ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

কাজ হারিয়ে দেশে ফেরাদের পুনর্বাসনে পরামর্শক খরচ ১১৫ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৩৯ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০২১

করোনায় বিদেশে কাজ হারিয়ে দেশে ফেরত আসা শ্রমিকদের পুনর্বাসন করবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। সেই লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়টি কমিশনে একটি প্রকল্প পরিকল্পনা পাঠিয়েছে। পুনর্বাসনের এ প্রকল্পে পরামর্শক খাতে ১১৫ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা খরচের প্রস্তাব করা হয়েছে। পরামর্শক খাতে এত খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

‘প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণের লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃজনে সহায়ক’ শিরোনামের প্রকল্পে খরচ প্রস্তাব করা হয়েছে ৪৩০ কোটি ৫২ লাখ ১২ হাজার টাকা। তার মধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ ৪২৫ কোটি টাকা এবং সরকার দেবে ৫ কোটি ৫২ লাখ ১২ হাজার টাকা।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটির ওপর পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে।

পিইসি সভার কার্যপত্রে বলা হয়েছে, ‘এ প্রকল্পে ১০ জন ব্যক্তি পরামর্শক এবং ৮টি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হবে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান খাতে বরাদ্দ ৯৪ কোটি ৫০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা এবং ব্যক্তি পরামর্শকরা পাবেন ১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এত সংখ্যক পরামর্শক এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা আছে মর্মে প্রতীয়মান হয় না। তাছাড়া পরামর্শকদের জন্য বাড়ি ভাড়া ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা রাখা হয়েছে। এটার প্রয়োজন আছে কি-না, তা নিয়ে সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে।’

পরামর্শক খাতে ১১৫ কোটির বেশি খরচ করা হলেও কাজ হারিয়ে দেশে ফেরা শ্রমিকরা যেন চাকরি বা ব্যবসা করতে পারে, সেজন্যে প্রত্যেককে এককালীন ৭ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। এরকম ২ লাখ কর্মীকে ৭ হাজার করে মোট ১৪০ কোটি টাকা প্রদান করা হবে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। এর মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমানকে ফোন করা হলে একজন রিসিভ করে জাগো নিউজকে জানান, ‘মহাপরিচালক চেম্বারে নেই’।

জাগো নিউজের ফোন রিসিভ করেন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন ও উন্নয়ন) মুশাররাত জেবীন। এই প্রকল্পে পরামর্শক খাতে ১১৫ কোটি টাকার বেশি খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর তার ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ব্যস্ত দেখায়।

প্রকল্পটি যাচাই-বাছাই করছে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ। এর সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এটা এখন যাচাই-বাছাই পর্যায়ে আছে। তাই এই মুহূর্তে এটা নিয়ে মন্তব্য করতে পারবো না। বরং যে মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন।‘

দুই লাখ উপকারভোগীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার পর ৭ হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেয়া হবে। ৭ হাজার টাকা দিয়ে একজন প্রত্যাগত অভিবাসী কীভাবে উপকৃত হতে পারেন, তা নিয়ে সভায় আলোচনা হতে পারে বলেও পিইসির কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রকল্পের বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলছে, বিশ্বের ১৭৮টির বেশি দেশে বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ কর্মী বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছেন। সম্প্রতি করোনা মহামারির কারণে বিদেশে কর্মরতরা দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। করোনার কারণে বিদেশে কাজ হারিয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৫ লাখ কর্মী দেশে ফিরে এসেছেন, যা এখনও অব্যাহত আছে। ফেরত আসা এসব কর্মীরা দেশে আসার পর অধিকাংশই কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন। তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে দিশেহারা। আর্থিকসহ সমাজে তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এসব ফেরত আসা কর্মীদের সমাজে পুনঃএকত্রীকরণ তথা পুনর্বাসনে সহায়তা করার লক্ষ্যে আলোচ্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে বিদেশ থেকে ফেরত আসা কর্মীদের বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ তথ্যসমৃদ্ধ তালিকা তৈরি করা হবে। বাছাই করা কর্মীদের ওরিয়েন্টেশন ও কাউন্সেলিং প্রদান করে এককালীন ক্যাশ ইনসেনটিভ প্রদান করা হবে যেন তারা নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে উপযুক্ত চাকরি অথবা ব্যবসায় সম্পৃক্ত হতে পারেন। তাদেরকে আর্থিক ও অন্যান্য সহযোগিতা প্রদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং ঋণ/আর্থিক সহয়তা পেতে সহযোগিতা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পিডি/এমএসএইচ/জিকেএস