচ