ফকিহুল মিল্লাত মুফতি আবদুর রহমানের ইন্তেকাল
বিশ্বখ্যাত আলেম ফকিহুল মিল্লাত মুফতি আব্দুর রহমান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাহি রাজিউন)। মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টার দিকে বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারে ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯১ বছর।
ফকিহুল মিল্লাত মুফতি আব্দুর রহমানের নামাজে জানাযা বুধবার সকাল ১০টায় বসুন্ধরা কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। জানাযা শেষে বসুন্ধরা নতুন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
মুফতি আবদুর রহমান ১৯২৫ সালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ইমাম নগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম চাঁন মিয়া। নাজিরহাট বড় মাদরাসা ও জামিয়া আহলিয়া মঈনুল ইসলাম হাটহাজারিতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক লেখাপড়া করেন।
হাটহাজারী মাদরাসায় উচ্চমাধ্যামিক শিক্ষা সমাপ্তির পর তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে গমন করেন। ১৯৫০ সনে দারুল উলুম দেওবন্দে কওমী মাদরাসা পাঠ্যক্রমের সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদীস কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করেন। দারুল উলুম দেওবন্দের ইফতা বিভাগে প্রথম ডিগ্রি লাভকারী মুফতি তিনি।
দেশে ফেরার পর পূর্ব এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাকেন্দ্র আল-জামিয়া আল ইসলামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হযরত মুফতি আজিজুল হকের (রহ.) আহ্বানে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়ে কর্মজীবনের সূচনা করেন।
১৯৬২ সালে তিনি উত্তরবঙ্গে গমন করেন। সেখানে জনসাধারণকে নিয়ে তিনি বহু মসজিদ ও মাদরাসা, মক্তব ও হেফজখানা প্রতিষ্ঠা করেন।
চলমান সময়েও তিনি দেশের প্রায় ১৮টি উত্তরাঞ্চলীয় জেলার সহস্রাধিক দ্বীনি প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত তানযীমুল মাদারিস আদ্বীনিয়্যা বাংলাদেশ (উত্তরবঙ্গ) এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
সুদীর্ঘ ছয় বছরের মিশন শেষে ১৯৬৮ সালে হযরত ফক্বীহুল মিল্লাত আল জামিয়া পটিয়ায় প্রত্যাবর্তন করেন। সেখানে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত পুরো দমে জামিয়ার বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একাধারে জামিয়ার প্রধান মুফতি, সহকারী মহাপরিচালক ও শিক্ষা বিভাগীয় পরিচালকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দাওরায়ে হাদীসে সর্বোচ্চ কিতাব বুখারী শরীফের ১ম খণ্ডের পাঠদান করেন।
আল জামিয়া পটিয়ার সহকারী পরিচালক থাকাকালে তিনি দেশব্যাপী একশ’ সদস্য বিশিষ্ট ইফতা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। এ সময় তিনি ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক ব্যাংকিং-এর ক্ষেত্রেও অনন্য অবদান রাখেন। এদেশে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকের নামে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ১৯৮৩ সালেই স্থাপিত হয়।
হযরত ফক্বীহুল মিল্লাত ওই ব্যাংকের প্রথম শরীয়াহ বোর্ডের সদস্য মনোনীত হন। এতে তিনি সুদভিত্তিক অর্থনীতির বিরুদ্ধে অতুলনীয় ভূমিকা রাখেন।
একে/আরআইপি