সন্ত্রাসীদের জামিনে সচেতন হতে হবে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাসীদের জামিন দেয়া থেকে বিরত রাখতে হবে কারণ এদের সাজাটা যাতে নিশ্চিত হয়, বিচার কার্য যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয়। যদি বিচারকরা বিচার কাজে একটু বেশি মনোনিবেশ করেন তাহলে দেশকে অনেক ক্রাইমের হাত থেকে বাঁচানো যাবে।
জাতীয় সংসদে বুধবার সরকার দলীয় এক সাংসদের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলনে প্রধানমন্ত্রী। জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে বিচারকদের সচেতন হওয়ার পরার্মশ দেন তিনি।
কামাল মজুমদার সম্পূরক প্রশ্নে জানান, জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা কোর্ট থেকে সহজে জামিন পেয়ে আবারও অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তা ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা?
সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ বিচারক বিচার করবে, আমাদের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন। বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন বলেই এভাবে জামিন দিতে পারছে। সংসদ সদস্যের মতো আমি আহ্বান জানাব- জামিন যখন দিচ্ছেন এরা যেসব অপরাধ করছে, অন্তত অপরাধের মাত্রাটা সর্ম্পকে একটু যদি চিন্তাভাবনা করে তাদের জামিনের ব্যবস্থাটা করে তাহলে কিন্তু ভাল হয় ।’
গোয়ন্দো সংস্থা, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অপরাধীদের তথ্য সংগ্রহ করে, গ্রেফতার করে , তারপর জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। এটা দুর্ভাগ্যজনক।
বিচারকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ জামিন দেয়া থেকে বিরত রেখে এদের সাজাটা যাতে নিশ্চিত হয়, বিচার কার্যটা যাতে পরিচালিত হয়, সেদিকে যদি বিচারকরা একটু বেশি মনোনিবেশ করে তাহলে দেশকে অনেক ক্রাইমের হাত থেকে বাঁচানো যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শত কোটি টাকা খরচ করে একজন অপরাধীকে ধরার পর, সরকারের এক বছরের প্রচেষ্ঠা মাত্র ১৫ দিনে শেষ হয়ে যায়- কোর্টে জামিন পেয়ে যায় অপরাধীরা তা দুঃখজনক। আমাদের তো করার কিছু থাকে না। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অপরাধীদের ধরা। পরে তারা জামিন পেয়ে বেরিয়ে যায়। এটার জন্যে জনমত সৃষ্টি হওয়া উচতি।এ ব্যাপারে বিচার বিভাগের কাছে আমাদের অনুরোধ তারা যেন এ ব্যাপারে সচেতন হন।
জনগণ ও দেশের নিরাপত্তার বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। যারা আইনজীবী তারা তো একজনের পক্ষে হবেনই। দেশ ও দেশের মানুষের নিরাপত্তার কথা সবাইকে চিন্তা করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এখানে বেশি করে কিছু বলতে পারছি না। এখানে আমাদের কোনো হাত থাকে না। বিচার না পলে সরকারে সরকারের দোষ, যখন জামিন পেয়ে যায় তখন কাকে দোষ দেব? সব দোষ আসে কিছু সরকারের ওপর। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য।
সাইবার অপরাধীদের ধরিয়ে দিতে সবার প্রতি আহ্বান
স্বতন্ত্র সাংসদ হাজী সেলিমের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব ভালো জিনিসের মধ্যে কিছু খারাপ জিনিস চলে আসে।ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ব্যবহার করে কিছু লোক অপরাধ করছে। এসব দুষ্কৃতকারী, সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দিতে হবে।
সন্ত্রাসীরা সাইবার-হোয়াটস আপ ব্যবহার করে অপরাধ করায় তা বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান স্বতন্ত্র এ সাংসদ। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের কোনোভাবে সহ্য করা হবে না। কিছুদিনের জন্য হলেও এটা বন্ধ করে সন্ত্রাসীদের যাতে ধরা যায় সে পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।অনির্দিষ্টকালের জন্য এটা বন্ধ করে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে ধরা হবে।
জনগণরে নিরাপত্তার জন্য সরকাররে পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য যা যা পদক্ষপে নেয়া দরকার সে পদক্ষেপ নেব। সবার পরিচয় একসূত্রে গাঁথা।
স্বতন্ত্র সাংসদ হাজী সলেমিরে প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাসী-জঙ্গিরা নানা ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। যারা ঘটাচ্ছে তাদের পরিচয়টা কিন্তু এক। এ স্বাধীনতা বিরোধী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী জামায়াত-শিবির, বিএনপির লোকেরা ঘটাচ্ছে। বিভিন্ন নামে হলেও তার র্পূবপরিচয় দেখলে, যারা ধরা পড়ছে তাদের খোঁজ খবর নিলে দেখা যায় একই জায়গার লোক তারা।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হবে না
সরকারদলীয় সদস্য নুরুল ইসলাম ওমরের তারকা চিহ্নত প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে আপাতত কোন পরিকল্পনা নেই । তিনি বলেছেন, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা যা ছিল তাই থাকবে, অর্থাৎ সাধারণ প্রার্থীদের জন্য ৩০ বছর; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ ৩২ বছর।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে সরকার মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছরে উন্নীত করেছে।
এইচএস/জেডএইচ/এমএস